Advertisement
E-Paper

টিআরএস ঝড়ে উড়ে গেল কংগ্রেস-টিডিপি জোট, দাগই কাটল না বিজেপি

ফল প্রকাশের পর কংগ্রেস এবং তার জোটসঙ্গি তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি)ইভিএম কারচুপির অভিযোগ তুলেছে টিআরএস-এর বিরুদ্ধে। যদিও টিআরএস সে সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।বিজেপি-র তরফে কয়েক দিন আগে বলা হয়েছিল, তারা প্রয়োজনে টিআরএস-কে সমর্থন করবে। সেই সুযোগও আর কেসিআর তাদের দিলেন না।

উজ্জ্বল চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৫:০৯
উল্লাস টিআরএস সমর্থকদের। ছবি: পিটিআই।

উল্লাস টিআরএস সমর্থকদের। ছবি: পিটিআই।

জিতলেন, তিনিই জিতলেন। বাকি সকলে মিলে যা পেল, কে চন্দ্রশেখর রাও (কেসিআর) একাই তার প্রায় তিন গুণ আসন দখল করলেন।

১১৯ আসনের তেলঙ্গানা বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশ্যে আসতেই দেখা গেল, বিরোধীরা সে রাজ্যে কার্যত ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গিয়েছে। মুখ থুবড়ে পড়েছে কংগ্রেসের মহাজোট। বিজেপি কোনও রকমে একটি আসন। আসাদউদ্দিন ওয়েসির মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এমআইএম) পুরনো হায়দরাবাদে নিজেদের গড় ধরে রেখেছে। আর কেসিআর-এর তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি (টিআরএস) একাই ৮৮!

ফল প্রকাশের পর কংগ্রেস এবং তার জোটসঙ্গি তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি) ইভিএম কারচুপির অভিযোগ তুলেছে টিআরএস-এর বিরুদ্ধে। যদিও টিআরএস সে সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। বিজেপি-র তরফে কয়েক দিন আগে বলা হয়েছিল, তারা প্রয়োজনে টিআরএস-কে সমর্থন করবে। সেই সুযোগও আর কেসিআর তাদের দিলেন না।

এর আগের বিধানসভা নির্বাচনে নতুন রাজ্য গঠনের আবেগের হাওয়া নিজের পালে লাগিয়ে কেসিআর পেয়েছিলেন ৬৩টি আসন। পরে যদিও অন্য দল থেকে তাঁর টিআরএস-এ প্রায় ২৭ জন বিধায়ক যোগ দেন। ফলে গত সেপ্টেম্বরে যখন বিধানসভা ভাঙলেন কেসিআর, তখন তাঁর ঝুলিতে ৯০ জন বিধায়ক ছিলেন। ফাইনাল ম্যাচেও প্রায় একই স্কোর ধরে রাখলেন তিনি। ফলে সরকার গঠনের ‘ম্যাজিক ফিগার’ ৬০-এর থেকে অনেক অনেক এগিয়ে রইল টিআরএস।

আরও পড়ুন: ছত্তীসগঢ়ে রমনের ‘উন্নয়ন’-এর রথ আটকে দিল কংগ্রেস

কিন্তু, কোন ফর্মুলায় এমন রেকর্ড করলেন কেসিআর?

গোটা তেলঙ্গানা ঘুরে দেখা গিয়েছিল, রাজ্যের একটা বড় অংশে উন্নয়ন দৃশ্যত রাস্তায় দাঁড়িয়ে। সেই উন্নয়নের সঙ্গেই কেসিআর সমানুপাতে মিশিয়ে দিয়েছিলেন জনকল্যাণ প্রকল্পের ‘জাদু’। সেই জাদুর ছোঁয়া পৌঁছে গিয়েছিল রাজ্যের প্রায় ঘরে ঘরে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাস্তা, জল, বিদ্যুৎ, বাড়ি— এ সব তো হয়েইছে। পাশাপাশি, মেয়ের বিয়েতে আর্থিক সহায়তা, কৃষিঋণ মকুব, চাষের জন্য জমি-মালিককে আর্থিক সহায়তা, গৃহহীন পরিবারকে দু’কামরার বাড়ি, সরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি— জনগণ যে খুশি, তা তাঁরা বুঝিয়ে দিলেন ইভিএমের বোতাম চেপে। রাজ্যের প্রতিটা পরিবারই কেসিআর-এর কোনও না কোনও প্রকল্পে সুবিধা পেয়েছেন বলেই মত তাঁদের।

আরও পড়ুন: উত্তরপূর্বে নিশ্চিহ্ন কংগ্রেস, মিজোরামে ক্ষমতায় ফিরল এমএনএফ, খাতা খুলল বিজেপি

কী রকম?

দাক্ষিণাত্য মালভূমি অঞ্চলের তেলঙ্গানায় মূলত দোফসলি চাষ হয়। রবি এবং খারিফ। চাষের জন্য জমি মালিক একর প্রতি ৪ হাজার টাকা পেয়েছেন। রবি এবং খারিফ মিলিয়ে মোট ৮ হাজার টাকা। যে মালিকের ৫ একর জমি আছে, তিনি বছরে ৪০ হাজার টাকা পেয়েছেন। পাশাপাশি কৃষকরা ব্যাঙ্ক থেকে যে ঋণ নিয়েছিলেন, তা শোধ করার জন্যেও সরকার কৃষক প্রতি ২ লাখ টাকা করে দিয়েছে। ফলে চাষি আত্মহত্যার মতো ঘটনা তেলঙ্গানায় কেসিআর-এর আমলে প্রায় হয়নি বললেই চলে।

‘মিশন ভগীরথ’-এর আওতায় রাজ্যের প্রায় সব বাড়িতেই জল পৌঁছেছে। পরিশ্রুত ওই জল দু’বার করে যাচ্ছে বাড়ি বাড়ি। বছয় কয়েক আগেও যে রাজ্যে, এমনকি হায়দরাবাদ শহরেও মাঝে মাঝেই লোডশেডিং হত, সেই রাজ্যে এখন বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত। গৃহহীন পরিবারগুলিকে আবাসন তৈরি করে দু’কামরার বাড়ি দেওয়া হয়েছে।

হিন্দুদের ক্ষেত্রে ‘কল্যাণলক্ষ্মী’ এবং মুসলমানদের ক্ষেত্রে ‘শাদি মুবারক’ প্রকল্পে পরিবারগুলি মেয়ের বিয়েতে পেয়েছে এক লাখ টাকা। বার্ধক্যভাতার আওতায় রাজ্যের প্রবীণ মানুষেরা পেয়েছেন আর্থিক সুবিধা।

এই যে ঘরে ঘরে কেসিআর সরকার তার নানাবিধ প্রকল্প নিয়ে পৌঁছে গিয়েছে, এ দিন তারই ফসল ঘরে তুলেছেন কেসিআর।

TRS Assembly Elections 2018 K Chandra Sekhar Rao BJP TDP Congress Telangana Assembly Election 2018
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy