Advertisement
E-Paper

অবস্থানে বড় বদল, সুপ্রিম কোর্টে ৩৭৭ ধারার পক্ষে দাঁড়াল না কেন্দ্র

ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারার সাংবিধানিক বৈধতা রয়েছে কি না, তা নির্ধারণের সম্পূর্ণ ভার আদালতের উপরেই ছেড়ে দিল সরকার।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৮ ১৪:১০
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সমকামিতার প্রশ্নে বড়সড় বদল কেন্দ্রীয় সরকারের অবস্থানে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারার সাংবিধানিক বৈধতা রয়েছে কি না, তা নির্ধারণের সম্পূর্ণ ভার আদালতের উপরেই ছেড়ে দিল সরকার। এ বিষয়ে সরকারের নিজের কোনও অবস্থান নেই বলে হলফনামা দিয়ে জানালেন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল তুষার মেটা। এর আগে কেন্দ্রীয় সরকার ৩৭৭ ধারা বহাল রাখার পক্ষেই সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেছিল।

ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারা অনুযায়ী সমকামিতা দণ্ডনীয় অপরাধ। পারস্পরিক ভাবে সহমত হয়েও যদি দুই প্রাপ্তবয়স্ক পরস্পরের সঙ্গে সমকামী যৌন সম্পর্কে জড়ান, তা হলেও তা দণ্ডনীয় ৩৭৭ ধারা অনুযায়ী। সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ডের সংস্থান রয়েছে এই আইনে।

এলজিবিটিকিউ কমিউনিটির তরফে এই আইনকে দিল্লি হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। দিল্লি হাইকোর্ট ৩৭৭ ধারাকে অসাংবিধানিক আখ্যা দেয় এবং জানিয়ে দেয়, সমকামিতা কোনও অপরাধ নয়।

আরও পড়ুন: জনসংখ্যা ‘বোঝা’ না ‘সম্পদ’, ধাঁধার মধ্যেই আমরা শিখরের পথে

কেন্দ্রীয় সরকার কিন্তু দিল্লি হাইকোর্টের রায় সে সময়ে মানেনি। ৩৭৭ ধারাকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়। কেন্দ্রের তরফে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করা হয় ৩৭৭ ধারার সাংবিধানিক বৈধতার পক্ষেই। ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্ট মামলাটির রায় দেয়। দিল্লি হাইকোর্টের রায় খারিজ করে সর্বোচ্চ আদালত বহাল রাখে ৩৭৭ ধারার বৈধতা।

সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের বিরোধিতায় পথে নামেন অনেকে। এলজিবিটিকিউ কমিউনিটি এবং বেশ কিছু মানবাধিকার সংগঠনের ডাকে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হয়। রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একগুচ্ছ আবেদনও জমা পড়ে। সেই আবেদনগুলির প্রেক্ষিতেই সুপ্রিম কোর্ট সিদ্ধান্ত নেয় যে, নতুন করে নিজের রায়ই খতিয়ে দেখবে সর্বোচ্চ আদালত।

প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বধীন পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চে মামলাটির শুনানি শুরু হয়েছে। বুধবার শুনানির দ্বিতীয় দিনে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে যে হলফনামা সুপ্রিম কোর্টে দাখিল করা হয়েছে, তাতে অনেকেই চমকে গিয়েছেন। এত দিন ধারাবাহিক ভাবে ৩৭৭ ধারার বৈধতার পক্ষে সওয়াল করে আসা সরকার এ বার সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে, এই ধারা বৈধ না অবৈধ, সে বিষয়ে সরকারের কোনও মতামত নেই। সুপ্রিম কোর্টের বিবেচনার উপরেই সবটা ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।

সরকারের তরফে অবশ্য আদালতে একটি তাৎপর্যপূর্ণ আবেদনও জমা দেওয়া হয়েছে। শীর্ষ আদালত যেন শুধুমাত্র ৩৭৭ ধারার বৈধতা বা অবৈধতা নির্ধারণেই সীমাবদ্ধ রাখে নিজের রায়। এ সংক্রান্ত নাগরিক অধিকার বা দায়বদ্ধতার প্রশ্নে আদালত যেন এখন কোনও রায় না দেয়। এমনই অনুরোধ জানিয়েছেন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল তুষার মেটা। সর্বোচ্চ আদালতের কাছে সরকারের তরফ থেকে মেটার আবেদন, রায় দিতে গিয়ে এমন কিছু বলবেন না, সমাজে যার সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়তে পারে।

মঙ্গলবার বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যন স্বামী অবশ্য সমকামিতার বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। তিনি বলেছেন, সমকামিতা কোনও স্বাভাবিক বিষয় নয়। সমকামিতা সারিয়ে তোলা যায় কি না, তা নিয়ে গবেষণার জন্য খরচ করা উচিত সরকারের। তিনি আরও বলেছেন, ‘‘এটা (সমকামিতা) হিন্দুত্বের বিরোধী, এটা আমাদের সব শাস্ত্রের বিরোধী এবং আমি এর বিরোধিতা করেই যাব।’’ ৩৭৭ ধারাকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের হওয়া মামলাগুলির শুনানি যখন সুপ্রিম কোর্টে শুরু হচ্ছে, ঠিক সেই সময়ে শাসক দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ সাংসদের এই মন্তব্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করেছিলেন অনেকেই। কিন্তু বুধবার সুপ্রিম কোর্টে সরকার যে অবস্থান নিয়েছে, তার সঙ্গে সুব্রহ্মণ্যন স্বামীর অবস্থানের কোনও মিল নেই।

Homo sexuality Supreme Court Article 377
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy