ভারত থেকে স্থলপথে সুতো আমদানি বন্ধ করে দিল বাংলাদেশ। মঙ্গলবার বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, বাংলাদেশের বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা এবং বুড়িমারি স্থলবন্দর দিয়ে সুতো আমদানি বন্ধ করা হয়েছে। মূলত এই স্থলবন্দরগুলি দিয়েই ভারত থেকে সুতো আমদানি করত বাংলাদেশ। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ অনুসারে, ওই সিদ্ধান্ত শুধু স্থলপথে সুতো আমদানির ক্ষেত্রেই কার্যকর হচ্ছে। সমুদ্রপথ বা অন্য কোনও মাধ্যমে ভারত থেকে বাংলাদেশে সুতো আমদানিতে কোনও প্রভাব পড়বে না।
কয়েক দিন আগেই তৃতীয় দেশে পণ্য রফতানির জন্য বাংলাদেশকে ‘ট্রান্সশিপমেন্ট’ সুবিধা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। অর্থাৎ, ভারতের শুল্ককেন্দ্র ব্যবহার করে তৃতীয় কোনও দেশে পণ্য রফতানি করতে পারবে না বাংলাদেশ। নয়াদিল্লি জানিয়েছে, বাংলাদেশকে ওই সুবিধা দেওয়ার ফলে ভারতীয় রফতানিকারক সংস্থাগুলির সমস্যা হচ্ছিল। সেই কারণেই বাংলাদেশকে ওই সুবিধা দেওয়া বন্ধ করা হয়েছে। তবে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছিল, এই সিদ্ধান্তের জন্য ভারত হয়ে নেপাল এবং ভুটানে পণ্য রফতানি করতে বাংলাদেশের কোনও সমস্যা হবে না। ঘটনাচক্রে, ভারতের ওই সিদ্ধান্তের কয়েক দিন যেতে না যেতেই এই পদক্ষেপ করল বাংলাদেশ।
‘প্রথম আলো’ অনুসারে, বাংলাদেশের বস্ত্রশিল্প মালিকদের একটি সংগঠন ভারত থেকে সুতো আমদানি বন্ধের জন্য দাবি জানিয়েছিল। ওই ঘটনার পরে গত মার্চ মাসে বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রকের অধীনস্থ বাণিজ্য এবং শুল্ক কমিশনের তরফে সুতো আমদানি বন্ধের জন্য সে দেশের রাজস্ব বোর্ডকে অনুরোধ করা হয়। ওই সময় রাজস্ব বোর্ডকে পাঠানো চিঠিতে বাংলাদেশের বাণিজ্য এবং শুল্ক কমিশনের বক্তব্য ছিল, বস্ত্রশিল্পে দেশীয় সুতোর ব্যবহার বৃদ্ধি করার জন্য এই পদক্ষেপ করা হোক।
আরও পড়ুন:
বাংলাদেশের বস্ত্রশিল্প মালিকদের ওই সংগঠনের দাবি, উত্তর এবং দক্ষিণ ভারতে উৎপাদিত সুতো প্রথমে কলকাতায় গুদামজাত করা হয়। তার পরে সেখান থেকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়। স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে যাওয়া এই সুতোগুলির দাম বাংলাদেশের বাজারে তুলনামূলক ভাবে কম। তাই বাংলাদেশের বস্ত্রশিল্পে আমদানি করা সুতোরই ব্যবহার বেশি প্রচলিত ছিল। এর ফলে বাংলাদেশের তৈরি সুতোর ব্যবহার কম হওয়ায় সে দেশের বস্ত্রশিল্প কারখানাগুলি ক্ষতির মুখে পড়ছিল বলে দাবি ওই সংগঠনের। বস্তুত, ভারত ছাড়াও চিন, তুরস্ক, উজবেকিস্তান থেকে সুতো আমদানি করে বাংলাদেশ। তবে আমদানি করা সুতোর মধ্যে ভারত থেকে যাওয়া সুতোগুলি স্থলবন্দর হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করায় সেগুলির দাম চিন, তুরস্ক বা উজবেকিস্তানের তুলনায় কম হত।