দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন সংস্কারে দুর্নীতির অভিযোগ এ বার তদন্ত করে দেখবে কেন্দ্র। এই সংক্রান্ত নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় পূর্ত দফতরকে (সিপিডব্লিউডি)। দিল্লির ৬, ফ্ল্যাগশিপ রোডের ওই বাংলোতে ২০১৫ সাল থেকে থাকতেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর ২০২৪ সালের অক্টোবরে বাংলোটি খালি করে দেন। বিজেপির দীর্ঘ দিনের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন সংস্কারে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। কেজরী নিজে সেই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। অভিযোগ, সরকারি বিধি ভাঙা হয়েছে ওই বাংলোর সংস্কারের জন্য। ফ্ল্যাগশিপ রোডের বাংলোটিকে ‘শিশমহল’ বলে কটাক্ষ করেন দিল্লির বিজেপি নেতারা।
কেন্দ্রীয় পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরা এর আগে বাংলোটি পরিদর্শন করেছিলেন। তাঁরা ১৩ ফেব্রুয়ারি সংশ্লিষ্ট দফতরে এই সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। তার পরেই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। দিল্লির ওই বাংলোটি আট একর জমিতে বিস্তৃত। অভিযোগ, বাংলোটি অনেকটা এলাকায় সম্প্রসারিত হয়েছে। গত সোমবার এ বিষয়ে দিল্লি বিজেপির প্রধান বীরেন্দ্র সচদেবা রাজধানীর লেফ্টেন্যান্ট গভর্নর ভিকে সাক্সেনাকে চিঠি দিয়েছিলেন। চিঠিতে তিনি জানান, অন্তত চারটি সরকারি জমি বেআইনি ভাবে আত্মসাৎ করে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনটি সংস্কার এবং সম্প্রসারণ হয়েছে। বিজেপি ইতিমধ্যে জানিয়েছে, তারা সরকার গঠন করলে নতুন মুখ্যমন্ত্রী ওই বাংলোতে থাকবেন না।
আরও পড়ুন:
কেজরীর বাংলো নিয়ে অক্টোবরে একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছিল পূর্ত দফতর। তাতে একাধিক বিলাসবহুল আসবাব, যন্ত্রপাতির কথা বলা হয়েছিল। ওই রিপোর্ট দিল্লির বিধানসভা ভোটের প্রচারে কাজে লাগিয়েছিল বিজেপি। রাজধানীতে প্রচারে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, ‘‘আমিও শিশমহল তৈরি করতে পারতাম। কিন্তু আমি দেশের গরিব মানুষদের জন্য চার কোটির বেশি বাড়ি বানিয়েছি।’’
বাসভবন সংস্কারের দুর্নীতির যাবতীয় অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন কেজরী। তিনি বার বার দাবি করে এসেছেন, রাজনৈতিক কারণে তাঁর বাসভবনকে টেনে আনা হয়েছে বিতর্কের কেন্দ্রে। কেজরীর বক্তব্য, বিজেপি নিজেদের অপারগতাকে ঢাকতে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের দিকে মানুষের নজর ঘোরাচ্ছে।
দিল্লির ভোটে অবশ্য কেজরীর যুক্তি খুব একটা কাজে লাগেনি। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে রাজধানীতে ক্ষমতায় ফিরেছে বিজেপি। তারা ৪৮টি আসনে জয় পেয়েছে। আপ পেয়েছে মাত্র ২২টি আসন। এখনও বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করা হয়নি।