Advertisement
২৬ মার্চ ২০২৩

মুফতে রান্নার গ্যাস, আট হাজার কোটির ভর্তুকি, গরিবের বন্ধু মোদী!

নিজেদের গরিব-দরদী প্রমাণ করতেই হবে। তাই আগামী লোকসভা ভোটের আগে গরিব পরিবারে নিখরচায় রান্নার গ্যাসের সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার রূপরেখা তৈরি করে ফেলল নরেন্দ্র মোদী সরকার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৬ ০৩:৩০
Share: Save:

নিজেদের গরিব-দরদী প্রমাণ করতেই হবে। তাই আগামী লোকসভা ভোটের আগে গরিব পরিবারে নিখরচায় রান্নার গ্যাসের সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার রূপরেখা তৈরি করে ফেলল নরেন্দ্র মোদী সরকার।

Advertisement

অরুণ জেটলি বাজেটেই ঘোষণা করেছিলেন, দারিদ্র সীমার নীচের পরিবারগুলির মহিলাদের নামে নিখরচায় রান্নার গ্যাসের সংযোগ দেবে সরকার। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আজ সিদ্ধান্ত হয়েছে, লোকসভা ভোটের আগে তিন বছরে ৫ কোটি দরিদ্র পরিবারকে নিখরচায় গ্যাসের সংযোগ দেওয়া হবে। বিপিএল পরিবারে রান্নার গ্যাসের সংযোগের জন্য এখন ১৬০০ টাকা দিতে হয়। এ বার বিনামূল্যে সেই সংযোগ মিলবে। কোন কোন পরিবার সুবিধা পাওয়ার যোগ্য, তা বিপিএল-তালিকার ভিত্তিতে রাজ্যের সঙ্গে তেল সংস্থাগুলির আলোচনায় ঠিক হবে।

‘প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা’ নামের এই প্রকল্পে মোদী সরকার তিন বছরে বরাদ্দ করবে ৮ হাজার কোটি। আগামী এক বছরে, অর্থাৎ ২০১৬-’১৭ অর্থবর্ষে দেড় কোটি পরিবারে রান্নার গ্যাস পৌঁছে দেওয়া হবে। বাজেটে এ জন্য ২০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেন, ‘‘এক ঘণ্টা কাঠকয়লার উনুন জ্বালানোর অর্থ ৪০০ সিগারেটের ধোঁয়া শরীরে প্রবেশ করা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-র রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতে এতে ৫ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এ জন্যই গ্রামের গরিব মহিলাদের কাছে রান্নার গ্যাস পৌঁছে দিতে চাই।’’

কিন্তু প্রশ্ন হল, রান্নার গ্যাসের সংযোগ নিখরচায় দিলেও গরিব পরিবারগুলি যে নিয়মিত সিলিন্ডার কেনার অর্থের সংস্থান করতে পারবে, তার নিশ্চয়তা কোথায়? জেটলির জবাব, ‘‘আর্থিক বৃদ্ধির সঙ্গে দারিদ্র সীমার নীচের পরিবারগুলির আয়ও বাড়ে। পাশাপাশি সরকার বিভিন্ন ধরনের নগদ ভর্তুকি সরাসরি তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে দিচ্ছে।’’ তবে তেল সংস্থাগুলির সূত্রের বক্তব্য, দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় রান্নার গ্যাস পৌঁছে দেওয়ার কাজে চ্যালেঞ্জ যথেষ্ট। এই লক্ষ্য পূরণে তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাকেই পরিকাঠামোয় অর্থ লগ্নি করতে হবে। রান্নার গ্যাসের আমদানি, পরিবহণ, সিলিন্ডারে গ্যাস ভরার পরিষেবার পরিকাঠামো তৈরি করতে হবে। সূত্রের খবর, ভারত পেট্রোলিয়াম পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়ায় রান্নার গ্যাসের আমদানির জন্য একটি টার্মিনাল তৈরি করবে। এর জন্য ব্যয় হবে ৮০০ কোটি টাকা। ৩৫ একর জমি অধিগ্রহণও হয়ে গিয়েছে। টার্মিনালটি তৈরি করতে তিন বছর লাগবে। সেখানে ১৫ হাজার টন আয়তনের দু’টি ট্যাঙ্ক তৈরি হবে। এইচপিসিএল-ও ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে পূর্বাঞ্চলে একটি টার্মিনাল তৈরি করবে। তৈরি হবে ৭ থেকে ১০টি নতুন

Advertisement

বটলিং প্ল্যান্ট। সব মিলিয়ে ব্যয় হবে ২ হাজার কোটি টাকা। ইন্ডিয়ান অয়েলও পারাদীপে ৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এলপিজি আমদানির ব্যবস্থা তৈরি করবে। এই কাজগুলি শেষ না হলে কী ভাবে সমস্ত গরিব পরিবারে রান্নার গ্যাস পৌঁছে দেওয়া যাবে, সেই প্রশ্ন উঠেছে। একই ভাবে নতুন ডিস্ট্রিবিউটরও নিয়োগ করতে হবে। পেট্রোলিয়াম মন্ত্রীর অবশ্য দাবি, এখন ১৩ হাজার ডিস্ট্রিবিউটর রয়েছেন। ১০ হাজার ডিস্ট্রিবিউটর নিয়োগ করা হবে।

তবে এখনও স্পষ্ট নয় গরিব পরিবারগুলিকে ১৪.২ কিলোগ্রামের সিলিন্ডারই দেওয়া হবে নাকি ছোট মাপের সিলিন্ডার সরবরাহ করা হবে। পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক সূত্রের ইঙ্গিত, ছোট সিলিন্ডার সরবরাহেই জোর দেওয়া হবে। কারণ গ্রামে এখন যারা রান্নার গ্যাস ব্যবহার করেন, তাদের ৯১ শতাংশই কাঠ-কয়লা-ঘুঁটেও জ্বালানি হিসেবে কাজে লাগান। তাতে পরিবারে জ্বালানির খরচও কমে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.