E-Paper

সাইবার তদন্তে দ্রুত অনুমতি চায় সিবিআই

বিশেষজ্ঞদের মতে, সাইবার প্রতারকদের এখন কোনও সীমানায় বাঁধা সম্ভব নয়। তারা এক রাজ্যে বসে অন্য রাজ্যে, কখনও বিদেশে বসে ভারতের প্রত্যন্ত এলাকায় ফোন করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৫ ০৭:৪০

—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

হরিয়ানার মউ-য়ে বসে সাইবার প্রতারক টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে হরিনাভির বৃদ্ধের। আবার ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া গ্যাংয়ের কাছে ওটিপি বলে দেওয়ায় অ্যাকাউন্ট সাফ হয়ে যাচ্ছে জোধপুরের ব্যক্তির।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সাইবার প্রতারকদের এখন কোনও সীমানায় বাঁধা সম্ভব নয়। তারা এক রাজ্যে বসে অন্য রাজ্যে, কখনও বিদেশে বসে ভারতের প্রত্যন্ত এলাকায় ফোন করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু সেই সব ঘটনার অনুসন্ধানে নেমে রাজ্যগুলির অনুমতি না থাকায় তদন্ত থমকে যাচ্ছে বলে গত সপ্তাহে হওয়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে অভিযোগ জানাল সিবিআই।

তদন্তকারী সংস্থার তরফে স্থায়ী কমিটিকে জানানো হয়েছে, ‘দিল্লি স্পেশাল পুলিশ এস্টাবলিশমেন্ট’ আইন অনুযায়ী সিবিআইকে যদি কোনও রাজ্যে গিয়ে তদন্ত করতে হয়, তা হলে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের অনুমতি নিতে হয়। বর্তমানে সাইবার অপরাধ সংগঠিত অপরাধের মধ্যে পড়ে। যা কোনও সীমানা মানে না। অধিকাংশ তদন্তেই দেখা গিয়েছে প্রতারকদের জাল রাজ্যে-রাজ্যে ছড়িয়ে রয়েছে। তাই এ ধরনের অপরাধের তদন্ত করতে সিবিআই যাতে অনায়াসে অন্য রাজ্যে যেতে পারে, সে জন্য সব রাজ্যের কাছে অনুমতি চেয়ে চিঠি দিয়েছিল ওই কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত মাত্র আটটি রাজ্য সিবিআইকে অনুমতি দিয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। পশ্চিমবঙ্গ-সহ বাকি রাজ্যগুলি অনুমতি না দেওয়ায় এ ধরনের সাইবার অপরাধের অভিযোগের তদন্ত করতে সমস্যা হচ্ছে বলে কমিটিকে জানিয়েছে সিবিআই। সূত্রের দাবি, সাইবার অপরাধের ক্ষেত্রে অপরাধীদের চিহ্নিত করে, তাদের গ্রেফতার করতে দ্রুত পদক্ষেপের প্রয়োজন। দুষ্কৃতীদের ধরতে অভিযান চালানোর জন্য সংশ্লিষ্ট রাজ্যের অনুমতি নেওযার বিষয়টি সময়সাপেক্ষ। যার সুযোগ নেয় প্রতারকেরা। দ্রুত অভিযান চালানোর জন্য সংশ্লিষ্ট সব রাজ্য সিবিআইকে এ ধরনের অভিযান চালানোর জন্য আগেভাগেই অনুমতি দিয়ে রাখুক স্থায়ী কমিটির কাছে এমনটাই দাবি করা হয়েছে। ওই দাবির যৌক্তিকতা রয়েছে বলে মেনে নিয়েছে স্থায়ী কমিটি। রাজ্যগুলি যাতে সিবিআইকে এ ধরনের অভিযোগের তদন্ত করার প্রশ্নে আগে ভাগেই অনুমতি দিয়ে রাখে, সে জন্য প্রতিটি রাজ্যে চিঠি লিখতে চলেছে স্থায়ী কমিটি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ক্ষেত্রে সাবধানতাই হল এ সব প্রতারকের হাত থেকে বাঁচার একমাত্র উপায়। তাই কোনও ব্যক্তি নিজের ওটিপি যাতে কাউকে না বলেন, সে দিকে বিশেষ ভাবে খেয়াল রাখার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, যে কোনও ব্যাঙ্কিং অ্যাকাউন্ট দু’দফায় সুরক্ষার উপরে জোর দিয়েছেন সাইবার প্রতিরক্ষা নিয়ে কাজ করা সাইবারস্পেস সংস্থার সভাপতি বিনীত কুমার। তাঁর কথায়, ‘‘দু’ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকার প্রয়োজন। যাতে কোনও অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড প্রতারকেরা হাতে পেয়ে গেলেও, দ্বিতীয় সুরক্ষা বলয়ে তাদের রোখা সম্ভব হয়। দ্বিতীয় সুরক্ষা বলয় ওটিপি হতে পারে। সন্দেহজনক লিঙ্ক না খোলা, সন্দেহজনক ফোন মনে হলেই তা কেটে দেওয়া, নেট সংযোগ যাতে নিরাপদ হয় সে দিকে নজর দেওয়ার পাশাপাশি সর্বজনীন স্থানে ওয়াইফাই ব্যবহার না করাই বাঞ্ছনীয়।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Cyber Crime Cyber Cell CBI Investigation

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy