প্রতীকী ছবি।
প্রতিশ্রুতি ছিল বছরে দু’কোটি কাজের সুযোগ তৈরি করার। কিন্তু তাঁর সরকারের চার বছরের শেষে চাকরি ক্ষেত্রের যে ছবি সামনে আসছে— তা যে মোটেই যে আশাব্যঞ্জক নয়, তা বিলক্ষণ জানেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়েই বিহারের মাধেপুরায় রেলইঞ্জিন তৈরির কারখানায় নিয়োগকে আজ প্রচারের হাতিয়ার করলেন প্রধানমন্ত্রী। ওই কারখানাকে তাঁর সময়কার অন্যতম সাফল্য হিসেবেই শুধু তুলে ধরেননি মোদী, দাবি করেছেন, এই প্রকল্প এলাকার অর্থনীতিকেই পাল্টে দেবে।
২০০৭ সালে মাধেপুরায় রেলইঞ্জিন তৈরির কারখানার রূপরেখা তৈরি করেছিলেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদব। কিন্তু মোদীর দাবি, তাঁদের সরকার আসার পর থেকেই কারখানা নির্মাণে গতি আসে। যার ফলে মাত্র তিন বছরেই তৈরি হয়েছে ওই কারখানা। মোদীর কথায়, ‘‘ওই কারখানা তৈরির সুফল পাবেন স্থানীয় যুবকেরা। নতুন চাকরি তৈরি হবে।’’
কিন্তু ঘটনা হল, ওই ধাঁচের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি-নির্ভর কারখানায় কর্মী নিয়োগ হয় খুব কম সংখ্যায়। তবে এই প্রকল্প রূপায়ণে দায়িত্বপ্রাপ্ত ফরাসি সংস্থা ‘অ্যালস্টম’ আজ জানিয়েছে, মাধেপুরার কারখানায় নীতিগত ভাবেই স্থানীয় যুবকদের কাজের সুযোগ দেওয়ার পক্ষাপাতী তারা। আগামী দশ বছরে এলাকার প্রায় ৮৪০ জন যুবককে আইটিআই প্রশিক্ষণ দেবে তারা। যার মধ্যে ৩০০ জনকে সরাসরি ওই সংস্থায় চাকরি দেওয়া হবে। রেল কারখানার পাশাপাশি এলাকায় অনুসারি শিল্পেও বড় মাপের কাজের সুযোগ তৈরি হবে বলে জানিয়েছে ওই সংস্থা। অ্যালস্টমের দাবি, যন্ত্রাংশ-সহ নানা ধরনের চাহিদা মেটাতে মাধেপুরার মূল কারখানাকে ঘিরে অনুসারি শিল্পের ‘হাব’ গড়ে উঠতে চলেছে। কারখানা সম্পূর্ণ ভাবে চালু হলে অনুসারি শিল্পেরও বিকাশ ঘটবে। সেই সময়ে অনুসারি শিল্পে প্রায় পাঁচ হাজার জন চাকরি পাবেন।
দ্বিগুণ শক্তির রেল ইঞ্জিন
• আগামী ১১ বছরে ৮০০টি রেলইঞ্জিন তৈরি করবে ফরাসি সংস্থা অ্যালস্টম। প্রথম পাঁচটি তৈরি হবে ফ্রান্সে। বাকি ৭৯৫টি ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের আওতায় ভারতে তৈরি হবে।
• শক্তিশালী ওই ইঞ্জিন প্রতি ঘণ্টায় ১১০-১২০ কিলোমিটার ছুটতে পারে। প্রধানত কয়লা ও লৌহ আকরিক পরিবহণে ওই ইঞ্জিন ব্যবহার করার কথা ভাবছে রেল।
• বিদ্যুতচালিত মালগাড়ির ইঞ্জিনের ক্ষমতা ১২ হাজার হর্সপাওয়ার। ভারতে এত দিন পর্যন্ত সর্বাধিক ৬ হাজার হর্সপাওয়ারের ইঞ্জিন ব্যবহার করা হত। এত ক্ষমতাসম্পন্ন ইঞ্জিন কেবল রাশিয়া, চিন, জার্মানি ও সুইডেনেরই কাছেই রয়েছে।
• প্রতিটি ইঞ্জিনের দাম ২৫ কোটি টাকা। গোটা প্রকল্পটি ২০ হাজার কোটি টাকার। এর মধ্যে ১৩০০ কোটি টাকা খরচ হবে মাধেপুরায় ইঞ্জিন নির্মাণের মূল কারখানাটি এবং সাহারাণপুর ও নাগপুরে ইঞ্জিন রক্ষণাবেক্ষণ কারখানা বানাতে।
• ২০১৯-২০ সালে ৩৫টি ও ২০২০-২১ সালে ৬০টি ইঞ্জিন তৈরি হবে মাধেপুরার কারখানায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy