Advertisement
E-Paper

শহিদ স্মরণে বরাকের রাস্তায় জনসমুদ্র

তিন দিন আগে ভাষাশহিদ উদযাপন শুরু হল বরাক উপত্যকায়। এ বার বড় কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে তার সূচনা করল মাতৃভাষা ঐক্যমঞ্চ। উধারবন্দে শহিদ মিনার তৈরি করে তারা। গত কাল সেটির উদ্বোধন করেন রাজ্যের পরিবহণ ও ক্রীড়ামন্ত্রী অজিত সিংহ। আজ উপত্যকার বিভিন্ন জায়গায় নানা অনুষ্ঠান হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৫ ০২:৫৭

তিন দিন আগে ভাষাশহিদ উদযাপন শুরু হল বরাক উপত্যকায়।

এ বার বড় কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে তার সূচনা করল মাতৃভাষা ঐক্যমঞ্চ। উধারবন্দে শহিদ মিনার তৈরি করে তারা। গত কাল সেটির উদ্বোধন করেন রাজ্যের পরিবহণ ও ক্রীড়ামন্ত্রী অজিত সিংহ। আজ উপত্যকার বিভিন্ন জায়গায় নানা অনুষ্ঠান হয়। বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের কাছাড় জেলা সমিতি সন্ধ্যায় আয়োজন করে উনিশের আবাহন-এর। শহিদ কমলা ভট্টাচার্যের প্রতিমূর্তির সামনে প্রদীপ জ্বালিয়ে সঙ্গীতানুষ্ঠান করে শ্যামাপ্রসাদ রোড মহিলা সমিতি। হাইলাকান্দিতে মশাল মিছিল বের হয় স্থানীয় প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মঞ্চ অন্য বছরের মত এ দিনও মোমবাতি হাতে উনিশের মহা-পথ চলার আয়োজন করে। শিলচর রাঙ্গিরখাড়িতে শহিদ-স্মারকের সামনে সমবেত হয়ে শহরের প্রধান সড়কগুলি পরিক্রমা করে রেল স্টেশনে গিয়ে শেষ হয়।

এই স্টেশনেই সত্যাগ্রহ করতে গিয়ে ১৯৬১ সালের ১৯ মে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন ১১ জন তরুণ-তরুণী।

তাঁদের সে দিন একটাই দাবি ছিল, বরাক উপত্যকায় বাংলাকে সরকারি ভাষার মর্যাদা দিতে হবে। অসম সরকার তখন বিধানসভায় বিল এনে বলেছিল, অসমের একমাত্র রাজ্যভাষা হবে অসমিয়া। তারই প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছিল বরাক উপত্যকা। ১১ জনের আত্মবিসর্জনে শেষ পর্যন্ত বাংলাভাষার মর্যাদা রক্ষা হয়।

এ দিন উনিশের মহা-পথ চলায় সেই দিনের কথা মনে করিয়ে দিয়ে নতুন আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সরব হতে আহ্বান জানানো হয়। মিছিলের আগে রাঙ্গিরখাড়ি সমাবেশে বিভিন্ন বক্তা এই প্রসঙ্গে জাতীয় নাগরিক পঞ্জী, ভূমিপুত্র প্রসঙ্গ টেনে আনেন। তাঁরা বলেন, বার বার এই অঞ্চলের মানুষকে নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হচ্ছে। কখনও বলা হয় বিদেশি, কখনও ভোটার তালিকায় নামের পাশে সন্দেহভাজন লিখে জেলে পুরে দেওয়া হচ্ছে। নানা ভাবে চলছে ভাষা আগ্রাসন। শহিদদের আত্মবলিদান থেকে শক্তি সঞ্চয় করে সে সবের বিরুদ্ধে ঝাঁপাতে আহ্বান জানান সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মঞ্চের কর্মকর্তারা। মিছিল থেকে যেমন মাতৃভাষা জিন্দাবাদ, বাংলাভাষা জিন্দাবাদ ধ্বনি ওঠে, তেমনি গানে গানে মুখর ছিলেন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভ্যরা। প্রবীণ নাগরিকদের সঙ্গে একসঙ্গে মিছিলে হেঁটেছে নবীন প্রজন্মের শিশু-কিশোররা। বিভিন্ন পেশার নারী-পুরুষ মিছিলে সামিল ছিলেন। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মঞ্চের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে দেখা যায় উধারবন্দের মাতৃভাষা ঐক্যমঞ্চ, বরাকভ্যালি ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরাম, আবেগ, পলিটেকনিক প্রাক্তনী সংগঠনকে।

বঙ্গভবনে উনিশের আবাহন অনুষ্ঠানে ৬১-র দুই ভাষাসেনানী আলো পালচৌধুরী এবং ছায়ারানি দেবকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। মুখ্য অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন ত্রিপুরার লেখক আশিসকুমার বৈদ্য।

গত কাল উধারবন্দের অনুষ্ঠান থেকে আজকের বিভিন্ন কর্মসূচি—সর্বত্র সাধারণ মানুষের ভিড় জমেছিল। গত কাল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর ফাইবার গ্লাসের শহিদ মিনার দেখতে গিয়েছেন অনেকে। অনুষ্ঠানে মন্ত্রী অজিত সিংহের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা গৌতম রায়ও উপস্থিত ছিলেন। ভাষণ দেন বরাক উপত্যকা বঙ্গসাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের কাছাড় জেলা সভাপতি তৈমুর রাজা চৌধুরী, ভাষাসেনানী লোকমান আলি, বেণীমাধব দাস, হৃদয়েন্দ্র দেবমজুমদার প্রমুখ। ১৯৬১-তে বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার লড়াই গড়ে উঠলেও এই অঞ্চলে বসবাসকারী সব ভাষার মানুষই যে তাতে সামিল হয়েছিলেন, সে কথায় গুরুত্ব দেন তাঁরা।

Bhasa sahid silchar Barak valley Ajit Singh assembly
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy