চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে যৌন হেনস্থার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল গৃহশিক্ষককে। আট বছর আগের সেই ঘটনায় তাঁকে জামিন দিল বম্বে হাই কোর্ট। গৃহশিক্ষকের বিরুদ্ধে উপযুক্ত প্রমাণ পাওয়া যায়নি। নির্যাতিতা বালিকার বয়ানেও অসঙ্গতি ছিল। আদালতের পর্যবেক্ষণ, পুলিশের কাছে কী বলতে হবে, তা শিশুটিকে শিখিয়ে দিয়ে থাকতে পারেন তাঁর মা। পরবর্তী শুনানির দিন এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন বিচারপতি।
২০১৭ সালের ১৫ মার্চের ঘটনা। নির্যাতিতা সেই সময়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত। অন্যান্য দিনের মতো সে দিনও নির্দিষ্ট সময়ে সে গৃহশিক্ষকের বাড়িতে পড়তে গিয়েছিল। অভিযোগ, শিক্ষক তাঁকে একটি ঘরে ডেকে নেন এবং বই পড়তে দেন। তার পর ছাত্রীর বুকে হাত দেন। ভয় পেয়ে বালিকা তখনই পাশের ঘরে চলে গিয়েছিল। সেখানে গৃহশিক্ষকের স্ত্রী অন্য একটি ক্লাস নিচ্ছিলেন।
আরও পড়ুন:
ঘটনার চার দিন পরে ১৯ মার্চ গৃহশিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীর মা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পকসো আইনে মামলা রুজু করে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় ওই শিক্ষককে। ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী তাঁর পাঁচ বছরের কারাবাসের সাজা হয়। ছাত্রীর মা নিজেও পুলিশ কনস্টেবল। অভিযুক্তের আইনজীবী আদালতে জানান, পুরো ঘটনাটি সাজানো। কয়েক দিন পড়তে না যাওয়ায় শিক্ষক তাকে বকাঝকা করেছিলেন। সেই কারণে তাঁর বিরুদ্ধে এই চক্রান্ত করা হয়েছে।
বম্বে হাই কোর্টের বিচারপতি সারাং ভি কোটওয়ালের পর্যবেক্ষণ, নাবালিকাকে কিছু শিখিয়ে দেওয়া হয়ে থাকতে পারে। সে নিজেই জানিয়েছে, আদালতে কী ভাবে কথা বলতে হবে, তা তার মা বলে দিয়েছিলেন। তা ছাড়া, মূল ঘটনার পরের দিন, ১৬ মার্চ আবার ওই শিক্ষকের কাছেই পড়তে গিয়েছিল বলে জানিয়েছে নাবালিকা। আদালত মনে করেছে, এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। তার পরের দিন, ১৭ মার্চ পড়তে গিয়েছিল কি না, নাবালিকা তা মনে করতে পারেনি। বয়ানে নানাবিধ অসঙ্গতির কারণেই অভিযুক্তকে জামিন দেয় আদালত। ২৫ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে গৃহশিক্ষককে জামিন দেওয়া হয়েছে।
নির্যাতিতার পরিবারের বক্তব্য, ঘটনার সময়ে ছাত্রীর বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর। সে এই ধরনের বিষয়ে কী ভাবে মিথ্যাচার করতে পারে? প্রশ্ন তুলেছে পরিবার। গৃহশিক্ষকের জামিনের বিরোধিতা করেছিল তারা। তবে তা মানেননি বিচারপতি।
জামিন দিতে গিয়ে অভিযুক্ত গৃহশিক্ষকের বয়সের কথাও বিবেচনা করেছে আদালত। তাঁর বয়স এখন ৬০ বছর। এই মামলার নিষ্পত্তি হতে সময় লাগতে পারে। তাই তাঁর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে।