বছর পাঁচেক আগের কথা। ২০১২ সালের ১৪ এপ্রিল। জয়েন্ট এন্ট্রান্সের আগের দিন মধ্য কলকাতার দু’টি হোটেলে হানা দিয়ে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সবাই ছিল বিহারের বাসিন্দা। মোটা টাকার বিনিময়ে অন্যের হয়ে পরীক্ষা দেওয়ার চক্রের সদস্য ছিল তারা। পর দিন ভবানীপুরের একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে ধরা পড়ে খুশবু নামে এক তরুণী। বিহারের নালন্দার বাসিন্দা পূজা সিংহ সেজে পরীক্ষায় বসেছিল সে। খুশবুও ছিল বিহারের। ২০১০ এবং ২০০৭ সালেও পশ্চিমবঙ্গে পরীক্ষা দুর্নীতিতে বিহারের চক্রের নাম জড়িয়েছিল।
সময় পাল্টেছে। মুখ পাল্টেছে। তবে পদ্ধতি রয়েছে একই। দেশের বিভিন্ন পরীক্ষা কেলেঙ্কারিতে বার বার উঠে এসেছে বিহারের নাম।
এ বার চাকরি পরীক্ষার দুর্নীতি-কাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছেন খোদ বিহার কর্মচারী নিয়োগ আয়োগের (এসএসসি) সচিব পরমেশ্বর রাম। নাম জড়িয়েছে কয়েক জন এসএসসি আধিকারিকেরও।
মধ্যপ্রদেশের নিয়োগ পরীক্ষা ‘ব্যপম’ দুর্নীতির তদন্ত করছে সিবিআই। তার সূত্রও বিহারে রয়েছে বলে জানিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। বেতিয়া, মুজফফরপুর-সহ কয়েকটি জায়গায় অভিযান চালানো হয়। তবে লাভ হয়নি। ২০১৫ সালে হরিয়ানার শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় প্রায় ৪০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ২ লাখ টাকা করে উত্তরপত্র বিক্রি হয়েছে। তাতেও উঠে আসে বিহারের কয়েক জনের নাম। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে রাজস্থানের অধ্যাপক নিয়োগ পরীক্ষায় নকল করানোর একটি দলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের বেশির ভাগই ছিল বিহারের। হায়দরাবাদের কৃষি, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং মেডিক্যালের সংযুক্ত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে তেলঙ্গনার সিআইডি বিহারের তিন যুবককে গ্রেফতার করে।
গত বছর ‘ন্যাশনাল এলিজিবেলিটি কাম এন্ট্রান্স টেস্ট’-এর প্রশ্নপত্র ফাঁসের জাল ছড়িয়েছিল বিহার জুড়ে। চক্রের মাথা ছিল নীলেশ। উত্তরপ্রদেশের এসটিএফ বিহার থেকে কয়েক জনকে গ্রেফতার করলেও নীলেশ এখনও অধরা। তার আগে বিহার এসএসসি পরীক্ষায় উত্তরপত্র সরবরাহ হয়েছিল পটনার গর্দনিবাগ ও কোতয়ালি এলাকা থেকে। ১৮ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু চক্রের মাথা মহেশ ওরফে বিমলেশ ওরফে আকাশ গা-ঢাকা দেয়। বছর দু’য়েক আগে পটনার কঙ্করবাগ থানার পুলিশ বিভিন্ন সরকারি চাকরি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের চক্রের খোঁজ পায়। জানা যায়, বেঙ্গালুরুতে বসে কলকাঠি নাড়াচ্ছে বিহারের বাসিন্দা চন্দ্রাজি। ২০১৫ সালে দিল্লিতে জেবিটি এবং টিজিটি ভর্তি পরীক্ষায় দুর্নীতিতে ২৫ জন শিক্ষক-সহ ৩০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। কিং-পিন ছিল বিহারের বাসিন্দা মিথিলেশ পাণ্ডে ওরফে গুরু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy