Advertisement
E-Paper

‘টাকা নিয়ে প্রশ্ন’: মহুয়ার সম্পর্কে প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু করে দিল সিবিআই, তৃণমূল বলছে, চিত্রনাট্য!

সংবাদমাধ্যমের একটি অংশ মহুয়ার বিরুদ্ধে সিবিআই প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু করেছে বললেও মহুয়া শিবিরের দাবি, লোকপালের ওয়েবসাইটে এই সংক্রান্ত কোনও খবর নেই। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এ সব রটানো হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৩ ১৮:৪৪
File image of Mahua Moitra

তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। — ফাইল ছবি।

লোকপালের নির্দেশ মেনে, মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে ওঠা টাকার বিনিময়ে প্রশ্নের অভিযোগ নিয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু করে দিল সিবিআই। শনিবার বিকেলে সংবাদমাধ্যমের একটি অংশ (এনডিটিভি, নিউজ় ১৮ এবং সংবাদ সংস্থা এএনআই) এমনই দাবি করেছে। প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, তদন্ত নথিভুক্তিকরণের পর তার কাজও শুরু দিয়েছে সিবিআই। তৃণমূল সাংসদ মহুয়ার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হবে কি হবে না, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাই। মহুয়া শিবির অবশ্য দাবি করছে, লোকপালের ওয়েবসাইটে এ সম্পর্কে কোনও কিছু বলা হয়নি। পরিকল্পিত ভাবে এ সব রটানো হচ্ছে। মহুয়ার পাশে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ একে বিজেপির পরিকল্পিত চিত্রনাট্য বলে আখ্যা দিয়েছেন।

সিবিআই সূত্রকে উদ্ধৃত করে এক্স মাধ্যমে (সাবেক টুইটার) সংবাদসংস্থা এএনআই জানাচ্ছে, ‘‘তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে সংসদে টাকার বিনিময়ে প্রশ্নকাণ্ডে সিবিআই অনুসন্ধান শুরু করেছে।’’

নিয়ম অনুযায়ী, প্রাথমিক অনুসন্ধানের সময় সিবিআই অভিযুক্তকে গ্রেফতার বা তল্লাশি অভিযান চালাতে পারবে না। কিন্তু তাঁরা কৃষ্ণনগরের সাংসদের কাছে প্রয়োজনীয় প্রশ্নের জবাব তলব করতে পারে। তাঁকে প্রশ্নও করতে পারবে সিবিআই।

প্রসঙ্গত, সিবিআই যে মামলাটির তদন্তভার হাতে নিয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমের একাংশ দাবি করছে, তা দায়ের করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তথা মহুয়ার প্রাক্তন বান্ধব জয় অনন্ত দেহাদ্রাই। তাঁর অভিযোগ ছিল, লোকসভায় প্রশ্ন করার বিনিময়ে মহুয়া শিল্পপতি দর্শন হীরানন্দানির কাছে থেকে ঘুষবাবদ নগদ এবং উপহার নিয়েছিলেন। দেহাদ্রাই তার পর একই বিষয়ে লেখেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবেকে। দুবে সেই অভিযোগ সম্বলিত চিঠি পাঠিয়ে দেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে। বিড়লা বিষয়টি ফয়সালার ভার দেন লোকসভার এথিক্স কমিটিকে। দেহাদ্রাই লোকপালের কাছেও তাঁর অভিযোগ নথিভুক্ত করিয়েছেন।

তদন্তের পরে এথিক্স কমিটি মহুয়ার সাংসদপদ খারিজের সুপারিশ করে লোকসভার স্পিকারের কাছে । সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে এ নিয়ে হইচই হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। কংগ্রেস, সিপিএম, আরজেডির মতো বিরোধী দলগুলি প্রথম থেকেই মহুয়ার পক্ষে দাঁড়িয়েছে। মহুয়ার নিজের দল তৃণমূল বুঝেশুনে ধীরে চলোর নীতি নিয়েছিল। তবে দু’দিন আগে স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম বার প্রকাশ্যে মহুয়ার পাশে দাঁড়ান। নেতাজি ইন্ডোরে দলীয় মঞ্চ থেকে মমতা বলেন, ‘‘এদের (বিজেপির) প্ল্যান এখন মহুয়াকে তাড়ানো! তিন মাস আর বাকি আছে (লোকসভার মেয়াদ শেষ হতে)। মহুয়া যেগুলো ভিতরে বলত, এ বার সেগুলোই বাইরে বলবে। মূর্খ না হলে ভোটের তিন মাস আগে কেউ এই কাজ করে!’’ এ সবের মধ্যেই মহুয়ার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত শুরুর দাবি সামনে এল।

দলনেত্রীর সুর ধরেই সিবিআই তদন্ত নিয়েও মহুয়ার পাশে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল। কুণাল একে কেন্দ্রীয় এজেন্সির অপব্যবহারের মাধ্যমে বিজেপি প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে বলে অভিহিত করেছেন। কুণাল বলেন, ‘‘মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে বিজেপির চক্রান্ত প্রকাশ্যে চলে আসছে। এজেন্সির অপব্যবহার করে এক এক ক্ষেত্রে এক এক রকম গল্প তৈরি করে তৃণমূলের নেতৃত্বকে নিশানা করে হেনস্থা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। মহুয়ার ক্ষেত্রেও সেটাই চেষ্টা হচ্ছে। মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে বিজেপির শাখা সংগঠন সিবিআইকে কুৎসা করতে নামানো হয়েছে। কিন্তু বাংলার মাটিতে বিজেপির এই চক্রান্ত সফল হবে না। প্রতিহিংসার রাজনীতির যে চিত্রনাট্য চলে আসছে তারই একটি অংশ মহুয়ার বিরুদ্ধে আবার সিবিআইকে নামানো।’’

এ দিকে মহুয়াকে আক্রমণ জারি রেখেছেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। শনিবার সন্ধ্যায় যখন মহুয়ার বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের প্রাথমিক অনুসন্ধানের খবর প্রকাশ্যে আসছে, সেই সময়েই নিশিকান্ত এক্স মাধ্যমে একটি বার্তা দেন। তাতে তিনি মহুয়ার বলে দাবি করে আয়কর রিটার্নের একটি তালিকা প্রকাশ করেছেন।

নিশিকান্ত লিখেছেন, ‘‘সামান্য কিছু টাকার জন্য ভারতের জাতীয় সুরক্ষা বিক্রি করে দেওয়া সাংসদের আয়কর রিটার্ন দেখুন।’’ সেই বার্তায় নিশিকান্ত ২০১২ থেকে ২০২২ পর্যন্ত আয়কর রিটার্নের একটি তালিকা তুলে ধরেছেন। তার পর লিখেছেন, ‘‘বিনা পয়সায় দেশ-বিদেশে বিজনেস ক্লাসে ভ্রমণ করে পাঁচতারা হোটেলে থেকে দুবাই, নেপাল, আমেরিকা, লন্ডন, প্যারিস কী ভাবে ঘোরা যায়, ব্র্যান্ডেড ব্যাগ, পার্স, ঘড়ি কী ভাবে নেওয়া যায়, তা জানতে আপনারা দুর্নীতিতে অভিযুক্ত সাংসদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।’’ একে বারে শেষে তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী মমতার নামও টেনেছেন বিজেপি সাংসদ। তিনি লেখেন, ‘‘তৃণমূলের হাওয়াই চটি পরা নেত্রী মমতা দিদির উপর এ বার আমার কষ্ট হচ্ছে।’’

Mahua Moitra CBI
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy