Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
KLO

KLO: মমতার সঙ্গে কথা বলবেন, কেএলও-কে হিমন্তের আশ্বাস

সোমবার রাতে হিমন্তের সঙ্গে প্রাক্তন কেএলও-দের কথা হল মূলত কোচবিহারের ভারতভুক্তি চুক্তির ভিত্তিতে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং হিমন্তবিশ্ব শর্মা।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং হিমন্তবিশ্ব শর্মা। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২২ ০৮:৩১
Share: Save:

সকালে দেখা হল না মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মার সঙ্গে। রাতে দ্বিতীয় বার সময় পেয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেলেন ঠিকই টম অধিকারীরা, কিন্তু সঙ্গে রবিবারের বৈঠকে সর্বসম্মত ভাবে তৈরি হওয়া প্রস্তাব নিয়ে যেতে পারেননি তাঁরা। কারণ, তা পাকাপাকি ভাবে লেখাই হয়নি। তাই সোমবার রাতে হিমন্তের সঙ্গে প্রাক্তন কেএলও-দের কথা হল মূলত কোচবিহারের ভারতভুক্তি চুক্তির ভিত্তিতে। সূত্রের দাবি, হিমন্ত তাঁদের আশ্বাস দিয়েছেন, কেন্দ্র, অসম ও পশ্চিমবঙ্গ মিলিয়ে যাতে ত্রিপাক্ষিক শান্তি আলোচনা করা সম্ভব হয়, সেটা তিনি দেখবেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও কথা বলবেন বলে জানান।

এর মধ্যে বিভিন্ন এলাকার কোচ ও রাজবংশী নেতাদের মধ্যে মতভেদ দূর হওয়ার কোনও লক্ষণ কিন্তু সোমবারে অন্তত দেখা যায়নি। অসম এবং পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন কেএলও নেতারা ও কোচ সংগঠনগুলি অবিভক্ত ও কেন্দ্রশাসিত কোচ-কমতা অঞ্চল দাবি করলেও তার ভবিষ্যৎ কতটা বাস্তবসম্মত হবে এবং তার ফলে নামনি ও উজানি অসমে বসবাস করা কোচরা আদৌ কতটা লাভবান হবেন— তা নিয়ে দ্বিধা কাটছে না কোচ সংগঠনগুলির। একই সঙ্গে ২৩ জানুয়ারি উত্তর গুয়াহাটিতে হওয়া বৈঠকে কোচ-রাজবংশী ‘এক হয়ে’ অধিকারের লড়াই চালানোর কথা বলা হলেও ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কোচ সংগঠন জানাল, তারা রাজবংশীদের কোনওভাবেই সমর্থন জানাবে না।

২০২০ সালের এপ্রিলে অসম বিধানসভা অবিভক্ত গোয়ালপাড়া জেলার এলাকাগুলি একত্রিত করে কামতাপুর স্বশাসিত পরিষদ বিল পাশ করেছে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৩০ সদস্যের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদও গড়া হয়। কিন্তু সদৌ কোচ যুব পরিষদের সভাপতি পরাগ কোচের দাবি, স্বশাসিত পরিষদ একেবারেই রাজবংশীদের রাজপাট। সেখানে কোচদের কোনও অধিকার দেওয়া হয়নি। পরিষদের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা চলছে। পরিষদ কোনও কাজও করে না।

মতভেদ রয়েছে বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে থাকা কোচদের মধ্যেও। তাই গুয়াহাটিতে ঘাঁটি গাড়া দুই রাজ্যের প্রাক্তন কেএলও নেতারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, অসম ও বাংলার বিভিন্ন গ্রামে ছড়িয়ে থাকা কোচ, রাভা, রাজবংশী, ক্ষত্রিয় ইত্যাদি পদবীর মানুষরা যে সকলেই বৃহত্তর কোচ সম্প্রদায়ভুক্ত— তা সকলকে বোঝানো হবে। কিন্তু কেএলও ও কোচ সংগঠনগুলির যৌথ বৈঠকের উদ্যোক্তা পরাগ কোচ সোমবার বলেন, “আমরা কোচদের হয়ে কথা বলায় কেএলও-কে সমর্থন করেছি, কিন্তু রাজবংশীদের কখনও সমর্থন করব না।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘রাজবংশীদের হলুদ গামছা ও ভাষা কোনওভাবে কোচ এলাকায় মানা হবে না। তবে রাজবংশীরা নিজেদের কোচ হিসেবে মেনে নিলে আলাদা কথা।’’ উল্লেখ্য, এ দিন জীবন সিংহের যে ভিডিয়ো বার্তা সামনে এসেছে, সেখানে কিন্তু তিনি হলুদ গামছাই ব্যবহার করেছেন।

কিন্তু পরিষদ হোক বা এসটি মর্যাদা, রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার কোচ ও রাজবংশীদের এক বন্ধনীতেই রাখে। পরাগ জানান, এ নিয়ে তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভাবছেন। জীবন সিংহের ধর্মপুত্র দেবরাজ সিংহ বলেন, “কোচদের দাবি পূরণের নামে লড়াই চালানো আগের নেতারা নিজেদের স্বার্থে অন্যায় ভাবে আপস করেছেন। পরিষদ পেলেও কোচেদের কোনও লাভ হয়নি।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘এর পরেও কোচ-রাজবংশীরা নিজেদের মধ্যে ঝামেলা বাধালে কেএলও অপারগ।” দেবরাজের আহ্বান, “আমি জীবন সিংহের ছেলে হিসাবে চাই, দ্রুত আলোচনার পরিবেশ তৈরি হোক, যাতে বাবা জঙ্গলে কষ্টের জীবন ছেড়ে মূল স্রোতে ফিরে আমাদের জাতিকে নেতৃত্ব দিতে পারেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

KLO Himanta Biswa Sarma Peace Talks
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE