আর কয়েক দিন পরে পরিবারে নতুন সদস্য আসবে। এমন খবরে খুশি হওয়ারই কথা ছিল পরিবারের সকলের। কিন্তু হল ঠিক উল্টো। গর্ভস্থ সন্তানকে নষ্ট করার জন্য আদালতে গেলেন অন্তঃসত্ত্বা। আবেদনকারী ক্যানসার আক্রান্ত জানার পরে গর্ভাবস্থার ২৪ সপ্তাহ পরেও গর্ভপাতের অনুমতি দিল বম্বে হাই কোর্ট।
কিছু দিন আগে স্ত্রীর গর্ভস্থ সন্তান নষ্টের জন্য আদালতে আর্জি জানান এক যুবক। আদালতে ওই মহিলা জানান, তিনি স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত। তাঁর শরীরের কথা ভেবে গর্ভপাতের নির্দেশ দিক আদালত। দীর্ঘ সওয়ালের পর ওই অনুমতি দিয়েছে হাই কোর্ট। সেই সঙ্গে নির্দেশ, ওই মহিলার জন্য আলাদা করে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করতে হবে।
বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের বিচারপতি কমল খাতার এজলাসে উঠেছিল সংশ্লিষ্ট মামলা। আদালতের পর্যবেক্ষণ, আবেদনকারী মহিলার বয়স ৪০ বছর। এই বয়সে সন্তানধারণের পর তাকে নষ্ট করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত কঠিন। কিন্তু মায়ের ভালর জন্য এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। তাই ২৪ সপ্তাহ পরেও অন্তঃসত্ত্বার গর্ভপাতের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, ২০২০ সালে স্টেজ থ্রি ব্রেস্ট ক্যানসার ধরা পড়ে ওই মহিলার। আট বার কেমোথেরাপি নেওয়ার পরে খানিক সুস্থ হন। ২০২১ সালের এপ্রিলে শেষ হয় চিকিৎসা। চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, চিকিৎসার প্রভাব পড়তে পারে ভবিষ্যতে। সাবধানে থাকতে হবে।
আরও পড়ুন:
দীর্ঘ চিকিৎসার পরে মহিলার বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা হয়। ওজন কমে যায় তাঁর। মাঝেমধ্যে ঋতুস্রাব অনিয়মিত হতে থাকে। তবে ২০২৪ সালের নভেম্বরে ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অন্তঃসত্ত্বা পরীক্ষা করেন তিনি। রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছিল। কিন্তু কিছু দিন পরে পেটের তীব্র যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় মহিলাকে। এপ্রিলে সোনোগ্রাফিতে জানা যায়, তিনি ২৩ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা। শুধু তাই নয়, আবার ক্যানসারের লক্ষণ দেখা যায় তাঁর শরীরে। অন্য দিকে, ২০ সপ্তাহ পার হয়ে যাওয়ার গর্ভস্থ সন্তান নষ্ট করতে হলে আদালতের অনুমোদন প্রয়োজন। স্বামী-স্ত্রী আবেদন করেন বম্বে হাই কোর্টে। মামলাকারীর আইনজীবী আদালতে বলেন, তাঁর মক্কেল শারীরিক এবং মানসিক ভাবে মা হওয়ার মতো অবস্থায় নেই। স্বামী-স্ত্রী বাবা-মা হওয়ার মানসিক প্রস্তুতিও নেননি। ক্যানসারের চিকিৎসায় জলের মতো টাকা ব্যয় হয়েছে। এখন নতুন করে ব্যয়ের মতো সঙ্গতি নেই দম্পতির। মহিলার স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে গর্ভপাতের অনুমোদন দিক আদালত। সওয়াল শোনার পর আদালত জানিয়েছে, একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করতে হবে। সেখানে মনোবিদকেও রাখতে হবে।