কান্নায় ভেঙে পড়েছেন স্ত্রী।— নিজস্ব চিত্র।
ভোটের মুখে গোয়ালপাড়া ডিটেনশন শিবিরে এক বাঙালির মৃত্যুতে বড়সড় চাপে পড়ল বিজেপি সরকার। অভিযোগ, ভোটার তালিকায় নাম, সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও বরপেটা রোডের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অমৃত দাসকে ২০১৭ সালে বিদেশি হিসেবে ঘোষণা করে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল। সে বছর ২০ মে থেকে তিনি গোয়ালপাড়া ডিটেনশন শিবিরে বন্দি ছিলেন।
অমৃতবাবুর ছেলে কৃষ্ণ দাসের দাবি, “১৯৬১-র ভোটার তালিকা থেকে শুরু করে শেষ ভোটার তালিকায় বাবার নাম ছিল। বাবা, মা মোহনমালা দাস, আমরা দুই ভাই এত বছর ভোট দিচ্ছি। কিন্তু হঠাৎ করেই বাবার নামে নোটিস পাঠায় পুলিশ। ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল কারণ ছাড়াই বাবাকে বিদেশি বলে চিহ্নিত করে দেয়। ফলে আমাদের কারও নাম এনআরসি-র খসড়াতেও ওঠেনি। আমরা হাইকোর্টে মামলা চালাচ্ছিলাম। তার আগেই বাবা চলে গেল।” জেল কর্তৃপক্ষের দাবি, অমৃতবাবুকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। কিন্তু ছেলের দাবি, বিনা চিকিৎসায় বাবার মৃত্যু হয়েছে।
বিভিন্ন সংগঠন ঘটনার তীব্র নিন্দা করে পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে। বরপেটায় ভারতীয় গণ পরিষদের প্রার্থী শান্তনু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে সরকার সন্দেহজনক বিদেশি চিহ্নিত করার নামে বাঙালিদের কারাবন্দি করে অত্যাচার চালাচ্ছে। অমৃতবাবুর মৃত্যুর দায় অসম সরকারকেই নিতে হবে।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
আরও পড়ুন: এক যুগ পর সিপিএমের সেই পার্টি অফিস খুলল নন্দীগ্রামে
অমৃতবাবুর দেহ।— নিজস্ব চিত্র।
ডিটেনশন শিবিরগুলির দুর্দশা নিয়ে মানবাধিকার কর্মী তথা প্রাক্তন আমলা হর্ষ মান্দার সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন। মামলা চলছে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বেঞ্চে। রাজ্য সরকার জানিয়েছে রাজ্যের ৬টি ডিটেনশন শিবিরে প্রায় সাড়ে ন’শো জন বন্দি আছেন। রাজ্য সরকার বিদেশি শনাক্তকরণ, বিতাড়ণে পর্যাপ্ত আন্তরিকতা না দেখানোয়, অনির্দিষ্টকাল মানুষকে ডিটেনশন শিবিরে বন্দি রাখায় ও বন্দিদের পর্যন্ত সুযোগসুবিধা না দেওয়ায় রাজ্য সরকারের নিন্দা করেছে আদালত। ১ এপ্রিলের শুনানিতে অসম সরকারের মুখ্য সচিব অলোক কুমার সশরীরের হাজির না হওয়ায় আগামীকালের শুনানিতে তাঁকে হাজির হওয়ায় ও আদালতের নির্দেশ না মেলা পর্যন্ত অসমে না ফেরার নির্দেশ দিয়েছে বেঞ্চ।
আরও পড়ুন: চলছে নবরাত্রি, ভয় দেখিয়ে মাংসের দোকান বন্ধ করালো হিন্দু সেনা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy