Advertisement
E-Paper

বিদেশি সন্দেহে ধরা হলে ১০ দিনের মধ্যেই নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হবে! অসমে নয়া বিধিতে বিজেপি মন্ত্রিসভার অনুমোদন

এত দিন অসমে বিদেশি বা অনুপ্রবেশকারী চিহ্নিত করার কাজ করে এসেছে ‘ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল’। অসমের বিজেপি সরকার এ বার সেই দায়িত্ব জেলা কমিশনারদের হাতে তুলে দিল।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৩:৫৮
অনুপ্রবেশ রুখতে নয়া বিধিতে সায় দিল অসমের হিমন্ত বিশ্বশর্মার সরকার।

অনুপ্রবেশ রুখতে নয়া বিধিতে সায় দিল অসমের হিমন্ত বিশ্বশর্মার সরকার। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

বিদেশি সন্দেহে কাউকে চিহ্নিত করা হলে, ১০ দিনের মধ্যে নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে। অনুপ্রবেশ রুখতে নয়া নিয়মে সায় দিল অসমের হিমন্ত বিশ্বশর্মার সরকার। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত নিজেই জানালেন, কেউ নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে না পারলে, তাঁকে অনুপ্রবেশকারী বলে চিহ্নিত করে পদক্ষেপ করা হবে।

এত দিন অসমে বিদেশি বা অনুপ্রবেশকারী চিহ্নিত করার কাজ করে এসেছে ‘ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল’। অসমের বিজেপি সরকার এ বার সেই দায়িত্ব জেলা কমিশনারদের হাতে তুলে দিল। নয়া বিধি অনুযায়ী, বিদেশি সন্দেহে কেউ ধরা পড়লে, নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র জেলা কমিশনারদের হাতেই জমা করতে হবে। তাতে তাঁরা সন্তুষ্ট হলে তবেই রেহাই। অন্যথায় জেলা কমিশনারেরাই যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবেন।

অনেকে মনে করছেন, অসম সরকারের এই নয়া বিধিতে আসলে বকলমে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হল। তবে বিধি অনুযায়ী, যদি কোনও জেলা কমিশনার সিদ্ধান্ত নিতে না পারেন, তখনই বিষয়টি ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হবে।

চলতি বছরের জুনে হিমন্ত বিধানসভায় জানিয়েছিলেন, তাঁর সরকার ১৯৫০ সালে অনুপ্রবেশ আইন কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০২৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট অসমে অনুপ্রবেশ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে রায় দিয়েছিল, সে কথাও উল্লেখ করেছিলেন হিমন্ত। সেই রায় অনুযায়ী, ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের যাঁরা অসমে প্রবেশ করেছেন, তাঁদের অনুপ্রবেশকারী হিসাবে চিহ্নিত করা যাবে। সেইমতোই অনুপ্রবেশকারী চিহ্নিতকরণের নয়া বিধিতে মঙ্গলবার অনুমোদন দিয়েছে অসমের মন্ত্রিসভা।

হিমন্ত জানিয়েছেন, যদি জেলা কমিশনারেরা জানতে পারেন যে, তাঁদের জেলায় কোনও বিদেশি অবৈধ ভাবে বসবাস করছেন, তাঁকে নোটিস পাঠানো হবে। বলা হবে ১০ দিনের মধ্যে নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যদি তা না পারেন, তা হলে জেলা কমিশনার তাঁর উদ্দেশে বাড়ি ছাড়ার নোটিস জারি করবেন। এর পর ওই ব্যক্তিকে বন্দিশিবিরে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে তাঁকে বাংলাদেশ বা পাকিস্তানে পাঠানো (পুশব্যাক) করা হবে বলে জানিয়েছেন হিমন্ত।

ঘটনাচক্রে, সম্প্রতি অসমের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালকেও বাড়তি ক্ষমতা দিয়েছিল অমিত শাহের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বলা হয়েছিল, এ বার থেকে ট্রাইব্যুনালগুলি সরাসরি সন্দেহভাজন অনুপ্রবেশকারীদের বন্দি শিবিরে পাঠানোর ক্ষমতা দিল। আধা-বিচার বিভাগীয় প্রতিষ্ঠান ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের দায়িত্ব হল অনুপ্রবেশকারী বা বিদেশিদের চিহ্নিত করা। তাঁদের গ্রেফতার করা ও জেলে পাঠানোর অধিকার ছিল পুলিশ-প্রশাসনের। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সাম্প্রতিক বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এখন থেকে, যদি কোনও ব্যক্তির নাগরিকত্ব নিয়ে বিতর্ক থাকে এবং তিনি যদি ট্রাইব্যুনালের সামনে হাজির না হন, তবে ট্রাইব্যুনাল সরাসরি তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করতে পারবে।

অসমে বিদেশি ট্রাইব্যুনালগুলির কার্যপদ্ধতি নিয়ে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ রয়েছে। বহু ক্ষেত্রেই সন্দেহজনক হিসেবে দাগিয়ে দেওয়া ব্যক্তিদের হাতে নোটিস পৌঁছোয় না বা আইনজীবীদের গাফিলতিতে তাঁরা সশরীরে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে পারেন না বলে অভিযোগ। তখন একপাক্ষিক ভাবেই তাঁদের বিদেশি ঘোষণা করে দেওয়া হয়। দরিদ্র ও নিরক্ষর পরিবারগুলির ক্ষেত্রে প্রায়ই পুরনো সরকারি নথিতে নামের বানান, বয়স ও ঠিকানার বানানে হেরফের হয়ে যায়। সেই সব ছোটখাটো ভুলের ফলেও খারিজ হয় নাগরিকত্ব। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে অসম মন্ত্রিসভার নয়া সিদ্ধান্তে হেনস্থা আরও বাড়বে বলেই মনে করছে বাঙালি ও সংখ্যালঘু সংগঠনগুলি।

Assam Himanta Biswa Sarma
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy