Advertisement
E-Paper

চুপসে গেল আপ-বেলুন

দলের প্রতীক ঝাঁটা। একশোটা নতুন ঝাঁটা এসে গিয়েছিল কালই। তোরণ সুসজ্জিত রঙিন বেলুনে। অরবিন্দ কেজরীবালের দিল্লির সিভিল লাইনসের বাসভবন তৈরি ছিল এলসিডি স্ক্রিন আর নানা রঙের আবির নিয়ে।

অনমিত্র সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৭ ০৪:০০

দলের প্রতীক ঝাঁটা। একশোটা নতুন ঝাঁটা এসে গিয়েছিল কালই। তোরণ সুসজ্জিত রঙিন বেলুনে। অরবিন্দ কেজরীবালের দিল্লির সিভিল লাইনসের বাসভবন তৈরি ছিল এলসিডি স্ক্রিন আর নানা রঙের আবির নিয়ে। পঞ্জাব ও গোয়ার জয়ের খবর এলেই আগাম হোলিতে মেতে ওঠার অপেক্ষায় ছিলেন আম আদমি পার্টির কর্মীরা। কিন্তু ভোটের ফলাফলে ঝাঁটা পড়ে রইল অনাদরে। এক ঘণ্টা পরেই বন্ধ করে দেওয়া হল টিভি। পঞ্জাবে তৃতীয় হয়ে দৌড় শুরু করে, পরে কোনও ক্রমে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে কেজরীবালের দল। আর গোয়ায় তো বিকেল পর্যন্ত স্কোর শূন্য। এই শোচনীয় ফলাফলে ভবিষ্যতে গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ বা রাজস্থানে দলের বিস্তার তো দূর অস্ত, প্রশ্ন উঠে গিয়েছে দিল্লিতে তখ্ত স্থায়ী হবে তো!

গোয়া ও পঞ্জাবে সরকার গড়তে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে ছিলেন আপ নেতৃত্ব। পঞ্জাবে তো ছ’মাস ধরে কেজরীর নেতৃত্বে দিল্লির গোটা মন্ত্রিসভা ঘাঁটি গেড়ে ছিল। যদিও তার প্রতিফলন পড়েনি ভোটের মেশিনে। ভোটের ফল পর্যালোচনা করে আপ নেতারা মানছেন, পঞ্জাবে খারাপ ফলের পিছনে প্রথম কারণ, বহিরাগত তকমা— স্থানীয় নেতৃত্বকে গুরুত্ব না দিয়ে দিল্লি থেকে লোক চাপিয়ে দেওয়া। ভোটের ছ’মাস আগে পঞ্জাবে আপের মূল দায়িত্ব থেকে স্থানীয় নেতা সুচা সিংহ ছত্তেপুরকে সরিয়ে দিল্লির নেতা সঞ্জয় সিংহকে সামনে আনা হয়। আপের অনেকেই এখন মনে করছেন, মুখ্যমন্ত্রী পদে শিখ প্রার্থীকে সামনে না নিয়ে আসায় ভোটাররা বিভ্রান্ত হয়েছেন। অনেক স্থানীয় আপ নেতাও প্রচারের সময়ে বসে যান।

দ্বিতীয়ত, মালওয়া এলাকাকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া। ১১৭টি আসনের মধ্যে ৬৯টি আসন রয়েছে সেখানে। মালওয়াতে ভাল ফল করলে পঞ্জাবে ক্ষমতা দখল করা সহজ হবে— এই বিশ্বাসে ওই এলাকায় অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়। রাজ্যের মাঝা আর দোয়াব এলাকায় ততটা প্রচার চালায়নি আপ। এর প্রভাব পড়েছে ফলে। তৃতীয়ত, নভজ্যোত সিংহ সিধুর সঙ্গে হাত না মেলানো। আপ নেতারা মনে করছেন, ওই জোট হলে মাঝা এলাকায় ভাল ফল করতে দল। এ ছাড়া, ভোটের অনেক আগে প্রচারের সুর তুঙ্গে তোলায় শেষ পর্বে তাল মেলাতে না পারাকেও বিপর্যয়ের কারণ বলে মনে করছেন অনেকে।

গোয়ার ফল আপকে হতাশ করেছে। হারের জন্য দলের মুখ্যমন্ত্রী পদ প্রার্থী এলভিস গোমসের অনভিজ্ঞতাকেই দায়ী করছে দল। সরকারি চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে কয়েক মাস আগেই আপে যোগ দেন ওই আমলা। রাজনীতিতে অনভিজ্ঞ ওই নেতার পক্ষে কংগ্রেস বা বিজেপির সঙ্গে সেয়ানে-সেয়ানে মোকাবিলা অসম্ভব ছিল। এ ছাড়া, দিল্লিতে সফল হলেও এখানে দুর্নীতির তাস দিয়ে দাঁও মারতে ব্যর্থ হয়েছেন কেজরীবাল। ঘরোয়া ভাবে আপ নেতারা মেনে নিচ্ছেন, দু’বছর দিল্লিতে ক্ষমতায় থাকায় দলে একাধিক দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে। বিধায়ক-নেতারা জেলেও গিয়েছেন। ফলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপের গলা ফাটানোকে বিশ্বাস করেননি গোয়ার মানুষ।

সব মিলিয়ে আজকের ফলাফলে বেলুন ফুটো হয়ে গিয়েছে আপের। কেজরীবাল ও তাঁর দলের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়েও প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।

Arvind Kejriwal Aam Aadmi Party Assembly elections 2017
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy