বৃহন্মুম্বই পুরসভায় কংগ্রেসের হাতে তামাক খেলে শিবসেনাকে কেন্দ্র ও রাজ্যের জোট সরকার ছাড়তে হবে। উদ্ধব ঠাকরের মতিগতি দেখে তাঁর উপর পাল্টা চাপ বাড়াতে এমনই হুঁশিয়ারি দিল বিজেপি।
গত কালই দলের সভায় উদ্ধব ইঙ্গিত দিয়েছেন, বিজেপির সঙ্গে আর কোনও গাঁটছড়া নয়। পুরবোর্ড গড়ার জন্য কংগ্রেসের সঙ্গে ঘরোয়া ভাবে আলোচনা শুরু করেছেন তিনি। তার পরেই শিবসেনার শীর্ষনেতাকে বিজেপি জানিয়েছে— বৃহন্মুম্বই পুরসভা দখলে রাখতে কংগ্রেসের সমর্থন নিলে তার পরিণতিও ভোগ করতে হবে। কেন্দ্র ও রাজ্যের জোট সরকার থেকে সরতে হবে তাঁদের। সে ক্ষেত্রে মহারাষ্ট্র বিধানসভার অন্তর্বর্তী নির্বাচনের পরিস্থিতি তৈরি হলেও বিজেপি পিছপা হবে না। উদ্ধবের অস্বস্তি বাড়িয়ে আরএসএসের নেতা এম জি বৈদ্য আজ মন্তব্য করেছেন, ‘‘বিজেপি ও শিবসেনার উচিত বৃহন্মুম্বই পুরসভার মেয়রের পদ ভাগাভাগি করে নেওয়া। বেশি আসন পাওয়ায় শিবসেনা প্রথম আড়াই বছর মেয়র পদে থাকুক।’’ উদ্ধব এখনও পর্যন্ত এই সূত্র মানতে রাজি নন।
মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেতা নিতিন গডকড়ী বলেন, ‘‘কংগ্রেস মহারাষ্ট্রের সরকার ভাঙতে চাইছে। আসলে ওরা ভাবছে মহারাষ্ট্রে ভোট হলে কংগ্রেস-এনসিপি জিতে আসবে।’’ গডকড়ী-ঘনিষ্ঠ এক নেতার মতে, উদ্ধব ভুলে যাচ্ছেন, কংগ্রেসের হাতে তামাক খেলে তাদের উপরেই নির্ভর করতে হবে শিবসেনাকে। কংগ্রেসকে শুধু ডেপুটি মেয়র পদ ছেড়ে দেওয়াই নয়, ক্ষমতাধর স্থায়ী কমিটির রাশও তাদের হাতে যাবে। এই কমিটির ওপর বিজেপির আসল নজর।
মহারাষ্ট্রের কংগ্রেস নেতা সঞ্জয় নিরুপম অবশ্য জানিয়েছেন, শিবসেনাকে তাঁরা সমর্থন করবেন না। এআইসিসি-রও তাই নির্দেশ। কিন্তু কংগ্রেস-এনসিপি-সমাজবাদী পার্টি যদি সরাসরি সমর্থন না-ও করে কিংবা এই জোট যদি নিজেদের মেয়র প্রার্থী দেয়— সে ক্ষেত্রেও উদ্ধবেরই লাভ। অথবা এরা মুখে বিরোধিতা করেও ভোটাভুটির সময়ে কক্ষত্যাগ করলে শিবসেনারই লাভ হবে। উদ্ধব তেমনটাই চাইছেন। কারণ, এই মুহূর্তে পাঁচ জন নির্দলকে নিয়ে উদ্ধবের ঝুলিতে সংখ্যা সব থেকে বেশি, ৮৯। শিবসেনার একটি সূত্র বলছে, এত দিন পরে নিজের জোরে উদ্ধব মেয়র জেতাতে পারছেন। আর শিবসেনা সমর্থন তুলে নিলে মহারাষ্ট্রে সরকারই পড়ে যাবে।
আরও পড়ুন:
সাম্প্রদায়িক বৈষম্য হয়নি, মেরুকরণ নিয়ে মোদীকে পাল্টা তোপ অখিলেশের
‘পদ্মবিভূষণ’ পাওয়ার পরে এনসিপি নেতা শরদ পওয়ার মহারাষ্ট্রের বিজেপি সরকারকে সমর্থনের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বটে, কিন্তু তিনি এখন অন্য সুরে কথা বলছেন। পওয়ার আজ জানিয়েছেন, মহারাষ্ট্রের যে পুরসভা ও জেলা পরিষদগুলিতে ভোট হয়েছে, এনসিপি সেখানে কংগ্রেসের হাত ধরবে। তিনি দাবি করেছেন, কংগ্রেস-এনসিপি জোট হলে যে ২৫টির মধ্যে ১৭-১৮টি জেলা পরিষদে ক্ষমতায় আসা সম্ভব। পওয়ার বলেন— মুখে যাই বলুক, তিনি মনে করেন না বিজেপি ও শিবসেনা কেউ কারও হাত ছাড়বে।
বিজেপির পাল্টা দাবি, ভোটেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, কংগ্রেস-এনসিপি রাজ্যে ধুয়েমুছে গিয়েছে। শিবসেনা শুধু মুম্বই ও ঠাণের দলে পর্যবসিত হয়েছে। ফলে এখনই বিধানসভা ভোট হলে বিজেপিরই ফায়দা।
উদ্ধব না ফডণবীস— চাপ ও পাল্টা চাপের রাজনীতিতে কে প্রথম ঝোঁকেন, সেটাই এখন দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy