ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (ইউপিএসসি) পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেওয়ার নাম করে ৬০ লক্ষ টাকা নেওয়ার অভিযোগে ধৃত এক ব্যক্তি। তাঁর সঙ্গীদের খোঁজে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে মুম্বইয়ে।
মুম্বইয়ের মালওয়ানিতে একটি হোটেলের মালিক ইরশাদ খান। ওই ব্যবসায়ীর পুত্র সাদ্দাম খান বাণিজ্য বিভাগে স্নাতক। এখন কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরির জন্য বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দিচ্ছেন। ইরশাদের দাবি, এর আগে চার বার ইউপিএসসি দিয়েছেন সাদ্দাম। কিন্তু চার বারই ব্যর্থ হয়েছেন। পঞ্চম বার কঠিন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন তিনি। কিন্তু ছেলের ‘কষ্ট’ আর দেখতে পারেননি। ঠিক এই সময়ে ইয়াকুব শেখের সঙ্গে তাঁর আলাপ। ইয়াকুব তাঁর হোটেলের নিয়মিত খদ্দের। সিআইডি অফিসার বলে তাঁকে চিনতেন ইরশাদ। হোটেল ব্যবসায়ীর দাবি, ইয়াকুব তাঁকে বলেছিলেন ছেলেকে ইউপিএসসি-তে পাশ করিয়ে দিতে পারেন। বড় বড় আধিকারিকের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ রয়েছে।
হাতে চাঁদ পাওয়ার মতো ইয়াকুবের শরণাপন্ন হন ইরশাদ। এর পর ইয়াকুব তাঁকে পরিচয় করিয়ে দেন বিজয় চৌধুরী নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে। বলেন, ওই ব্যক্তি টাকা নিয়ে ইউপিএসসি-র ফল এদিক-ওদিক করে দিতে পারেন। তবে মোটা টাকা খরচ করতে হবে। বিজয় আবার দু’-তিন জনকে ফোন করেন। ও পার থেকে কেউ নিজের পরিচয় দেন ইউপিএসসি-র মুখ্য আধিকারিক, কেউ জানান, তিনি দিল্লির পুলিশ কমিশনার। সব বিশ্বাস করেছিলেন হোটেল ব্যবসায়ী। ছেলেকে ইউপিএসসি পরীক্ষায় সফল দেখতে গিয়ে বিজয়দের ৬০ লক্ষ টাকা দেন তিনি।
আরও পড়ুন:
পুলিশের কাছে ইরশাদের দাবি, কয়েক দফায় টাকা দিয়েছেন তিনি। কখনও নগদ, কখনও ইউপিআই মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকা পাঠিয়েছেন বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে। ইউপিএসসি-র ফল বেরোয়। কিন্তু ছেলে আবার ব্যর্থ!
বিজয় এবং ইয়াকুবকে গিয়ে ধরেন ইরশাদ। দু’জনে তখন ইরশাদকে নানা অজুহাত দেন। এই ভাবে বেশ কিছু দিন কাটার পর শেষমেশ পুলিশের দ্বারস্থ হন হোটেল ব্যবসায়ী।
মুম্বই পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, ইয়াকুব, বিজয়েরা এ ভাবেই টাকা হাতান। তাঁরা এ ভাবে বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেওয়া, চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অনেকের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করেছেন। সম্প্রতি ইয়াকুব গ্রেফতার হয়েছেন। তাঁকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তবে বিজয় গা ঢাকা দিয়েছেন। তাঁর খোঁজ চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পাশাপাশি ওই হোটেল ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ করা হতে পারে বলে খবর।