Advertisement
E-Paper

যন্ত্রণা যায়নি, বললেন আডবাণী

প্রবীণ বিজেপি নেতা মনে করেন, সংখ্যাগরিষ্ঠের অধিকারের কথা বলা মানেই সংখ্যালঘুর বিরোধিতা নয়। এই প্রসঙ্গে নিজের লন্ডন সফরের কথা তোলেন আডবাণী।

জয়ন্ত ঘোষাল

শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:৫৬
লালকৃষ্ণ আডবাণী।

লালকৃষ্ণ আডবাণী।

পঁচিশ বছর কেটেছে। কিন্তু বাবরি মসজিদ ভাঙার ঘটনায় এখনও তিনি একই রকম দুঃখিত। বলছেন ভারতে রামমন্দির আন্দোলনের প্রধান স্থপতি লালকৃষ্ণ আডবাণী।

দিল্লির পৃথ্বীরাজ রোডের বাসভবনে বসে আডবাণী বললেন, ‘‘অনেক সময়ে আন্দোলনের উপরে নিয়ন্ত্রণ হারান নেতৃত্ব। এ ক্ষেত্রে তা-ই হয়েছিল। রামমন্দির আন্দোলনকে কখনওই মুসলিম-বিরোধী আন্দোলন হিসেবে আমি দেখিনি। আমার কাছে রামমন্দির নির্মাণের প্রতীকী কর্মসূচির অর্থ ছিল, ভারতমাতার মন্দির নির্মাণ।’’ কপিল সিব্বলের মতো কংগ্রেস নেতা (যিনি অযোধ্যা মামলার অন্যতম আইনজীবীও বটে) যা নিয়ে কটাক্ষ করলেন, ‘‘আডবাণীজি যা-ই ব্যাখ্যা দিন, তাঁর রামমন্দির আন্দোলনের জন্যই কত লোক মারা গিয়েছেন।’’

প্রবীণ বিজেপি নেতা মনে করেন, সংখ্যাগরিষ্ঠের অধিকারের কথা বলা মানেই সংখ্যালঘুর বিরোধিতা নয়। এই প্রসঙ্গে নিজের লন্ডন সফরের কথা তোলেন আডবাণী। রবি রায় তখন লোকসভার স্পিকার। আডবাণী বলেন, ‘‘সে বার পার্লামেন্টের ভোজসভায় আমার বাঁ দিকে ছিলেন মার্ক্সবাদী বাসুদেব আচারিয়া, ডান দিকে এক জন ইহুদি সাংসদ। মাঝখানে আমি, এক জন হিন্দু। বাসুদেবকে বলেছিলাম, আপনি তো নাস্তিক, উনি ইহুদি। অথচ দেখুন, এখানে ‘চ্যাপলিন’ (যাজক) এসে প্রার্থনা না করা পর্যন্ত আমাদের খাবার দেওয়া হবে না। অর্থাৎ ব্রিটেনের মতো ধর্মনিরপেক্ষ দেশেও সংখ্যাগরিষ্ঠ খ্রিস্টানদের প্রথা মেনে নিচ্ছেন সংখ্যালঘুরা। তা হলে এ দেশে সমস্যা হয় কেন? এই ভাবনা থেকেই রামমন্দির আন্দোলনের শুরু।’’

কথায় কথায় আডবাণী বললেন, ‘‘কে এম মুন্সির ‘জয় সোমনাথ’ বইটির হিন্দি অনুবাদ পড়েছিলাম। মনে হয়েছিল, সোমনাথ থেকে অযোধ্যা পর্যন্ত একটা রথযাত্রা করলে কেমন হয়। সোমনাথের উপরে মোগল শাসকদের অত্যাচার হয়েছিল।’’ আডবাণী-ঘনিষ্ঠ এবং তাঁর রথযাত্রার সঙ্গী সুধীন্দ্র কুলকার্নির কথায়, ‘‘আডবাণীজি কখনওই চাননি, একটি প্রতীকী করসেবা সেই কর্মসূচির বাইরে গিয়ে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের কর্মসূচি হয়ে যাক।’’ সুধীন্দ্রের বক্তব্য, পাকিস্তানে গিয়ে এই আডবাণীই জিন্নার ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে বিজেপিকে অসাম্প্রদায়িক অভিমুখ দিতে চেয়েছিলেন। দলের অনেকে তখন তাঁকে বাধা দিয়েছিল।

ঘটনা হল, বাবরি মসজিদ ভাঙার কয়েক দিন আগেও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নরসিংহ রাও বারবার আডবাণীকে ফোনে বলেছিলেন, আলোচনার মাধ্যমে করসেবা কর্মসূচির পরিবর্তন করা যায় কি না। আডবাণী তখন তাঁকে বলেছিলেন, আন্দোলন আর নেতৃত্বের হাতে নেই। কর্মীরাই তা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

ঘনিষ্ঠ মহলে আডবাণী বারবার বলেছেন, সংসদীয় রাজনীতি করা সিপিএম যেমন মাওবাদী হিংসাকে কোনও দিন মেনে নেয়নি, তিনিও সে রকম উগ্র, সশস্ত্র হিন্দুত্বকে ‘বিচ্যুতি’ বলেই মনে করেছেন চিরকাল। কিন্তু সেই যুক্তি মানতে নারাজ সিব্বল। তিনি বলেন, ‘‘আজ এত বছর পরে আডবাণীজি নিজেকে হয়তো নির্দোষ প্রমাণ করতে চাইবেন। কিন্তু তাঁর আন্দোলন থেকেই এই বিচ্যুতির জন্ম।’’

L. K. Advani Babri Masjid Ayodhya লালকৃষ্ণ আডবাণী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy