বার বার বাড়ির লোকের কাছে একটাই প্রশ্ন করে যাচ্ছে ছোট মেয়েটি, ‘মা কখন আসবে?’ কিন্তু কেউই তার উত্তর দিতে পারছেন না। দেবেনই বা কী করে! কারণ যার খোঁজ করে চলেছে মেয়েটি, তিনিই তো ‘না ফেরার দেশে’ চলে গিয়েছেন। মেয়েটিকে মা বলে গিয়েছিল, কাজ শেষ হলেই তিনি ফিরে আসবেন। কিন্তু কাজ থেকে তাঁর আর ফেরার উপায় নেই। কারণ বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
অপর্ণা মহাধিক। দুর্ঘটনাগ্রস্ত এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান এআই১৭১-এর কেবিন ক্রু ছিলেন। মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা তিনি। বৃহস্পতিবার বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে অপর্ণার। বাড়িতে রয়েছে তাঁর ছোট্ট মেয়ে। মাকে দেখতে না পেয়ে বার বার জিজ্ঞাসা করে চলেছে, মা কখন আসবে। এই উত্তর কারও জানা নেই। মেয়েটিও জানে না যে, তাঁর মা আর বেঁচে নেই। তাঁকে জানাতেও সাহস পাচ্ছেন না বাড়ির লোকেরা।
অপর্ণার এক আত্মীয় জানিয়েছেন, মাকে ফোন করে চলেছে মেয়েটি। মা কখন ফোন তুলে ‘হ্যালো’ বলবে সেটা শোনার আশায় বার বার তাঁর কথা জিজ্ঞাসা করছে। অপর্ণার স্বামী ইতিমধ্যেই অহমদাবাদে পৌঁছেছেন দেহ শনাক্ত করার জন্য। দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া বেশির ভাগ যাত্রীদের ক্ষেত্রেই তা করা হচ্ছে।
ঘটনাচক্রে, এনসিপি সাংসদ সুনীল তৎকারের আত্মীয় অপর্ণা। তাঁর বৌদি অদিতি তৎকারে আবার মহারাষ্ট্রের নারী এবং শিশুকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘অপর্ণার মৃত্যু হয়েছে ভাবতে পারছি না। অত্যন্ত ভাল মনের মানুষ ছিল সে। এক দিকে কাজ, অন্য দিকে পরিবার, সব কিছুই সুন্দর ভাবে সামাল দিত।’’
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার ওড়ার আট মিনিটের মধ্যেই মেঘানিনগরে ভেঙে পড়ে বিমান। সেই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত বিমানযাত্রী, ক্রু সদস্য, পাইলট এবং বি জে মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া এবং স্থানীয় বাসিন্দা-সহ মোট ২৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।