অটো চালিয়ে সংসার চালাতে হয়। কিন্তু কখনই কন্যার স্বপ্নপূরণে পিছপা হননি। ঋণ নিয়ে তাঁকে উচ্চশিক্ষার জন্য লন্ডনে পাঠানোর বন্দোবস্ত করেছিলেন। তবে তাঁদের সেই স্বপ্নের উড়ান ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেল এক লহমায়। অহমদাবাদ বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল তাঁদের কন্যা পায়েল খটিকের!
গুজরাতের হিম্মতনগরের বাসিন্দা খটিক পরিবার। সেই পরিবারের কন্যা পায়েলকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন বুনেছিলেন তাঁর বাবা-মা। ছোট থেকেই পড়াশোনায় ভাল ছিলেন পায়েল। গুজরাতের এক কলেজ থেকে স্নাতকে উত্তীর্ণ হন তিনি। ভাল নম্বরও ছিল। ইচ্ছা ছিল বিদেশে গিয়ে স্নাতকোত্তর করবেন। সুযোগও পান লন্ডনের এক কলেজে। তবে পায়েলকে বিদেশে পাঠাতে গেলে প্রয়োজন ছিল বিপুল অর্থের। কন্যার স্বপ্ন পূরণ করতে বদ্ধপরিকর ছিলেন পায়েলের বাবা। ঋণ নেন। ভেবেছিলেন, স্নাতকোত্তরের পর চাকরি করে ঋণ শোধ করে দেবেন পায়েল।
বৃহস্পতিবার অহমদাবাদ-লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়া বিমানের যাত্রী ছিলেন পায়েল। পরিবারে তিনিই প্রথম, যিনি বিদেশ পাড়ি দিচ্ছেন। খুশি ছিলেন সকলেই। প্রায় সকলে মিলেই পায়েলকে বিমানে তুলতে বিমানবন্দর এসেছিলেন। সময়টা তখন সকাল ১০টা। বাড়ি ফিরে দুপুরে শুনলেন তাঁর কন্যার লন্ডনগামী বিমান ভেঙে পড়েছে। আবার ছুটে গিয়েছিলেন অহমদাবাদ বিমানবন্দরে। ঘুরেছেন হাসপাতালে হাসপাতালে। শেষে মৃতদের ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে খটিক পরিবার জানতে পারে, পায়েল মৃত!
আরও পড়ুন:
পায়েলের বাবা সুরেশ খটিক বিশ্বাসই করতে পারছেন না তাঁর মেয়ে আর নেই! এক দিকে মেয়ের মৃত্যু, অন্য দিকে ঋণের বোঝা! সুরেশের কথায়, ‘‘কলেজ শেষ করার পর পায়েলের ইচ্ছা ছিল লন্ডনে পড়তে যাবে। সেই জন্য ঋণ নিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম চাকরি করে মেয়েই ঋণ শোধ করবে।’’ তা আর হল কই।