Advertisement
E-Paper

ভোটের ধুলোয় কোথাও নেই চম্বলের ডাকুরা

মোরেনা, ভিন্দ, গ্বালিয়র...। মধ্যপ্রদেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় মাইলের পর মাইল জুড়ে দুর্গম বেহড়। আর তার মধ্যে দিয়ে বয়ে চলেছে চম্বল নদী। গা ছমছমে সেই এলাকা দিয়ে পথ চলতে ভয় করতেন যে কেউ। আর সেখান থেকেই গোটা ভারতে ছড়িয়ে পড়েছিল দুর্ধর্ষ ডাকাতদের কাহিনি।

ভোপাল

শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:২৮
—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

মোরেনা, ভিন্দ, গ্বালিয়র...। মধ্যপ্রদেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় মাইলের পর মাইল জুড়ে দুর্গম বেহড়। আর তার মধ্যে দিয়ে বয়ে চলেছে চম্বল নদী। গা ছমছমে সেই এলাকা দিয়ে পথ চলতে ভয় করতেন যে কেউ। আর সেখান থেকেই গোটা ভারতে ছড়িয়ে পড়েছিল দুর্ধর্ষ ডাকাতদের কাহিনি।

শুধু মধ্যপ্রদেশের এই এলাকাই নয়, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থানের কিছু অংশ জুড়েও চম্বলের বিস্তার। ফুলন দেবী, মান সিংহ, নির্ভয় সিংহ গুজ্জর, পান সিংহ তোমরদের কাহিনি এখানে ছড়িয়ে রয়েছে আজও। আর কখনও কখনও ফিল্মের পথ ধরে তা ছড়িয়েছে দেশের সর্বত্র।

এমনই একটি ছবি পান সিংহ তোমরকে নিয়ে। সেনা জওয়ান, নামকরা অ্যাথলিট থেকে ডাকু। অভিনেতা ইরফান খানকে সেখানে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘বেহড় মে বাগী হোতে হ্যায়, ডাকু মিলতে হ্যায় পার্লামেন্ট মে।’’ এই ধরনের মন্তব্য নিয়ে জলঘোলা হয়েছিল বিস্তর। কিন্তু এটাও ঘটনা, পেশা বদলে অনেক নামকরা ডাকুই একদিন জায়গা করে নিয়েছিলেন দেশের আইনসভায়।

কিন্তু চম্বলের প্রাক্তন ডাকাতদের রাজনীতিতে আসার দিন বোধহয় শেষ হতে চলেছে। অন্তত মধ্যপ্রদেশের বিধানসভা ভোটের ছবি তা-ই বলছে। আত্মসমর্পণের পরে জেল থেকে বেরিয়ে সাংসদ হয়েছিলেন ফুলন দেবী। সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী হয়ে জিতেছিলেন উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুর থেকে। শুধু তিনিই নন, অনেকেই এসেছিলেন রাজনীতিতে। ২০১৩ সালে চম্বলের প্রাক্তন ডাকাত প্রেম সিংহ মধ্যপ্রদেশের সাতনা জেলার চিত্রকূট বিধানসভা থেকে জেতেন। কিন্তু তাঁর মৃত্যু হয়েছে। অতীতে চিত্রকূট এলাকায় ভোটের সময়ে দাপিয়ে বেড়াতেন প্রাক্তন ডাকাত শিবকুমার পটেল আর অম্বিকা পাল। পটেল সম্প্রদায়ের মধ্যে তাদের প্রভাবও ছিল। এই পরিবারেরই সদস্য বালকুমার পটেল ২০০৯ সালে মির্জাপুর থেকে সমাজবাদী পার্টির সাংসদ হয়েছিলেন। তাঁর ছেলে রাম সিংহ ২০১২-তে উত্তরপ্রদেশের প্রতাপগড় থেকে সমাজবাদী পার্টির টিকিটে জেতেন। সে বছরেই শিবকুমারের ছেলে বীর সিংহ জেতেন উত্তরপ্রদেশের কারবি বিধানসভা আসনটি থেকে। তবে মধ্যপ্রদেশের এ বারের ভোটে চম্বলের প্রাক্তন ডাকাতদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

শুধু প্রার্থী হিসেবেই নয়, এত দিন বিভিন্ন দলের হয়ে প্রচারেও সক্রিয় ছিলেন অনেক ডাকু। মালখান সিংহ, মোহর সিংহের মতো নামকরা ডাকাতরা ২০১৩ সালে মধ্যপ্রদেশের বিধানসভা ভোট ও পরের বছর লোকসভা ভোটে বিজেপির হয়ে প্রচার করেছিলেন। দুর্ধর্ষ ডাকু মালখান ১৯৮২ সালে আত্মসমর্পণ করার পরে বিভিন্ন দল তাঁকে টানার চেষ্টা করেছিল। সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী হিসেবে ১৯৯৬-এর উপনির্বাচনে ভিন্দ থেকে ভোটেও লড়েছিলেন তিনি। তবে হেরে যান। তার পরে গত দু’টি বিধানসভা ভোটে মধ্যপ্রদেশে বিজেপিকেই সমর্থন করে গিয়েছেন। আর মোহর সিংহ বিজেপিতে যোগ দিয়ে ভিন্দের মেগাঁও পুরসভার দায়িত্বও সামলেছেন।

তবে রাজনীতিতে চম্বলের ডাকুদের রমরমা এখন ইতিহাস। পান সিংহ তোমরের ভাইপো, প্রাক্তন ডাকাত বলবন্ত সিংহ জানাচ্ছেন, এ বারের ভোটে কারও জন্যেই প্রচার করবেন না তিনি। তফসিলি জাতি ও জনজাতি নিপীড়ন প্রতিরোধ আইন লঘু করা হচ্ছে বলেও ক্ষোভ জানিয়েছেন তিনি।

এক সময়ের সাড়াজাগানো ডাকাতদের এমন হাল কেন?

মধ্যপ্রদেশের অনেকেই মনে করছেন, ডাকুদের সেই রবিনহুড ভাবমূর্তি শেষ। সে জন্য রাজনীতিতেও গুরুত্ব কমছে। আর গ্বালিয়র পুলিশের এসপি নবনীত ভাসিনের দাবি, তাঁর এলাকা থেকে ডাকাতি নিশ্চিহ্ন করতে সফল হয়েছে পুলিশ।

Assembly Elections 2018 Madhya Pradesh Assembly Elections 2018 Dacoits Politicians
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy