Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Crime

চিন্ময়ানন্দকে সাত ঘণ্টা জেরা করল সিট, এখনও রুজু হয়নি ধর্ষণের মামলা

চিন্ময়ানন্দের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের গড়িমসিতে তিতিবিরক্ত হয়ে, সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানান মহিলা আইনজীবীদের একটি সংগঠন।

স্বামী চিন্ময়ানন্দ। —ফাইল চিত্র।

স্বামী চিন্ময়ানন্দ। —ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৬:২২
Share: Save:

ধর্ষণের অভিযোগের ভিত্তিতে টানা সাত ঘণ্টা স্বামী চিন্ময়ানন্দকে জেরা করল বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। তাঁর বিরুদ্ধে শুরুতে যৌন হেনস্থা এবং পরে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন উত্তরপ্রদেশের শাহজাহানপুরের এসএস ল’কলেজের এক ছাত্রী। তার পর দু’সপ্তাহ কেটে গেলেও, যোগী আদিত্যনাথ প্রশাসনের তরফে এখনও পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। এখনও পর্যন্ত ধর্ষণের মামলা দায়ের করেনি উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। তা নিয়ে চাপান উতোরের মধ্যেই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপির ওই প্রবীণ নেতাকে জেরা করা হল। তবে তাঁকে জিজ্ঞাসা করে কী তথ্য হাতে এসেছে, তা জানা যায়নি এখনও পর্যন্ত।

চিন্ময়ানন্দের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের গড়িমসিতে তিতিবিরক্ত হয়ে, সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানান মহিলা আইনজীবীদের একটি সংগঠন। তার পরেই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে যোগী আদিত্যনাথ সরকারকে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠনের নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। কয়েক দিন আগে চিন্ময়ানন্দকে ডেকে পাঠান তাঁরা। শারীরিক অসুস্থতার দোহাই দিয়ে প্রথমে হাজির হতে রাজি না হলেও, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শাহজাহানপুর পুলিশ লাইনে সিট-এর তদন্তকারীদের সামনে হাজির হন তিনি। সেখানে সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিট থেকে রাত ১টা পর্যন্ত তাঁকে জেরা করা হয়। ওই তরুণীর অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হয় তাঁকে।

শুধু তাই নয়, শাহজাহানপুরে যে ‘মুমুক্ষু’ আশ্রমে চিন্ময়ানন্দ তাঁকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ তুলেছেন ওই তরুণী, সেখানকার দু’টি ঘরেও তালা ঝুলিয়ে দেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। আশ্রমের ভিতরে চিন্ময়ানন্দের আবাস ‘দিব্য ধাম’-এ তাঁর শোওয়ার ঘরও বাইরে থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়। শুক্রবার ফরেন্সিক টিম নিয়ে গিয়ে ফের এক দফা সেখানে তল্লাশি চালানোর কথা তদন্তকারীদের।

আরও পড়ুন: যতটা মনে করা হয়েছিল, তার থেকেও খারাপ ভারতের আর্থিক বৃদ্ধি, বলল আইএমএফ​

স্বামী চিন্ময়ানন্দের পাশাপাশি, তাঁর পরিচালিত দুই কলেজের অধ্যক্ষকেও সিট জেরা করে বলে জানা গিয়েছে। পাঁচ ঘণ্টা ধরে জেরা করা হয় তাঁর আইনজীবী ওম সিংহকেও। অভিযোগকারিণী ও তাঁর পরিবার চিন্ময়ানন্দের কাছ থেকে ৫ কোটি টাকা দাবি করেছিলেন বলে এর আগে আদালতে জানিয়েছিলেন তিনি। সেই সংক্রান্ত প্রশ্ন করা হয় তাঁকে। জেরায় কী তথ্য উঠে এসেছে এখনও পর্যন্ত তা খোলসা করেন সিট। কিন্তু ধর্ষণের মতো গুরুতর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও, স্বামী চিন্ময়ানন্দের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হচ্ছে না কেন, বিভিন্ন মহল থেকে ইতিমধ্যেই তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

আরও পড়ুন: মোদীর মন্ত্রী, মাধ্যাকর্ষণ ও আইনস্টাইন!​

টানা একবছর ধরে চিন্ময়ানন্দ তাঁকে ধর্ষণ এবং ব্ল্যাকমেল করেছেন বলে অভিযোগ করেন ওই তরুণী। তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন তিনি। তা নিয়ে ইতিমধ্যেই দিল্লি পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে বয়ান দিয়েছেন তিনি। প্রমাণ হিসাবে গোপনে তোলা চিন্ময়ানন্দের একটি ভিডিয়ো রেকর্ডিংও তাদের হাতে তুলে দিয়েছেন। কিন্তু যে দু’টি চশমায় লাগানো ক্যামেরার সাহায্যে ওই ভিডিয়ো রেকর্ড করেন তিনি, আশ্চর্যজনক ভাবে সে গুলি তাঁর হস্টেলের ঘর থেকে গায়েব হয়ে গিয়েছে। শনিবার সিটের তদন্তকারীদের সঙ্গে হস্টেলের ওই ঘরে যান অভিযোগকারিণী ও তাঁর বাবা। তন্নতন্ন করে খুঁজেও সেওই চশমা দু’টির হদিস মেলেনি। তাঁরা এসে পৌঁছনোর আগে কেউ বা কারা সেটি সরিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ ওই তরুণীর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE