দক্ষিণ ভারতের আদলে এ বার অসমের গ্রামাঞ্চলে ছোট ছোট সিনেমা কেন্দ্র খুলতে চলেছে অসম ফিল্ম সোসাইটি। এতে কয়েকটি উদ্দেশ্য পূরণ করতে চাইছে সোসাইটি। তাঁরা চান, ভাল সিনেমা দেখিয়ে গ্রামাঞ্চলে মূল্যবোধ জাগ্রত করে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গী প্রসারিত করা।
রাজ্যে সিনেমা হলের সংখ্যা হাতেগোনা। অধিকাংশ জেলা সদরে কোনওমতে একটি হল থাকলেও, গ্রামের মানুষ সেখানে আসেন না। সিনেমাও চলে কম। গ্রামে বেশি চলে মোবাইল থিয়েটার। যেখানে চড়া দাগের মশলা ও বিনোদনমূলক সিনেমাই প্রাধান্য পায়।
ফিল্ম সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক জয়ন্তমাধব দত্ত জানান, অনেক অসমীয়া ছবি দেশ-বিদেশে পুরস্কার পায়। কিন্তু নিজের রাজ্যেই অনেকে তা দেখতে পান না। ভাল ছবির দর্শক মেলে না। তথাকথিত আর্ট ফিল্ম গ্রামের কেউই পছন্দ করেন না।
এক পরিস্থিতি ছিল দক্ষিণেও। কিন্তু কেরল ফিল্ম সোসাইটি গ্রামে ফিল্ম সোসাইটি গড়ে মানুষের স্বাদ বদলের কাজ শুরু করেছে। সেই পথই অনুসরণ করতে চাইছে অসম ফিল্ম সোসাইটি। জয়ন্তবাবুর মতে, চলচ্চিত্র উৎসবগুলি শুধু নগর-কেন্দ্রীক হয়। গ্রামের মানুষ সেখানে আসেন না। তাই, বিশ্বের অন্য প্রান্ত তো দূর, বলিউডেও কী ভাল ছবি হচ্ছে তার খবর গ্রামের মানুষ পান না। জয়ন্তবাবুর কথায়, ‘‘সে সব ছবিই গ্রামের মানুষের কাছে নিয়ে যেতে হবে। যুব প্রজন্ম অলীক নায়কদের দেখে তাঁদের মতো হতে চাইছেন। ছবির হিংসা, যৌনতা মানুষের মনে কুপ্রভাব ফেলছে। তাঁদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে বাস্তবমুখী ভাল সিনেমা।
গ্রামে ছোট আকারে ছবি বোঝার পাঠ্যক্রমও শুরু করতে চায় সোসাইটি। সম্প্রতি তাঁরা যোরহাটের জে বি কলেজের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে তেমন তিন দিনের পাঠ্যক্রম করায়। সোসাইটির পরিকল্পনা, উজানি অসমের বিভিন্ন জেলায় তাঁরা অন্তত ১০০টি গ্রামীণ ফিল্ম সোসাইটি গড়ে তুলবে। যেখানে দেখানো হবে রাজ্য-দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সিনেমা।