গ্রেফতার হয়েছিলেন প্রায় সাত বছর আগে। গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ উঠেছিল ব্রহ্মস এরোস্পেসের প্রাক্তন বিজ্ঞানী নিশান্ত আগরওয়ালের বিরুদ্ধে। অভিযোগ ছিল, সংবেদনশীল তথ্য তিনি পাকিস্তানের কাছে পাচার করেছেন। তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল নাগপুরের আদালত। গ্রেফতারির এত বছর পেরিয়ে শেষে অবশেষে বম্বে হাই কোর্টের নির্দেশে জেলমুক্তি হতে চলেছে সেই বিজ্ঞানীর।
২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে গ্রেফতার হন নিশান্ত। গত বছর নাগপুরের আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে। পাকিস্তানি গুপ্তচরদের কাছে ক্ষেপণাস্ত্র সংক্রান্ত সংবেদনশীল তথ্য পাচারের অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় তাঁর। পরে ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন নিশান্ত। সোমবার বম্বে হাই কোর্টের নাগপুর বেঞ্চ এই মামলায় রায় দিয়েছে। ব্রহ্মস এরোস্পেসের প্রাক্তন বিজ্ঞানীর বিরুদ্ধে ওঠা গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে বিচারপতি অনিল কিলর এবং বিচারপতি প্রবীন পাটিলের ডিভিশন বেঞ্চ।
হাই কোর্ট জানিয়েছে, নিশান্ত বেশ কিছু পদ্ধতিগত নিয়মভঙ্গ করেছেন। তবে তিনি যে কোনও সংবেদনশীল তথ্য সত্যিই পাকিস্তানের কাছে পাচার করেছেন— তা প্রমাণ করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ। সেই কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে আদালত। তবে অফিশিয়াল সিক্রেট্স অ্যাক্ট (ওএসএ) এবং তথ্যপ্রযুক্তি আইনের নির্দিষ্ট ধারায় তাঁকে দোষীসাব্যস্ত করা হয়েছে। অনুমোদন ছাড়াই তিনি ব্যক্তিগত ডিভাইসে গোপন নথি রেখে দিয়েছিলেন। সেই কারণে ওএসএ-র নির্দিষ্ট ধারায় তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেছে হাই কোর্ট। সেই অভিযোগে তাঁকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে তিনি জেলে রয়েছেন। ছ’বছরেরও বেশি সময় ধরে জেলে রয়েছেন। ফলে তাঁর সাজা ইতিমধ্যে কাটিয়ে ফেলেছেন নিশান্ত।
আরও পড়ুন:
এই মামলায় সরকার পক্ষের দাবি ছিল, মধুচক্রে ফেঁসে গিয়েছিলেন নিশান্ত। মহিলাদের নামে ফেসবুকে ভুয়ো প্রোফাইল খুলে তাঁকে ফাঁদে ফেলেছিলেন পাকিস্তানি এজেন্টরা। নিশান্তের ল্যাপটপ থেকে ম্যালঅয়্যার মারফত ব্রহ্মসের সংবেদনশীল তথ্য বিদেশি সার্ভারে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ছিল সরকার পক্ষের। মহারাষ্ট্র পুলিশের এটিএস-এর দাবি, ‘নেহা শর্মা’, ‘পূজা রঞ্জন’, ‘সেজল কপূর’— এমন বিবিধ নামে সমাজমাধ্যমে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন পাকিস্তানের এজেন্টেরা। এমনই একটি অ্যাকাউন্ট থেকে যোগাযোগ করেই ফাঁদে ফেলা হয়েছিল নিশান্তকে। তবে হাই কোর্ট জানিয়েছে, এই দাবিগুলির সপক্ষে কোনও পোক্ত প্রমাণ আদালতে জমা পড়েনি।