E-Paper

অতি অনগ্রসরের জন্য সঙ্কল্প পত্র রাহুলদের

বিহারের বিধানসভা নির্বাচনে এই ইবিসি ভোটব্যাঙ্ককেই এ বার পাখির চোখ করতে চাইছেন রাহুল গান্ধী ও তেজস্বী যাদব। আজ পটনায় কংগ্রেসের বর্ধিত কার্যকরী কমিটির বৈঠকের পরে রাহুল-তেজস্বীরা এক মঞ্চে হাজির হয়ে ‘অতি পিছড়া ন্যায় সঙ্কল্প পত্র’ প্রকাশ করেছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৮:৩৪
‘অতি পিছড়া ন্যায় সংকল্প পত্র’ প্রকাশ রাহুল গান্ধীর। পটনায়।

‘অতি পিছড়া ন্যায় সংকল্প পত্র’ প্রকাশ রাহুল গান্ধীর। পটনায়। ছবি: পিটিআই।

‘অতি পিছড়া’ বা অতীব অনগ্রসর। বিহারের চালু ভাষায় ইবিসি বা ‘এক্সট্রিমলি ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস’। বিহারের ১৪ কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় ৩৬ শতাংশই এই ইবিসি শ্রেণিভুক্ত। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের গুরুত্বপূর্ণ ভোটব্যাঙ্ক।

বিহারের বিধানসভা নির্বাচনে এই ইবিসি ভোটব্যাঙ্ককেই এ বার পাখির চোখ করতে চাইছেন রাহুল গান্ধী ও তেজস্বী যাদব। আজ পটনায় কংগ্রেসের বর্ধিত কার্যকরী কমিটির বৈঠকের পরে রাহুল-তেজস্বীরা এক মঞ্চে হাজির হয়ে ‘অতি পিছড়া ন্যায় সঙ্কল্প পত্র’ প্রকাশ করেছেন। তাতে বিহারের ইবিসি-দের জন্য ১০ দফা প্রতিশ্রুতি রয়েছে। সেই সঙ্কল্প পত্র প্রকাশ করে রাহুল ঘোষণা করেছেন, বিহারে বিরোধীদের ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চ সরকারে এলে সংরক্ষণের ৫০ শতাংশের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানো হবে। পঞ্চায়েত, পুর নিগমে ইবিসি-দের জন্য সংরক্ষণ ২০ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হবে। বেসরকারি কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে সংরক্ষণ চালু হবে। এ ছাড়া ইবিসি-দের উপরে অত্যাচার রোখার আইন, ভূমিহীনদের জন্য জমির প্রতিশ্রুতিও রয়েছে তাঁদের।

এই প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করে রাহুল প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার কেন গত ২০ বছরে এই সব পদক্ষেপ করেননি? আমরা ইবিসি শ্রেণির মানুষকে জিজ্ঞাসা করেছি, কী প্রয়োজন? সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নীতীশ কেন তা করেননি?’’ একই মঞ্চ থেকে নীতীশকে নিশানা করে আরজেডি নেতা তেজস্বী বলেছেন, ‘‘বিহারে এখন নকলনবিশি সরকার চলছে। কোনও দূরদৃষ্টি নেই। আমরা যা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, তা নীতীশ সরকার ঘোষণা করে দিচ্ছে। হতে পারে এই দশ দফা প্রতিশ্রুতিও নকল করে ফেলবে। তাই বিহারের মানুষ বলছে, ২০০৫ থেকে ২০২৫, যথেষ্ট হয়েছে নীতীশ।’’

নীতীশ নিজে ওবিসি শ্রেণিভুক্ত কুর্মি সম্প্রদায়ের নেতা হলেও ইবিসি-দের জন্য পঞ্চায়েতে সংরক্ষণ, নানা কল্যাণমূলক প্রকল্প করে তিনি ইবিসি-দের চোখের মণি হয়ে উঠেছিলেন। এ ক্ষেত্রে অতীতের কর্পূরী ঠাকুরের পথে হেঁটেছিলেন তিনি। পরে লালু প্রসাদ ইবিসি ভোটকেও তাঁর যাদব-ওবিসি ভোটের সঙ্গে জুড়ে নেন। নীতীশ আবার নিজস্ব ইবিসি ভোটব্যাঙ্ক তৈরি করেন। সেই সুবাদে ইবিসি ভোটের অর্ধেক নীতীশ ও বিজেপির জোটের ঝুলিতে যাচ্ছে বলে কংগ্রেস, আরজেডি নেতারা মনে করছেন। তাই আরজেডি সম্প্রতি ইবিসি নেতা মঙ্গনি লাল মণ্ডলকে বিহারের রাজ্য সভাপতি করেছে। এ বার কংগ্রেসও ইবিসি ভোটব্যাঙ্ককে পাখির চোখ করছে।

আজ কংগ্রেসের বর্ধিত কার্যকরী কমিটির বৈঠকের গোড়াতেই দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে মনে করিয়ে দিয়েছেন, রাহুল জাতগণনার দাবি তুলেছিলেন, যাতে দেশে ওবিসি, ইবিসি-দের সংখ্যা জানা যায়। তার পরে মোদী সরকার সেই দাবি মেনেছে। বিহারে জাতগণনা হলেও সেই অনুযায়ী সংরক্ষণ হয়নি। এ দিকে উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের সরকার জাতের নামে কোনও জনসভা করা যাবে বলে বলে নির্দেশ জারি করেছে। পরে রাহুলও এ নিয়ে সরব হন। বিহারে এনডিএ-র মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্বের অভিযোগ তুলে খড়্গে বলেন, বিজেপি আসলে নীতীশকে মানসিক ভাবে অবসরে পাঠিয়ে দিয়েছে। নীতীশ ‘বোঝা’ হয়ে উঠেছেন। তেজস্বীর অভিযোগ, বিহারের সরকার নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ মিলেই চালাচ্ছেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Rahul Gandhi Congress Bihar Assembly Election 2025

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy