Advertisement
E-Paper

দিল্লিতে শেখ হাসিনা, সম্পর্ক এগোতে তৎপর দু’দেশই

বাংলাদেশের মতো একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে শুধুমাত্র চুক্তি সইয়েই সফরের কর্মসূচি শেষ হয়ে যায় না। অসমের নাগরিক পঞ্জি থেকে বাদ পড়া ১৯ লাখ মানুষকে বাংলাদেশে পাঠানো হতে পারে এই উদ্বেগ প্রবল ঢাকার।

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৯ ০২:২৫
অভ্যর্থনা: দিল্লি বিমানবন্দরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাচ্ছেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী। বৃহস্পতিবার। এপি

অভ্যর্থনা: দিল্লি বিমানবন্দরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাচ্ছেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী। বৃহস্পতিবার। এপি

গত সপ্তাহে নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সম্মেলনের পার্শ্ববৈঠকে সলতে পাকানোর কাজটা শুরু হয়েছিল। শনিবার নয়াদিল্লিতে পূর্ণ বৈঠকে বসতে চলেছেন ভারত এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীরা। প্রকৃতপক্ষে নতুন করে ক্ষমতায় আসার পরে এটাই নরেন্দ্র মোদী এবং শেখ হাসিনার সামগ্রিক দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলি নিয়ে আদানপ্রদানের শুরু। বাণিজ্য, অর্থনীতি, সীমান্ত নিরাপত্তা, যোগাযোগ এবং সন্ত্রাস মোকাবিলার ক্ষেত্রে কমপক্ষে ১০টি চুক্তির কথা জানানো হয়েছে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে। তার মধ্যে রয়েছে তিস্তা-সহ দু’দেশের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া ৫৪টি নদীর মধ্যে দিয়ে যাতায়াত এবং বাণিজ্য বাড়ানো নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি। বাংলাদেশ সূত্রের খবর, আলোচনা হবে তিস্তার জলবণ্টন নিয়েও।

কিন্তু বাংলাদেশের মতো একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে শুধুমাত্র চুক্তি সইয়েই সফরের কর্মসূচি শেষ হয়ে যায় না। অসমের নাগরিক পঞ্জি থেকে বাদ পড়া ১৯ লাখ মানুষকে বাংলাদেশে পাঠানো হতে পারে এই উদ্বেগ প্রবল ঢাকার। সূত্রের খবর, এ বিষয়ে নিউ ইয়র্কে স্বল্পমেয়াদি বৈঠকেও সরব হয়েছিলেন হাসিনা। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে জেরবার বাংলাদেশ এনআরসি নিয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছে। নিউ ইয়র্কের ওই বৈঠক শেষে ভারতের দেওয়া বিবৃতিতে অবশ্য এনআরসি-র উল্লেখ করা হয়নি। তবে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী আব্দুল মোমেন সে সময়ে স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, ওই বিপুল সংখ্যক মানুষকে নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে ঢাকা। সূত্রের খবর, ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে শীর্ষ বৈঠকের পর যে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হবে, তাতে রোহিঙ্গা সমস্যা এবং অসমের এনআরসি নিয়ে ভারতের আশ্বাস চায় ঢাকা। স্বাভাবিক ভাবেই এনআরসি নিয়ে একটি শব্দও দ্বিপাক্ষিক বিবৃতিতে রাখতে চাইছে না ভারত। ভারতের বক্তব্য এনআরসি ঘরোয়া বিষয়। ঢাকার এই নিয়ে চিন্তা করার কারণই নেই। এ দিন হাসিনাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘মোদীর সঙ্গে এনআরসি নিয়ে কথা হয়েছে। আমি তো কোনও সমস্যা দেখি না।’’

বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতার পথ প্রশস্ত করাটা দিল্লিরও অগ্রাধিকারের মধ্যে পড়ে। অগ্নিগর্ভ প্রতিবেশী বলয়ে বসে থাকা ভারতের কাছে ঢাকার সঙ্গে মিত্রতার গুরুত্ব গত পাঁচ বছরে স্পষ্ট হয়েছে বার বার। ক্ষমতায় এসে শেখ হাসিনা সে দেশের মাটি থেকে ভারত-বিরোধী সন্ত্রাসের বেশির ভাগ ঘাঁটিই নির্মূল করেছেন।

কূটনৈতিক সূত্রের খবর, মোদী সরকার চাইছে কাশ্মীর থেকে ৩৭০ প্রত্যাহার নিয়ে ঢাকা ভারতের পাশে দাঁড়াক। পাকিস্তান যে ভাবে রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চে এবং মুসলিম বিশ্বের কাছে কাশ্মীরে ভারতের ভূমিকা নিয়ে বিষ ছড়াচ্ছে, তাতে বাংলাদেশের কৌশলগত সমর্থন জরুরি নয়াদিল্লির কাছে। হাসিনা দিল্লি আসার ঠিক আগে ইমরান খান তাঁকে ফোন করে কুশল সংবাদ নেন। বলা ভাল, কাশ্মীরের কথাই মনে করিয়ে দিয়েছেন ইমরান। অগস্টে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে ঢাকায় গিয়েছিলেন। তার পরেই বাংলাদেশ বলে, কাশ্মীর দ্বিপাক্ষিক বিষয়। তৃতীয় পক্ষের নাক গলানোর প্রশ্ন নেই।

শেখ হাসিনার ভারত সফরের উপলক্ষটি হল ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরাম আয়োজিত ইন্ডিয়া ইকনমিক সামিটে যোগদান। আজ এই সম্মেলনে বক্তৃতা দিয়েছেন হাসিনা। কালও উপস্থিত থাকার কথা তাঁর। প্রধানমন্ত্রী মোদী ছাড়াও হাসিনা দেখা করবেন জয়শঙ্কর, রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এবং কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে। শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ছবি তৈরির দায়িত্বপ্রাপ্ত শ্যাম বেনেগালের সঙ্গেও কথা বলবেন হাসিনা। আজ বিমানবন্দরে হাসিনাকে স্বাগত জানাতে অন্যদের মধ্যে ছিলেন বাঙালি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরীও। তিনি জানান, বাংলায়ই দু’জনের সৌজন্য বিনিময় হয়েছে।

Sheikh Hasina Narendra Modi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy