Advertisement
০৮ মে ২০২৪
George Clooney

৫০ কেজি ঝরিয়ে র‍্যাম্পে ঝড়,‘দেশি ক্লুনি’ দীনেশ বাঁচার আশাও ছেড়েছিলেন, ভাইরাল কাহিনি

দেশের প্রথম সারির ফ্যাশন ম্যাগাজিনে তাঁর সাক্ষাৎকার বের হয়। কমবয়সি সুপার মডেলদের ছেড়ে অডিশনে তাঁকেই বেছে নেয় একের পর এক মডেলিং সংস্থা।

দীনেশ মোহন।

দীনেশ মোহন। ছবি : ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া

সংবাদসংস্থা
মুম্বই শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৭:২০
Share: Save:

মডেলিং দুনিয়ার ‘দেশি ক্লুনি’ দীনেশ মোহন ৪৪ বছর বয়সেই বাঁচার আশা ছেড়েছিলেন। এক তীব্র ব্যক্তিগত আঘাত থেকেই বেঁচে থাকাটা বাহুল্য মনে হয়েছিল তাঁর। পুরোপুরি শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছিলেন। ওজন বেড়ে হয়েছিল ১৩০ কেজি। আর এখন ৫০-এর কোঠায় পৌঁছে সেই দীনেশই নামী ডিজাইনার ব্র্যান্ডের হয়ে র‌্যাম্পে হাঁটছেন।

ধবধবে সাদা চুল। সাদা দাড়ি। সামান্য হলেও মুখে বলিরেখার আঁকিবুঁকি। চোখের নীচের চামড়ায় ভাঁজ। তবে পেটানো চেহারা। চাল চলনে ঝাঁঝালো ভাব। হলিউডের অভিনেতা জর্জ ক্লুনির মতোই। দেশের প্রথম সারির ফ্যাশন ম্যাগাজিনে তাঁর সাক্ষাৎকার বের হয়। কমবয়সি সুপার মডেলদের ছেড়ে অডিশনে তাঁকেই বেছে নেয় একের পর এক মডেলিং সংস্থা। সেই দীনেশ ৪৪ বছর বয়সে বাঁচবেন না ভেবেছিলেন কেন? একটি সাক্ষাৎকারে নিজের অনুপ্রেরণার কথা, লড়াইয়ের কথা জানিয়েছেন দীনেশ। কীভাবে প্রৌঢ়ত্বের দোরগোড়ায় এসে মডেল হলেন, শূন্য থেকে শুরু করার অনুপ্রেরণা পেলেন কোথা থেকে, সবটাই জানিয়েছেন সাক্ষাৎকারে। যা নেটমাধ্যমে রীতিমতো ভাইরাল হয়েছে।

ব্যক্তিগত জীবনে একটি বড় ধরনের ক্ষতির মুখোমুখি হয়েই ৪৪ বছর বয়সে মুষড়ে পড়েছিলেন দীনেশ। বাঁচার ইচ্ছে হারিয়ে ফেলেন তিনি। দীনেশ জানিয়েছেন, সেই সময় তিনি দিনের পর দিন বিছানাতেই পড়ে থাকতেন। মানসিক ভাবে পুরোপুরি ভেঙে পড়েছিলেন। দীনেশকে সুস্থ করে তোলার যাবতীয় চেষ্টা করেছিলেন তাঁর দিদি ও জামাইবাবু। মানসিক চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলা থেকে শুরু করে দীনেশের যত্ন-আত্তি, সবই করেছিলেন তাঁরা। দীনেশ জানিয়েছেন, তার পরও ‘‘সুস্থ হওয়ার কোনও ই্চ্ছে বা চেষ্টা ছিল না আমার। ধীরে ধীরে পরজীবী হয়ে উঠছিলাম। ওজন বাড়তে বাড়তে ১৩০ কেজি হয়েছিল আমার।’’ বিরক্ত হয়ে গিয়েছিলেন দীনেশের আত্নীয়রাই। দীনেশ জানিয়েছেন, একদিন তাঁরাই তাঁকে এ নিয়ে রীতিমতো অপমান করেন। সেই তীব্র অপমানই দীনেশের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।

পুষ্টিবিদের কাছে যাওয়া শুরু করেন তিনি। শরীরচর্চাও শুরু করেন। এমন নয়, হতাশা ফিরে আসেনি। কিন্তু, নিজেই নিজেকে বিশ্বাস জুগিয়েছেন। ৫০ কেজি কমিয়েছেন ওজন। সুস্থ হওয়ার সফর সহজ ছিল না একেবারেই। তবে একদিন এক প্রতিবেশী তাঁকে চিনতে না পারায় তিনি বেশ মজা পেয়েছিলেন। ঘটনাটি উদ্বুদ্ধও করেছিল তাঁকে।

কিন্তু, রোগা হওয়া আর ৫০ বছর বয়সে নিজেকে দেশের গ্ল্যামার মডেল হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা এক কথা নয়। দীনেশ বলছেন, একটি ফ্যাশন পত্রিকায় তাঁর রোগা হওয়ার আগের ও পরের ছবি প্রকাশিত হয়েছিল। তার পর থেকেই ছোটখাটো মডেলিংয়ের প্রস্তাব আসতে শুরু করে। বিষয়টি ভালই লেগেছিল দীনেশের। তিনি অডিশন দেওয়ার সিদ্ধান্তও নেন। দীনেশ বলেছেন, ‘‘যাঁরা সেদিন ওই অডিশন দিতে এসেছিলেন, তাঁরা প্রত্যেকে বয়সে আমার থেকে অনেক ছোট। আমি ভেবেছিলাম, আমার সুযোগ নেই এথানে।’’ কিন্তু, ওই অডিশনের এক ফটোগ্রাফার তাঁকে উৎসাহিত করেন। তিনিই দীনেশকে বলেন, ‘‘তুমি ঠিক জায়গায় এসে পৌঁছেছ। মডেলিংই তোমার আদর্শ দুনিয়া।’’ সেখান থেকে একের পর এক মডেলিং, এমনকি ‘দেশি ক্লুনি’-র শিরোপা। সলমন খান ও রজনীকান্তের সঙ্গে সিনেমাও করেছেন দীনেশ।

তাঁর এই বদলে অবাক হয়েছেন আত্মীয়রাও। দীনেশের কথায়, ‘‘ওঁরা বলেছিলেন, ‘হাঁটতে না পারার পরিস্থিতি থেকে এখন র‌্যাম্পে হাঁটার জায়গায় পৌঁছেছ তুমি... নিঃসন্দেহে অনেকটা পথ এগিয়ে এসেছ’।’’ এটা শুনে দারুণ ভাল লেগেছিল দীনেশের। ফেসবুকে তাঁর উত্থানের কাহিনি ১৮০০০ লাইক পেয়েছে। শেয়ার হয়েছে বহু বার। দীনেশ জানিয়েছেন, তাঁর কাহিনি যদি তাঁর মতোই কাউকে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করে তবে সবচেয়ে খুশি হবেন তিনিই।

আরও পড়ুন:
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE