সংসদে বক্তৃতা মহুয়া মৈত্রের। ফাইল চিত্র
সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সম্পর্কে বক্তব্যের জেরে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে পারে বিজেপি। বুধবার কৃষ্ণনগরের সাংসদের বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস আনার জন্য আবেদন করেছেন বিজেপি সাংসদ পিপি চৌধুরী। এমনটাই জানা গিয়েছে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সূত্রে। প্রসঙ্গত ওই টেলিভিশন চ্যানেলটি আগে দাবি করেছিল মহুয়ার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করতে নারাজ মোদী সরকার।
সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-কে নিয়ে মন্তব্যের জেরে মহুয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপের ইঙ্গিত সোমবারই দিয়েছিলেন সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী। তিনি বলেন, ‘‘এ ভাবে রাম মন্দির রায়, প্রধান বিচারপতি এবং অন্যান্য প্রসঙ্গ তুলে ধরা গুরুতর ব্যাপার। আমরা উপযুক্ত পদক্ষেপ করার কথা ভাবছি।’’ যদিও,পরবর্তী কালে সেই সম্ভাবনা নেই বলে দাবি করেছিল একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল। কিন্তু জোশীর সেই ইঙ্গিত বাস্তবে পরিণত হতে চলেছে বলেই বিজেপি সূত্রে খবর। মহুয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপের জন্য প্রাক্তন কেন্দ্রীয় আইন প্রতিমন্ত্রী তথা রাজস্থানের বিজেপি সাংসদ পিপি চৌধুরী আবেদন করেছেন বলে জানা গিয়েছে।
বিধি অনুযায়ী, সংসদে বিতর্কের সময় প্রতিটি সদস্যকে সুপ্রিম কোর্ট এবং হাইকোর্টের বিচারপতিদের সম্মানরক্ষার বিষয়টি স্মরণে রাখতে হবে। পিপি চৌধুরীর মতে, মহুয়া ওই নিয়ম ভেঙেছেন। যদিও নিজের বক্তব্যে কোথাও রঞ্জন গগৈয়ের নাম উল্লেখ করেননি কৃষ্ণনগরের সাংসদ। তবে মহুয়া যে তাঁকেই ইঙ্গিত করছেন তা-ও স্পষ্ট। তবে সূত্রের মতে, সংসদের বিধি বলছে, বক্তৃতার সময় বর্তমান বিচারপতিদের সম্মানরক্ষার বিষয়টি মাথায় রাখার কথা। অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ক্ষেত্রে ওই নিয়ম প্রযোজ্য হবে কি না সেই প্রশ্নও উঠছে।
সংসদে কী বলেছিলেন মহুয়া? বাজেট অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর আলোচনার সময় মহুয়া উত্থাপন করেন দেশের বিচারব্যবস্থার প্রসঙ্গ। পরে টুইটারে মহুয়া লেখেন, ‘দেশের বিচারব্যবস্থা পবিত্র নেই। যে দিন শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি নিজেই নিজের বিরুদ্ধে ওঠা যৌন হেনস্থার অভিযোগের বিচার করেছেন, সেই দিন থেকে ভারতীয় বিচার ব্যবস্থার পবিত্রতা নষ্ট হয়েছে। নিজেকে দোষমুক্ত ঘোষণা করা এবং অবসর নেওয়ার তিন মাসের মধ্যে রাজ্যসভার সাংসদ হিসাবে নিজের মনোনয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, পেয়েছেন জেড ক্যাটেগরির নিরাপত্তা’।
আর তৃণমূল সাংসদের এই বক্তব্য ঘিরেই উত্তাল লোকসভা। অবশ্য এখানেই থামেননি মহুয়া। ‘বিপদ’ আঁচ করেও, টুইটে একের পর এক তোপ দেগে গিয়েছেন তিনি। কখনও লিখেছেন, দেশে ‘অঘোষিত জরুরি অবস্থা চলছে’। আবার কখনও ঠাট্টার সুরে পোস্ট করেছেন, ‘সত্যি কথা বলার জন্য আমার বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়, তাহলে নিজেকে সৌভাগ্যবান বলে মনে করব’। যা নিয়ে টুইটারে পাল্টা আক্রমণ করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা আসানসোলের বিজে্পি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়-ও। ইতিমধ্যেই সংসদের কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে মহুয়ার ওই বক্তব্য।
মহুয়ার বক্তৃতায় সংসদে ঝড় উঠলেও, মহুয়ার বক্তৃতাকে ‘সেরা’ বলে টুইট করেছেন অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু। মহুয়ার বক্তব্য নিয়ে বিজেপি সাংসদরা প্রতিবাদ জানালেও, তা নিয়ে বুধবার একটি শব্দও খরচ করেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বরং সব মহিলা সাংসদকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy