মহম্মদ রফি গেয়েছিলেন, ‘নাম আব্দুল হ্যায় মেরা/ সবকি খবর রাখতা হুঁ।’ তবে বাংলাদেশের আব্দুল সকলের নজর এড়াতে ভারতে ছদ্মবেশে ছিলেন প্রায় ২৮ বছর। মধ্যপ্রদেশেই ছিলেন প্রায় আট বছর ধরে। অবশেষে ভোপাল পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন ওই বাংলাদেশি যুবক। অভিযোগ, রূপান্তরিত নারী সেজে বেআইনি ভাবে ভারতে ছিলেন ওই বাংলাদেশি যুবক।
অনুপ্রবেশকারীদের সন্ধানে গত কয়েক দিন ধরে অভিযান চালাচ্ছে মধ্যপ্রদেশ পুলিশ। ওই অভিযানেই কয়েক দিন ভোপালের বুদ্ধওয়ড়া এলাকা থেকে ধরা পড়েন নেহা নামে এক ‘রূপান্তরিত নারী’। যদিও পুলিশের দাবি, তিনি রূপান্তরিত নন, চিকিৎসার মাধ্যমে লিঙ্গ পরিবর্তনও করেননি। তিনি পুরুষ ছিলেন, পুরুষই আছেন। তবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসে সকলের চোখে ধুলো দেওয়ার জন্য রূপান্তরিত নারী সেজে বসবাস করছিলেন। আদতে আব্দুল নামে ওই যুবকের কাছ থেকে নকল পরিচয়পত্র-সহ বিভিন্ন নথি উদ্ধার করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, নেহা নামে আধার কার্ড, ভোটার কার্ড পর্যন্ত তৈরি করে ফেলেছিলেন তিনি।
পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে, বছর কুড়ি মুম্বইয়ে ছিলেন আব্দুল ওরফে নেহা। তার পর বছর আটেক আগে তিনি যান মধ্যপ্রদেশ। সেখানে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের তৈরি সংগঠনের অন্যতম মুখ হয়ে উঠেছিলেন। এক তদন্তকারীর কথায়, ‘‘ওঁর আসল নাম আব্দুল কালাম। তবে পরিচয়পত্র তৈরি করেছিলেন নেহা কুমারী নামে। বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসে প্রায় ৩০ বছর রয়েছেন অভিযুক্ত।’’
জানা গিয়েছে, মাত্র ১০ বছর বয়সে ভারতে অনুপ্রবেশ করেন বাংলাদেশি আব্দুল। প্রথম থেকেই থাকতেন মুম্বইয়ে। পরিচয় গোপন রাখার জন্য রূপান্তরিত নারী হওয়াই বেশি নিরাপদ বলে ভেবেছিলেন তিনি। প্রথমে বৃহন্নলার ছদ্মবেশ। তার পর রূপান্তরিত নারী হিসাবে নকল পরিচয়পত্র তৈরি করে স্থায়ী ভাবে ভারতে থাকা শুরু করেন আব্দুল। পুলিশ জানিয়েছে, আব্দুল মাঝেমধ্যে নিজের দেশে যেতেন। তবে বেশি দিন থাকতেন না। মনে করা হচ্ছে, সেখানে থাকতে থাকতেই নকল পরিচয়পত্র তৈরি করেছিলেন। তাঁর সঙ্গে বড় কোনও দালালচক্রের যোগ রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ওই চক্রের খোঁজ চলছে।
আরও পড়ুন:
আব্দুল এখন ৩০ দিনের জন্য তলাইয়া জেলে বন্দি। তাঁর নিরাপত্তায় রয়েছেন দু’জন মহিলা পুলিশকর্মী। নেহা ওরফে আব্দুলের গ্রেফতারির বিষয়টি কেন্দ্রকেও জানানো হয়েছে।