এয়ার ইন্ডিয়ার দুর্ঘটনাগ্রস্ত সেই বিমানের ব্ল্যাকবক্স মিলেছে। অহমদাবাদের মেঘানিনগরে চিকিৎসকদের যে হস্টেলে বিমানটি ভেঙে পড়েছিল, তার ছাদ থেকে শুক্রবার উদ্ধার হয়েছে সেই ব্ল্যাকবক্স। এমনটাই বলছে কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের একটি সূত্র। এই ব্ল্যাকবক্সের মধ্যে বিমানের প্রয়োজনীয় তথ্য-বন্দি থাকে। সেই নথি, তথ্য বিশ্লেষণ করে দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ জানা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিমানে দু’টি ব্ল্যাকবক্স থাকে। এয়ার ইন্ডিয়ার দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটির একটি ব্ল্যাকবক্স উদ্ধার করা হয়েছে বলে খবর।
অহমদাবাদ দুর্ঘটনার তদন্ত করছে এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (এএআইবি)। ওই তদন্তকারী সংস্থার একটি দল এবং গুজরাত সরকারের ৪০ জন আধিকারিক শুক্রবার ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে ব্ল্যাকবক্সটি উদ্ধার করেছেন বলে জানা গিয়েছে। এই ব্ল্যাকবক্সের নথি ঘেঁটে জানা যেতে পারে, ঠিক কী কারণে বিমানটির ওই পরিণতি হয়েছে।
অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, নাম ব্ল্যাকবক্স হলেও এই যন্ত্রের রং গাঢ় কমলা। বিমান ধ্বংস হয়ে গেলেও এটি নষ্ট হয় না। জলে পড়লে, আগুনে পুড়ে গেলেও বছরের পর বছর অক্ষত থাকে। এর মধ্যে বিমানের গতি, উচ্চতা, ইঞ্জিন কী ভাবে কাজ করছে, সেই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য থাকে। ককপিটে কী কথাবার্তা চলছে, এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে পাইলটের কী কথা হয়েছে, তা-ও রেকর্ড করা থাকে এই ব্ল্যাকবক্সে। এ হেন তথ্য অক্ষত রাখতে ব্ল্যাকবক্স তৈরি করা হয় স্টিল এবং টাইটেনিয়াম দিয়ে। এই যন্ত্রের দু’টি অংশ থাকে— এক, ডিজিটাল ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার (ডিএফডিআর)। দুই, ককপিট ভয়েস রেকর্ডার (সিভিআর)। বিমানের প্রযুক্তিগত তথ্য ধরে রাখে ডিএফডিআর। ককপিটের সব কথোপকথন ধরে রাখা থাকে সিভিআরে। বিপদের সময় পাইলট কার সঙ্গে কী কথা বললেন, সবই রেকর্ড থাকে সিভিআরে। পরে তা থেকেই জানা যায়, দুর্ঘটনার মুহূর্তে ঠিক কী ঘটেছিল।
আরও পড়ুন:
বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা ৩৮ মিনিটে অহমদাবাদের সর্দার বল্লভভাই পটেল বিমানবন্দর থেকে উড়েছিল এয়ার ইন্ডিয়ার লন্ডনের গ্যাটউইকগামী বিমান। ওড়ার পাঁচ মিনিটের মাথায় অহমদাবাদের মেঘানিনগরে ভেঙে পড়েছিল সেটি। বিমানে সওয়ার ২৪২ জনের মধ্যে ২৪১ জনেরই মৃত্যু হয়েছে। এক জন যাত্রী বেঁচে গিয়েছেন। বিশ্বাসকুমার রমেশ নামে ওই যাত্রী ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক। বিমানটি বসতি এলাকায় ভেঙে পড়েছে। সে কারণে ওই এলাকাতেও অনেকেই হতাহত হয়েছেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন পর্যন্ত এই দুর্ঘটনায় ২৪১ জন সওয়ারী-সহ ২৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। মেঘানিনগরে চিকিৎসকদের হস্টেলে বিমানটি ভেঙে পড়েছে। সেই হস্টেলে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অনেকে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনায় ওই এলাকায় আহত প্রায় ৬০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। শুক্রবার হাসপাতালে তাঁদের দেখতে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।