Advertisement
E-Paper

দিল্লি দখলে ঘুষ, আপের ভিডিও-বোমা

দিল্লিতে সরকার গড়তে বিজেপি যে ‘অপচেষ্টা’ চালাচ্ছে দিন দু’য়েক আগে তা ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন আম আদমি পার্টির নেতৃত্ব। আজ একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেন আপ নেতা অরবিন্দ কেজরীবাল। তাঁর দাবি, বিজেপি নেতারা কী ভাবে আপ বিধায়কদের টাকার লোভ দেখিয়ে দলে টানার চেষ্টা করছে তা ওই ফুটেজে দেখানো হয়েছে। দিল্লিতে সরকার গড়ার প্রশ্নে এক বিজেপি নেতার সঙ্গে আপের এক বিধায়কের দর কষাকষির ভিডিও প্রকাশ্যে আসায় রীতিমতো অস্বস্তিতে বিজেপি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:১৬

দিল্লিতে সরকার গড়তে বিজেপি যে ‘অপচেষ্টা’ চালাচ্ছে দিন দু’য়েক আগে তা ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন আম আদমি পার্টির নেতৃত্ব। আজ একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেন আপ নেতা অরবিন্দ কেজরীবাল। তাঁর দাবি, বিজেপি নেতারা কী ভাবে আপ বিধায়কদের টাকার লোভ দেখিয়ে দলে টানার চেষ্টা করছে তা ওই ফুটেজে দেখানো হয়েছে। দিল্লিতে সরকার গড়ার প্রশ্নে এক বিজেপি নেতার সঙ্গে আপের এক বিধায়কের দর কষাকষির ভিডিও প্রকাশ্যে আসায় রীতিমতো অস্বস্তিতে বিজেপি। আপাতত দিল্লিতে সরকার গড়ার সক্রিয়তা ছেড়ে ক্ষত মেরামতে ব্যস্ত তারা।

প্রয়োজনীয় সংখ্যা না থাকলেও সম্প্রতি দিল্লির উপরাজ্যপাল নজীব জঙ্গ বিজেপিকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানাতে চেয়ে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ছাড়পত্র চান। জঙ্গের সেই চিঠি এখন রাষ্ট্রপতি ভবন ঘুরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের হেফাজতে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এখনও সরকারি ভাবে তাদের মত না জানালেও জঙ্গের পদক্ষেপের পরেই সরকার গড়তে তৎপর হন বিজেপি নেতৃত্ব। দিল্লিতে সরকার গড়তে পাঁচ জন বিধায়কের সমর্থন প্রয়োজন বিজেপির। আপ শিবিরের অভিযোগ ছিল, প্রয়োজনীয় সংখ্যার জন্য তাদের ঘর ভাঙার চেষ্টা করছে বিজেপি। আপের বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করে বিজেপি নেতারা প্রচুর টাকার প্রলোভন দেখাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন কেজরীবাল।

আজ সাংবাদিক বৈঠক ডেকে নিজের অভিযোগের সমর্থনে ভিডিও প্রকাশ করেন কেজরীবাল। ওই ফুটেজে দেখা গিয়েছে, গতকাল দিল্লি বিজেপির সহ সভাপতি শের সিংহ ডাগরের বাড়িতে বৈঠক করেছেন সঙ্গমবিহার এলাকার আপ বিধায়ক দীনেশ মোহনিয়া। ভিডিওতে আপের ওই বিধায়ককে বিজেপিকে সাহায্য করার জন্য চার কোটি টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দিচ্ছেন ডাগর। এমনকী তাঁকে বিজেপির টিকিটে পরে বিধায়ক হিসেবে জিতিয়ে আনারও আশ্বাস দিতেও দেখা গিয়েছে ডাগরকে। ভিডিও ফুটেজে মোহনিয়া ও এক মধ্যস্থতাকারী ডাগরকে আশ্বস্ত করে জানান, তিনি ছাড়াও আরও তিন-চার জন বিধায়ক আপ ছাড়তে প্রস্তুত। আশ্বস্ত ডাগর আজ ওই বিধায়কদের অর্থের একটি অংশ দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন। কেজরীবালের অভিযোগ, “বিজেপি কী ভাবে সরকার গড়তে চাইছে তা ওই ফুটেজটি থেকে স্পষ্ট। টাকা ছড়িয়ে আপ বিধায়ককে দলে টানার চেষ্টা করা হচ্ছে।” তাঁর হুমকি, “এই ধাঁচের আরও ভিডিও ফুটেজ আমাদের কাছে রয়েছে। প্রয়োজনে একে একে তা সামনে আনা হবে।” দিল্লিতে নতুন করে নির্বাচনের প্রশ্নে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে আপ শিবির। আগামিকাল সেই মামলার শুনানি রয়েছে। সেই শুনানিতে ওই ভিডিওটি আদালতের সামনে প্রমাণ হিসেবে পেশ করা হবে বলে জানিয়েছেন কেজরীবাল। পেশ করা হবে নির্বাচন কমিশনেও।

স্বভাবতই ওই ভিডিও ফুটেজটি সামনে আনায় অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। অভিযুক্ত ডাগরের দাবি, “দীনেশ নিজে থেকেই আমার সঙ্গে এসে দেখা করে বিজেপিতে যোগদান করার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। আমার বাড়িতে টাকা সংক্রান্ত আলোচনা হয়নি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে রাজনীতি ছেড়ে দেব।” তিনি আপ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করারও হুমকি দিয়েছেন। দিল্লি বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি বিজেন্দ্র সিংহ জানান, “সরকার গঠন প্রক্রিয়ার সঙ্গে ডাগর কোনও ভাবেই যুক্ত নন। তাছাড়া আপ এই ধাঁচের অভিযোগ আগেও এনেছে।” বিজেন্দ্র এ কথা বললেও একই সঙ্গে এখন ডাগরের সঙ্গে দূরত্ব রচনা করার মরিয়া কৌশল নিয়েছে বিজেপি শিবির। বিজেন্দ্র বলেন, “বৈঠক হয়ে থাকলেও তা ডাগরের ব্যক্তিগত বিষয়। এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।”

সরকার গড়তে বিজেপির তৎপরতা যখন তুঙ্গে তখন এই স্টিং অপারেশন দলের পক্ষে একটি বড় ধাক্কা বলে ঘনিষ্ঠ মহলে স্বীকার করে নিচ্ছেন বিজেপি নেতারা। বিজেপি জানে, স্টিং অপারেশনের ফুটেজ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আদালতে প্রমাণ হিসাবে গ্রহণযোগ্য হয় না। কিন্তু গোটা ঘটনাটিতে নতুন করে বদনামের ভাগিদার হতে হল বলে মেনে নিচ্ছে দল। বিধায়ক কেনা-বেচা হলে দলের ভাবমূর্তি খারাপ হবে, এই যুক্তিতে নরেন্দ্র মোদী দিল্লিতে সরকার গড়তে বাড়তি তৎপরতা না দেখাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। দশ মাস পরে হলেও সেই অভিযোগের শিকার হতে হল মোদীর দলকে। বিজেপির এক নেতার কথায়, “বৈঠক যে হয়েছে তা তো আর এড়ানো যাচ্ছে না।”

কংগ্রেসের মুখপাত্র অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিরও প্রশ্ন, “দিল্লিতে বিধানসভা নির্বাচনের পর দশ মাস হাত গুটিয়ে বসে ছিল বিজেপি। কী এমন পরিবর্তন হয়ে গেল যে বিজেপি সরকার গড়তে এখন মরিয়া হয়ে উঠেছে! বিজেপি সাংবিধানিক ভাবে অনৈতিক এবং বেআইনি পথে হাঁটছে।” শুধু দিল্লি নয়, ছত্তীসগঢ়ে আজ এই ধরনের অভিযোগের মুখে পড়েছে বিজেপি। ছত্তীসগঢ়ে অন্তাগড় বিধানসভার উপনির্বাচন আসন্ন। কংগ্রেস নেতৃত্ব আজ মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন, ভয় দেখিয়ে কংগ্রেসের প্রার্থীকে মনোনয়ন প্রত্যাহারে বাধ্য করেছে বিজেপি সরকার।

aap bjp congress horse trading delhi assebmly
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy