Advertisement
E-Paper

দিল্লিতে এনে জেরা রাহুল ও পিটারকে

শিনাকে কী ভাবে খুন করা হয়েছে এবং খুনের পর শিনার দেহ নিয়ে কী করা হয়েছিল— এ সবই হয়তো প্রথম থেকেই জানতেন পিটার মুখোপাধ্যায়। কিন্তু তিনি পুরোটাই বেমালুম চেপে গিয়েছিলেন, সন্দেহ সিবিআইয়ের।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৫ ০৩:৩১

শিনাকে কী ভাবে খুন করা হয়েছে এবং খুনের পর শিনার দেহ নিয়ে কী করা হয়েছিল— এ সবই হয়তো প্রথম থেকেই জানতেন পিটার মুখোপাধ্যায়। কিন্তু তিনি পুরোটাই বেমালুম চেপে গিয়েছিলেন, সন্দেহ সিবিআইয়ের।

পিটারকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন বলে আদালতে আবেদন করেছিল সিবিআই। কাল পিটারের সিবিআই হেফাজতের মেয়াদ ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়ে বিচারক মহেশ নাটু বলেন, ‘‘আড়াই বছর ধরে খুনের খবরটা হয়তো চেপে গিয়েছিলেন পিটার। ছেলেকেও (রাহুলকে) তিনি বলেছিলেন, শিনার কিছু হয়নি। বোঝাই যাচ্ছে, তাঁর মানসিকতা আর পাঁচ জন সাধারণ মানুষের মতো নয়।’’

প্রাক্তন মিডিয়া ব্যারনকে জেরা করতে আজ দিল্লিতে সিবিআইয়ের সদর দফতরে নিয়ে আসা হয় তাঁকে। সিবিআইয়ের নির্দেশে দিল্লি এসেছেন পিটার-পুত্র রাহুলও। তাঁকেও আরও জিজ্ঞাসাবাদ করবে সিবিআই।

এই রাহুলের সঙ্গে শিনার সম্পর্কই শিনা-হত্যার প্রাথমিক কারণ বলে সন্দেহ সিবিআইয়ের। তদন্তে আগেই জানা যায়, শিনা-রাহুলের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়। ইন্দ্রাণীর দ্বিতীয় পক্ষের মেয়ে বিধিও বলেন, ‘‘রাহুল-শিনার সম্পর্ক নিয়ে পিটার আর ইন্দ্রাণীর মধ্যে প্রচণ্ড ঝগড়া হতো। আমার মা রাহুলকে পছন্দ করতো না।’’

অথচ শিনার সঙ্গে ইন্দ্রাণীর সম্পর্ক যে প্রথম থেকে খারাপ ছিল না, তার প্রমাণও সিবিআইয়ের হাতে এসেছে। ২০০৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর একটি উইল করেন ইন্দ্রাণী। সেখানে লেখা, ইন্দ্রাণীর মৃত্যুর পরে তাঁর সম্পত্তির অধিকারী হবেন তাঁর দ্বিতীয় পক্ষের মেয়ে বিধি। ইন্দ্রাণীর অবর্তমানে পিটার (যিনি বিধির দত্তক পিতাও বটে) হবেন বিধির অভিভাবক। উইলে আরও বলা হয়েছে, পিটার বা ইন্দ্রাণী, দু’জনেরই মৃত্যু হলে উইলটি কার্যকর করার দায়িত্ব পাবেন ইন্দ্রাণীর মা দুর্গারানি বরা ও ‘বোন’ শিনা। তাঁরাই হবেন বিধির অভিভাবক।

অর্থাৎ, শিনাকে ‘বোন’ বলে পরিচয় দিলেও এই উইল থেকে স্পষ্ট যে, ইন্দ্রাণী শিনাকে যথেষ্ট ভরসা করতেন। তাই তাঁর অবর্তমানে তিনি শিনাকেই সম্পত্তি দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তা হলে কেন শিনার প্রতি বিরূপ হয়ে উঠলেন ইন্দ্রাণী?

তদন্তকারীদের দাবি, এর পিছনে রয়েছে রাহুল-শিনা সম্পর্ক। তবে খুনের পিছনে আর্থিক কারণও থাকতে পারে বলে সন্দেহ গোয়েন্দাদের। এই দিকটা খতিয়ে দেখতে পিটারকে জেরা করা হবে। ইন্দ্রাণী-পিটারের অ্যাকাউন্টও খতিয়ে দেখবে সিবিআই।

বিধি সিবিআইকে জানিয়েছেন, শিনা নিখোঁজ হওয়ার পরে বারবার তিনি শিনার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলেন। তখন শিনার নামে অন্য একটা আইডি থেকে মেল পেয়েছিলেন বিধি। তদন্তে ইতিমধ্যে জানা গিয়েছে, ইন্দ্রাণীই শিনার নামে ই-মেল অ্যাকাউন্ট খুলে সকলকে মেল করতেন। এমনকী পিটারকেও বেশ কিছু ই-মেল পাঠিয়েছিলেন তিনি।

শিনার সঙ্গে প্রথম দেখা হওয়ার প্রসঙ্গে বিধি বলেছেন, ‘‘২০০৯ সালে মুম্বইয়ে আমাদের সঙ্গে থাকতে এসেছিল শিনা। তখন আমার মা ইন্দ্রাণী ওকে নিজের বোন বলেই পরিচয় দিয়েছিল।’’ পরে রাহুল যখন পিটারকে জানান যে, শিনা ইন্দ্রাণীর মেয়ে। সে খবরও কানে আসে বিধির। মায়ের কাছে তখন শিনার ‘আসল পরিচয়’ জানতে চেয়েছিলেন বিধি। কিন্তু বিধিকে প্রচণ্ড বকাঝকা করে ইন্দ্রাণী বলেন, ‘‘রাহুল মিথ্যে বলছে। আসলে ও চাইছে, ওর বাবার সঙ্গে আমি সব সম্পর্ক শেষ করে দিই।’’

একটি বেসরকারি সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, শিনার মৃত্যুর দু’মাস পরে এক বন্ধুকে ই-মেল করেন পিটার। তিনি দাবি করেন, শিনার ব্যাপারে স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করলেই বিবাহবিচ্ছেদের হুমকি দিতেন ইন্দ্রাণী। বিধি আরও বলেন, ‘‘যে দিন শিনা হত্যার কথা প্রকাশ্যে আসে, সে দিন পুলিশই আমাকে আর পিটারকে খবরটা দিয়েছিল। শিনাকে খুনের দায়ে গ্রেফতার হয়েছে আমার মা, গাড়ির চালক। সে দিনই আমি আমার বাবার (সঞ্জীব খন্না) কাছে শিনার খুনের বিষয়ে জানতে চাই। হেসে ফোন কেটে দেন তিনি।’’ পরের দিনই অবশ্য গ্রেফতার হয় সঞ্জীব।

cbi interrogate sheena bora murder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy