বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি কে হবেন, তা বছরের গোড়াতেই স্থির করে ফেলেছিলেন বিজেপি এবং আরএসএস নেতৃত্ব। কিন্তু শেষবেলায় একাংশের আপত্তিতে ভেস্তে যায় সেই ঘোষণা। তার পরে আরও দু’বার এই নিয়ে বৈঠক হলেও, রফাসূত্র পাওয়া যায়নি। শেষ পর্যন্ত নতুন মুখ বাছতে আজ এবং কাল ফের বৈঠকে বসছে উভয় শিবির। রফাসূত্র না পাওয়া গেলে বিহার বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত জেপি নড্ডাকেই সভাপতি হিসেবে রেখে দেওয়ার কথা ভাবছে দল।
গত লোকসভার আগেই সভাপতি হিসেবে প্রথম তিন বছরের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল জেপি নড্ডার। কিন্তু নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে তাঁকে দায়িত্বে রেখে দেওয়া হয়। ভোটের পরেই নড্ডার বিকল্প মুখ খোঁজা শুরু করে বিজেপি। নড্ডার পরে যিনি দায়িত্ব পাবেন, মূলত তাঁরই নেতৃত্বে আগামী লোকসভা নির্বাচনে লড়তে চলেছে বিজেপি। কারণ, নরেন্দ্র মোদী তৃতীয় বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের পরে যদি সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ান, তবে ২০২৯-এ মোদী পরবর্তী জমানায় প্রথম লোকসভা নির্বাচন হবে। সেই কারণে আরএসএস গোড়া থেকেই এমন ব্যক্তিকে বিজেপি সভাপতি করার পক্ষপাতী, যিনি সাংগঠনিক ভাবে দলকে শক্তিশালী করতে পারবেন। বিশেষ ব্যক্তিত্বের টানের পরিবর্তে সাংগঠনিক শক্তির জোরে যাতে বিজেপি ক্ষমতায় আসতে পারে, সেটাই লক্ষ্য আরএসএস নেতৃত্বের।
সূত্রের মতে, সভাপতি বেছে নেওয়ার প্রশ্নে গত ১২ জানুয়ারি উভয় দলের শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে একটি বৈঠক হয়। যাতে নতুন সভাপতির নাম কার্যত চূড়ান্ত হয়ে যায়। ঠিক হয় মকর সংক্রান্তির পরে ওই নাম ঘোষণা করা হবে। কিন্তু শেষবেলায় এক পক্ষের আপত্তিতে ওই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। তারপরে আরও দু’টি বৈঠক হলেও সমাধানসূত্র অধরাই থাকে।
এই আবহে দিল্লিতে আগামিকাল থেকে শুরু হচ্ছে আরএসএসের বৈঠক। আরএসএসের শীর্ষ নেতারা গত ক’দিন ধরেই দিল্লিতে। সূত্রের মতে, আজ নতুন সভাপতির নাম নিয়ে দু’পক্ষের বৈঠক হয়েছে। আগামিকালও তা হওয়ার কথা। সূত্রের মতে, আজকের বৈঠকে বিজেপির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন জে পি নড্ডা। যদিও সভাপতি বেছে নেওয়ার প্রশ্নে বিজেপি-আরএসএস নেতৃত্বের কোনও আলোচনা হয়েছে, সেই তথ্য সাংবাদিক সম্মেলনে অস্বীকার করেন আরএসএসের মুখপাত্র সুনীল অম্বেকর। তিনি বলেন, ‘‘এমন কোনও চর্চা এখানে হয়নি।’’
সব মিলিয়ে সভাপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া যত দীর্ঘ হচ্ছে, তত অস্বস্তি বাড়ছে বিজেপি নেতৃত্বের। কারণ, দ্রুত সভাপতি বেছে নিয়ে বিহার নির্বাচনের জন্য ঝাঁপাতে চাইছেন তাঁরা। দলের এক নেতার ব্যাখ্যা, ‘‘নতুন সভাপতি এলে দলের অধিকাংশ কমিটি বদলে যাবে। নতুন মুখ দায়িত্ব পাবে। তাঁদের দায়িত্ব বুঝে নিয়ে কাজ শুরু করা বেশ সময়সাপেক্ষ। তাই ঠিক হয়েছে, এ যাত্রায় ঐকমত্য না হলে একেবারে বিহার নির্বাচনের পরে সভাপতি বাছাই প্রক্রিয়া আবার শুরু করা হবে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)