২৫ বছর! কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে প্রতারণা এবং ব্যবসায়িক কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত এবং পলাতক মনিকা কপূরকে অবশেষে হাতে পাচ্ছে সিবিআই। ১৯৯৯ সালে আমেরিকায় পালানো ওই মহিলাকে বুধবার নিজেদের হেফাজতে নেবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। রাতের উড়ানে ভারতে আনা হচ্ছে ওই মহিলাকে। বিমানে মনিকার সঙ্গে রয়েছেন সিবিআইয়ের একটি দল।
মনিকা ও তাঁর দুই ভাই রাজন খান্না এবং রাজীব খন্নার সঙ্গে গয়না আমদানি-রফতানির ব্যবসা করতেন। এক সময়ে তিন ভাইবোনের বিরুদ্ধেই ব্যবসায়িক কেলঙ্কারির অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, গয়না ব্যবসার জন্য আমদানি পণ্যকে শুল্কহীন করার জন্য অসাধু উপায়ে কেন্দ্রের কাছ থেকে লাইসেন্স নেন তাঁরা। পরে তা বিক্রিও করে দেন। মনিকাদের ওই জালিয়াতির ফলে কেন্দ্রের কোষাগার থেকে প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষতি হয় (বর্তমান বাজারমূল্যে প্রায় ৫ কোটি টাকার ক্ষতি)। ১৯৯৯ সালে আর্থিক জালিয়াতি প্রকাশ্যে আসতেই লুকিয়ে আমেরিকা পালান মনিকা। দীর্ঘ প্রচেষ্টার পরে অবশেষে তাঁকে হাতে পেয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
২০০২ সালে সংশ্লিষ্ট আর্থিক কেলেঙ্কারি এবং দুর্নীতির মামলার তদন্ত নতুন করে শুরু করে সিবিআই। ২০০৪ সালে আদালতে চার্জশিট জমা পড়ে। তাতে মনিকা এবং তাঁর দুই ভাইকেই অভিযুক্ত হিসাবে দেখানো হয়। রাজন এবং রাজীব ২০১৭ সালের ডিসেম্বরেই দিল্লির আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। অন্য দিকে, মনিকাকে এই মামলার মূল ষড়যন্ত্রী বলে চিহ্নিত করা হয়।
২০১০ সাল থেকে মনিকাকে দেশে ফেরানোর মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। প্রত্যর্পণের বিষয়ে শেষ পর্যন্ত আমেরিকার সঙ্গে সন্ধি হয়েছে। সম্প্রতি নিউ ইয়র্কের আদালত মনিকাকে ভারতে ফেরানোর নির্দেশ দেয়। আদালতে অভিযুক্ত দাবি করেছিলেন, ভারতে ফিরলে তিনি হেনস্থার শিকার হবেন। যদিও সেই যুক্তি খারিজ করে দিয়েছে নিউ ইয়র্কের আদালত।
সিবিআই জানিয়েছে, পলাতক মনিকা দুই ভাইয়ের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে রফতানি সংক্রান্ত বিভিন্ন সরকারি নথি নকল করেছিলেন। শিপিং বিল থেকে ইনভয়েস এবং ব্যাঙ্কের শংসাপত্র, সমস্ত কিছু নকল করে কেন্দ্রের কাছ থেকে শুল্কবিহীন ভাবে সোনা আমদানির ছাড়পত্র নেন। তার পর লাইসেন্স বিক্রি করে দেন দীপ এক্সপোর্টস নামে একটি কোম্পানিকে। ১৯৯৮ সালের ওই ঘটনার পরের বছরেই বিদেশে পালিয়ে যান মনিকা। সেই থেকে তাঁকে ভারতে ফেরানোর চেষ্টা চলছিল। অবশেষে সফল হলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা।