অবৈধ অভিবাসী সন্দেহে ধৃত অমুসলিমদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এমনটাই জানিয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। অসম-সহ বিভিন্ন বিজেপিশাসিত রাজ্যে সম্প্রতি অবৈধ অভিবাসী, বিশেষ করে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী সন্দেহে ধরপাকড় শুরু হয়েছে। এই আবহে অসম সরকারের এই দাবি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
সম্প্রতি সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর এক প্রতিবেদন ঘিরে বিতর্ক দানা বাঁধে। অসম সরকারের একটি নির্দেশিকা পিটিআইয়ের হাতে আসে। গত ২২ জুলাই অসমের সব জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারের কাছে ওই নির্দেশিকাটি পাঠানো হয়েছিল। তাতে পাকিস্তানি, বাংলাদেশি এবং রোহিঙ্গাদের বিদেশি তকমা পুনর্মূল্যায়ন করতে বলা হয়েছিল বলে জানিয়েছে পিটিআই। ওই নির্দেশিকায় সই ছিল অসমের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব (স্বরাষ্ট্র) অজয় তেওয়ারির। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) অনুসারে বিদেশিদের এ দেশের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতেও উৎসাহিত করতে বলা হয়েছিল ওই নির্দেশিকায়।
বিতর্কের আবহে এ বার অসমের মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, এমন কোনও সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়নি। হিমন্তের বক্তব্য, সিএএ-র বিধি ছাড়া আর কোনও বিষয়েও কোনও সরকারি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে সাংবাদিক বৈঠকে হিমন্ত বলেন, “সিএএ-তে ইতিমধ্যে যা রয়েছে, তার বাইরে রাজ্য সরকার কোনও নির্দেশিকা জারি করেনি। যদি মন্ত্রিসভায় এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকে, আমি তা সব সময় আপনাদের জানাব। কোনও বিশেষ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।” ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে আসা ছয় সম্প্রদায়কে যে নাগরিকত্বের সুবিধা দেওয়ার বিধান রয়েছে সিএএ-তে, তা-ও উল্লেখ করেন হিমন্ত।
আরও পড়ুন:
পিটিআই জানিয়েছে, আইনি বিধান অনুসারে, অসমে ধৃত কেউ বিদেশি কি না, সে বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে এক মাত্র সেখানকার ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতের দ্বারস্থ হওয়া যেতে পারে। বস্তুত, ২০১৯ সালে দ্বিতীয় দফার মোদী সরকারের আমলে পাশ হয়েছিল নাগরিকত্ব (সংশোধন) আইন। এতে বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৪-র আগে ভারতে আসা হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, খ্রিস্টান, শিখ এবং পার্সিদের নাগরিকত্ব প্রদানের কথা বলা হয়। তবে পিটিআই অনুসারে, ২০১৫ সালের আগে সে রাজ্যে প্রবেশ করা অমুসলিম অবৈধবাসী বিদেশিদের বিরুদ্ধে মামলা ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে না পাঠানোর জন্য বলা হয়েছিল। গত বছরের জুলাইতেই পুলিশের সীমান্ত শাখাকে এই নির্দেশ দিয়েছিল অসম সরকার।