বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনের নামে যোগ্য ভোটারদের নাম বাদ যাওয়ার অভিযোগে দেশ উত্তপ্ত। এই আবহে বিজেপি নেতৃত্ব অভিযোগ তুললেন, প্রায় সাড়ে চার দশক আগে সনিয়া গান্ধী অবৈধ ভাবে ভোটার তালিকায় নাম তুলেছিলেন।
বিজেপির আইটি শাখার প্রধান অমিত মালবীয়ের দাবি, দেশের নাগরিক হওয়ার আগেই সনিয়া গান্ধীর নাম ভোটার তালিকায় উঠে গিয়েছিল। ১৯৮০ সালের ভোটার তালিকার একটি ছবি দেখিয়ে অমিতের দাবি, সে সময়ে সনিয়া নাগরিক হননি। কিন্তু ভোটার তালিকায় তাঁর নাম ছিল। শুধু সনিয়াই নন, রাহুল গান্ধী থেকে শুরু করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ভোট চুরি থেকে অনুপ্রবেশকারীদের সমর্থনে সুর চড়ানোর অভিযোগ এনে তীব্র সমালোচনা করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। রাহুল-প্রিয়ঙ্কা, অভিষেকের মতো ছ’জন প্রধান বিরোধী নেতা ভুয়ো ভোটারের সমর্থনে লোকসভা ভোটে জিতে এসেছেন বলে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি।
বিজেপি সাংসদ অনুরাগ ঠাকুরের দাবি, রাহুলের রায়বরেলী কেন্দ্রে ২ লক্ষ, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রে ২.৬ লক্ষ সন্দেহজনক ভোটার রয়েছেন। কংগ্রেসের পাল্টা বক্তব্য, ভোট চুরির অভিযোগ তো এত দিন বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ নেতৃত্ব করে আসছিলেন, এখন সেই দাবিতে সুরমেলাল বিজেপিও!
তৃণমূল সাংসদ দোলা সেনের বক্তব্য, বিজেপি এত গুরুত্বপূর্ণ নয় যে কিছু বললেই উত্তর দিতে হবে। যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা কুণাল ঘোষ কলকাতায় এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘অভিষেকের কেন্দ্র নিয়ে এত অভিযোগ থাকলে পুনর্নির্বাচনের দাবি তুলুক না বিজেপি। প্রধানমন্ত্রীর কেন্দ্র নিয়েও তো অভিযোগ রয়েছে।’’
আজ অভিষেকের কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারে ভোটের আগে হওয়া জনবিন্যাসের পরিবর্তন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনুরাগ। তাঁর অভিযোগ, ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রে গত ৪ বছরে প্রায় ১৫ শতাংশ ভোট বৃদ্ধি হয়েছে। অনুরাগের প্রশ্ন, তা হলে কি ভুয়ো ভোটারের সাহায্য নিয়ে জিতেছেন অভিষেক?’’ প্রশ্ন তুলেছেন মমতাকে নিয়েও। তাঁর বক্তব্য, ‘‘২০০৫ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনুপ্রবেশকারী প্রশ্নে লোকসভায় হইচই বাধিয়েছিলেন। স্পিকারের উদ্দেশে কাগজ ছুড়েছিলেন।’’ প্রিয়ঙ্কা, অখিলেশ যাদব, অখিলেশ-পত্নী ডিম্পলের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ করে অনুরাগের প্রশ্ন, ‘এই ভোট চুরির জন্য ওই বিরোধী নেতারা কিইস্তফা দেবেন?’’
কংগ্রেসের নেতা পবন খেরা বলেন, ‘‘অনুরাগ বা বিজেপি ভুয়ো ভোটারের যে প্রশ্ন তুলেছে, আমরাও তা নিয়ে সরব হয়েছি।’’ একই সঙ্গে কংগ্রেসের প্রশ্ন, বিজেপি নেতারা কী ভাবে ওই কেন্দ্রগুলির বিস্তারিত তথ্য পেলেন? পবনের মতে, ‘‘বোঝা যাচ্ছে, বিজেপির সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের আঁতাঁত রয়েছে।... বিজেপির মতে তো ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন ভুয়ো ভোটারের ভিত্তিতে হয়েছে। তা হলে ওই নির্বাচনকে অবৈধ ঘোষণা করে খারিজ করা হোক।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)