পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষের আবহে দেশের মধ্যে জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় ব্যবস্থা যাতে নিখুঁত ভাবে কাজ করে, তা নিশ্চিত করতে সক্রিয় হল মোদী সরকার। যুদ্ধের আশঙ্কায় যাতে জিনিস ও খাদ্যপণ্যের দাম না বেড়ে যায়, তা সরকার নিশ্চিত করতে চাইছে সরকার।
বৃহস্পতিবার খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রক ও দফতরের সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সরকারি সূত্রের খবর, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে দেন, সমস্ত জরুরি ব্যবস্থা যেন নিখুঁত ভাবে কাজ করে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমলাদের সব সময় সতর্ক থাকতে হবে। দেশ সংবেদনশীল সময়ের মধ্যে দিয়ে চলেছে। কেন্দ্রীয় সরকার জাতীয় সুরক্ষা, সামরিক প্রস্তুতি ও নাগরকিরদের নিরাপত্তার প্রতি দায়বদ্ধ।
যুদ্ধ বেধে গেলে বাজারে জিনিসপত্র, বিশেষ করে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাবে— এই ভেবে অনেক ব্যবসায়ী বেআইনি মজুত ও কালোবাজারির চেষ্টা করতে পারেন বলে কেন্দ্রীয় সরকারের আশঙ্কা রয়েছে। বুধবারই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সীমান্তবর্তী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যসচিব, পুলিশের ডিজি-দের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেই বৈঠকেও খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে রাজ্যগুলিকে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছিল। সরকারি সূত্রের খবর, প্রয়োজনে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও পরিষেবা ব্যবস্থাপনা আইন (এসমা) জারি করা হবে। অতিমারির সময়ও স্বাস্থ্য পরিষেবা নিশ্চিত করতে এই আইন জারি হয়েছিল। খাদ্য ও উপভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রককে বাজারে জিনিসপত্রের দামের উপরেও কড়া নজর রাখতে বলা হয়েছে।
পাকিস্তানকে প্রত্যাঘাত করতে ‘অপারেশন সিঁদুর’ এবং পাকিস্তানের পাল্টা আঘাতের জবাবে পাল্টা মার— এই পরিস্থিতির মধ্যেই বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকারের সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ, কেন্দ্রের বিভিন্ন মন্ত্রকের মধ্যে সমন্বয়ে যেন কোনও ফাঁক না থাকে। কেন্দ্রের সচিবদের রাজ্য সরকার ও স্থানীয় স্তরের সংস্থাগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে বলা হয়েছে। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর আগেই বুধবার দেশ জুড়ে নাগরিক সুরক্ষার মহড়া বা ‘মক ড্রিল’ হয়েছিল। এই নাগরিক সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় সরকার মনে করছে, ভুয়ো খবর দেশের মধ্যে অশান্তি ও উত্তেজনা তৈরি করতে পারে। অকারণ আতঙ্ক তৈরি করতে পারে। এর মোকাবিলার ক্ষেত্রেও কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রকগুলিকে রাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে এগোতে বলা হয়েছে। জরুরি পরিকাঠামোর নিরাপত্তা অক্ষুণ্ণ রাখতে কী কী পদক্ষেপ করা উচিত, তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। রাতে দিল্লি সরকার ঁএক নির্দেশিকায় সব দফতরের কর্মীদের ছুটি বাতিল করে দিয়েছে। বর্তমান জরুরি পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)