ফাইল চিত্র।
২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগেই বিজেপি আসন পুনর্বিন্যাস করে লোকসভার আসন সংখ্যা বাড়িয়ে নিতে পারে বলে কংগ্রেস আশঙ্কা করছে। জনসংখ্যা অনুযায়ী লোকসভায় সাংসদ সংখ্যাও বৃদ্ধি হওয়ার কথা। তা হলে হিন্দি বলয়ের রাজ্যগুলি থেকে লোকসভার আসন সংখ্যা অনেকটা বাড়বে। তুলনায় দক্ষিণের রাজ্যগুলির সাংসদ সংখ্যা তেমন বাড়বে না। ফলে গোটা প্রক্রিয়ায় বিজেপি লাভবান হতে পারে বলে কংগ্রেসের আশঙ্কা।
কংগ্রেসের লোকসভার সাংসদ মণীশ তিওয়ারির বক্তব্য, বিজেপি সাংসদেরাই তাঁকে ঘরোয়া আলোচনায় জানান, লোকসভার আসন সংখ্যা বাড়িয়ে এক হাজার বা তার বেশি করা হতে পারে। ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের আগেই। মণীশের বক্তব্য, ‘‘নতুন সংসদ ভবনে হাজার জন সাংসদের বসার ব্যবস্থা হচ্ছে। কিন্তু লোকসভার আসন সংখ্যা বাড়ানোর আগে সকলের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করা জরুরি।’’
সংবিধান অনুযায়ী, জনসংখ্যা অনুযায়ীই সাংসদ সংখ্যা ঠিক হওয়া উচিত। সাধারণত, প্রতি ১০ লক্ষ ভোটার পিছু এক জন করে সাংসদ থাকার কথা। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে প্রায় ৮৮ কোটি ভোটার ছিলেন। সেই হিসেবে লোকসভায় প্রায় ৮৮০ জন সাংসদ থাকার কথা। এখন লোকসভায় আসন সংখ্যা ৫৪৩ জন। তাৎপর্যপূর্ণ হল, নতুন সংসদ ভবনে ৮৮৮ আসনেরই লোকসভা কক্ষ তৈরি হচ্ছে। আসন পুনর্বিন্যাসে প্রতি ১০ লক্ষ ভোটারের জন্য এক জন সাংসদের নীতি বজায় রাখতে হলে, লোকসভা কেন্দ্রের সীমানা বদলাতে হবে। শেষ বার ১৯৭৬ সালে আসন পুনর্বিন্যাস হয়েছিল, ১৯৭১-এর জনগণনার ভিত্তিতে। তারপরে ফের আসন পুনর্বিন্যাসের ভাবনাচিন্তা করতে গিয়ে দেখা গিয়েছিল, হিন্দি বলয়ের রাজ্যগুলির তুলনায় দক্ষিণের কেরল, তামিলনাড়ুর মতো রাজ্য জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে ভাল কাজ করেছে। ফলে জনসংখ্যা অনুযায়ী লোকসভার আসন সংখ্যা ঠিক করতে হলে উত্তরপ্রদেশ, বিহারের মতো রাজ্যগুলি থেকে বেশি সাংসদ আসবে। দক্ষিণের রাজ্যগুলির ভাগ কমে যাবে। তা যাতে না হয়, সেই কারণে আসন পুনর্বিন্যাস স্থগিত রাখা হয়। মনে করা হয়েছিল, ২০২৬-এর মধ্যে সব রাজ্যে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার একই মাত্রায় চলে আসবে।
খাতায়-কলমে এখনও সরকারি অবস্থান হল, ২০২৬-এর পরেই লোকসভার আসন পুনর্বিন্যাস হবে। তবে বিজেপির একটি সূত্রের বক্তব্য, আগামী বছর উত্তরপ্রদেশের ভোটের চিত্র দেখে অন্য রকম কিছু ভাবা হতেই পারে। কংগ্রেসের রিসার্চ সেলের রিপোর্ট অনুযায়ী, লোকসভার আসন সংখ্যা ৫৪৩ থেকে বেড়ে ১২০০-তে চলে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে উত্তরপ্রদেশের সাংসদ সংখ্যা ৮০ থেকে বেড়ে হবে ১৯৩। বিহারের ৪০ থেকে ৯৪, মধ্যপ্রদেশের ২৯ থেকে ৬৮টি। পশ্চিমবঙ্গের লোকসভা আসন ৪২ থেকে বেড়ে হবে ৯২। মনীশের মতে, এই হিসেবে লোকসভায় প্রতিনিধিত্বের মাপকাঠিতে তামিলনাড়ু সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কংগ্রেসের তামিলনাড়ুর সাংসদ কার্তি চিদম্বরমের বক্তব্য, ‘‘জনসংখ্যার ভিত্তিতেই লোকসভার আসন সংখ্যা ঠিক হলে, দক্ষিণের রাজ্যগুলির লোকসভায় প্রতিনিধিত্ব আরও কমবে। তা মেনে নেওয়া যায় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy