গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
সুপ্রিম কোর্ট ‘অসাংবিধানিক’ ঘোষণা করে নির্বাচনী বন্ড ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। কিন্তু অসমের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার হুমকি, যদি নির্বাচন বন্ড নিয়ে বিরোধী দল কংগ্রেসের কোনও নেতা সমাজমাধ্যমে অভিযোগ তুলে কোনও পোস্ট করেন, পত্রপাঠ তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে!
নগাঁওয়ের কংগ্রেস সাংসদ প্রদ্যোত বরদলৈ শুক্রবার নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই)-র তথ্যের উল্লেখ করে অভিযোগ করেছিলেন, কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করে নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে তোলাবাজি চালিয়েছে বিজেপি। ওই তথ্য বলছে, গত পাঁচ বছরে যে ৩০টি কর্পোরেট সংস্থা নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলিকে সব থেকে বেশি চাঁদা দিয়েছে, তার মধ্যে ১৪টির ঠিকানাতেই তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি, সিবিআই, আয়কর দফতরের মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
এসবিআই-এর-তথ্য থেকে উঠে এসেছে, নির্বাচনী বন্ড কিনে চাঁদা দেওয়ার পরেই হাজার-হাজার কোটি টাকার সরকারি প্রকল্পের বরাত পেয়েছে কয়েকটি সংস্থা। ওই প্রসঙ্গে অসমের একটি বাণিজ্যিক সংস্থার নাম উল্লেখ করেছিলেন প্রদ্যোত। দাবি করেছিলেন, সে রাজ্যের বিজেপি সরকারের সঙ্গে ‘মউ’ সইয়ের পরেই বড় অঙ্কের নির্বাচনী বন্ড কিনেছিল ওই সংস্থা।
হিমন্ত শনিবার এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগ।’’ কংগ্রেস সাংসদের পোস্টে অসম সরকার এবং মেসার্স ব্রাইট স্টার ইনভেস্টমেন্ট নামে ওই বাণিজ্যিক সংস্থার মানহানি হয়েছে বলেও হিমন্তের দাবি। এক্স হ্যান্ডলে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমাদের সরকার এবং ওই সংস্থার কোনও বাণিজ্যিক চুক্তি হয়নি। প্রাগজ্যোতিষপুর মেডিকেল কলেজ নির্মাণ সংক্রান্ত একটি জনহিতকর কাজে ওই সংস্থা সাহায্য করছে। কাজ চলছে। দ্রুত ওই প্রকল্প আমরা অসমের জনগণকে উৎসর্গ করব।’’
প্রসঙ্গত, কংগ্রেস সাংসদ প্রদ্যোত যে অভিযোগ এনেছেন, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি শীর্ষ আদালতে নির্বাচনী বন্ড সম্পর্কে সেই প্রবণতার কথা বলেছিল। নির্বাচনী বন্ড ব্যবস্থাকে ‘কুইড প্রো কুয়ো’ বলে মন্তব্য করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। অর্থাৎ কোনও কিছুর বিনিময়ে কাউকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া। বিরোধী শিবিরের আরও অভিযোগ, অনেক সংস্থা নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে চাঁদা দেওয়ার পরে কেন্দ্রীয় এবং বিজেপি শাসিত রাজ্যের সরকারগুলির কাছ থেকে বড় মাপের প্রকল্পের বরাত পেয়েছে। একাধিক সংস্থা তাদের মোট মুনাফার কয়েক গুণ অর্থ রাজনৈতিক দলের তহবিলে চাঁদা হিসেবে জমা দিয়েছে। এমনকি রাজনৈতিক দলগুলিকে মোটা টাকা চাঁদা দিয়েছে লোকসানে চলা সংস্থাও! রিপোর্টে প্রকাশ, গত পাঁচ বছরে নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন সংস্থা গোপনে যত টাকা চাঁদা দিয়েছে, তার প্রায় অর্ধেকই ঢুকেছে বিজেপির তহবিলে। দ্বিতীয় স্থানে তৃণমূল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy