সর্বভারতীয় স্তরের মতো বিজেপির রাজ্য স্তরেও সভাপতি পদে পরিবর্তন আসন্ন। সূত্রের খবর, আজ পশ্চিমবঙ্গের সম্ভাব্য বিজেপি সভাপতি পদপ্রার্থীদের বিষয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেছেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। দেখা করেছেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গেও। বিজেপির এক শীর্ষস্থানীয় কেন্দ্রীয় নেতার দাবি, দিল্লির পরে আগামী দিনে পশ্চিমবঙ্গ ও পঞ্জাবে ক্ষমতা দখল করা বিজেপির প্রধান লক্ষ্য। সেই কাজে অনেকটাই এগিয়েছে দল।
আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গে ও ২০২৭ সালে পঞ্জাবে ভোট। আজ বিজেপির এক শীর্ষ নেতা বলেন, “ওই দুই রাজ্যই দেশের দুই সীমান্তে। তারাই দেশভাগের সব থেকে বড় শিকার। কিন্তু তা সত্ত্বেও ওই দু’টি রাজ্যে, বিশেষত পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির ক্ষমতায় না-আসার নেপথ্যে সমস্যা হল বাঙালি মানসিকতাকে বুঝতে না-পারা।” ওই নেতার ব্যাখ্যা, উত্তর বা পশ্চিম ভারতের মানসিকতা থেকে পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে বোঝা সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক ব্যবধান অন্যতম বড় কারণ। সেই ব্যবধান দূর না-করা পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির পক্ষে ভাল করা বেশ কঠিন।
বাংলার সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ভাষাগত ব্যবধানকেও দূরত্ব না-কমার একটি বড় কারণ বলে মনে করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। আর এক বাঙালি রাজ্য ত্রিপুরার দায়িত্ব নিয়ে সফল হয়েছিলেন সুনীল দেওধর। ওই নেতার কথায়, তিনি ত্রিপুরায় গিয়ে সবার আগে বাংলা ভাষা শিখেছিলেন, যাতে আমজনতার নাড়ি বোঝা সম্ভব হয়। বিজেপি নেতৃত্বের যদিও বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গ ও পঞ্জাবে দল তথা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মানসিকতার দিক থেকে কোথায় খামতি রয়েছে, সেই বিষয়গুলি ধীরে ধীরে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে। আগামী দিনে এই বিষয়গুলি মাথায় রেখে কাজ করা সম্ভব হলে পশ্চিমবঙ্গেও দিল্লির মতো ভাল ফল করা যাবে বলে মনে করছেন দলের শীর্ষ নেতারা।
আগামী এক মাসের মধ্যে দলের নতুন সর্বভারতীয় সভাপতি বেছে নিতে চলেছে বিজেপি। নতুন সভাপতির অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হবে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে হারিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতা দখল। রাজ্যেও সভাপতি পদে পরিবর্তন হতে চলেছে। সূত্রের মতে, সভাপতি হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন পুরুলিয়ার জনজাতি নেতা জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো, বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল, আরএসএস ঘনিষ্ঠ রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য। সূত্রের খবর, রাজ্যে বিজেপি সভাপতি কে হতে পারেন, তা নিয়ে আজ দিল্লিতে এসে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করেছেন শুভেন্দু। শীঘ্রই পশ্চিমবঙ্গ সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে উপরাষ্ট্রপতি ধনখড়ের। সূত্রের মতে, সেই সফর নিয়ে কথা বলতে শুভেন্দু আজ সংসদে ধনখড়ের সঙ্গেও দেখা করেন।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)