Advertisement
E-Paper

Pegasus: কেনা হয়েছে পেগাসাস? চুপই কেন্দ্র

সরকার পেগাসাস কিনেছে, না কেনেনি, তার উত্তর না দিলেও মোদী সরকার সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে, কিছু কায়েমি স্বার্থ ভুল ধারণা তৈরির চেষ্টা করছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২১ ০৭:১৬
কেন্দ্রীয় সরকার পেগাসাস নিয়ে সংসদে বিবৃতি দিলেও এ প্রশ্নের উত্তর দেয়নি।

কেন্দ্রীয় সরকার পেগাসাস নিয়ে সংসদে বিবৃতি দিলেও এ প্রশ্নের উত্তর দেয়নি। ফাইল চিত্র

পেগাসাস-কাণ্ডে বিরোধীদের প্রধান প্রশ্ন ছিল, নরেন্দ্র মোদী সরকার কি ইজ়রায়েল থেকে ফোনে আড়ি পাতার পেগাসাস স্পাইওয়্যার কিনেছে? না কেনেনি? কেন্দ্রীয় সরকার পেগাসাস নিয়ে সংসদে বিবৃতি দিলেও এ প্রশ্নের উত্তর দেয়নি। আজ সুপ্রিম কোর্টে পেগাসাস নিয়ে তিন পৃষ্ঠার হলফনামা দিলেও কেন্দ্র তা খোলসা করল না।

সরকার পেগাসাস কিনেছে, না কেনেনি, তার উত্তর না দিলেও মোদী সরকার সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে, কিছু কায়েমি স্বার্থ ভুল ধারণা তৈরির চেষ্টা করছে। তা দূর করতে এবং গোটা বিষয় খতিয়ে দেখতে একটি বিশেষজ্ঞদের কমিটি তৈরি করা হবে।

পেগাসাস-কাণ্ডে নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে একগুচ্ছ মামলা হয়েছিল। কেন্দ্রের হলফনামা দেখে মামলাকারীরা প্রশ্ন তুলেছেন, সরকার ইজ়রায়েলের এনএসও সংস্থা থেকে পেগাসাস কিনেছে কি না, তা কেন স্পষ্ট করছে না?

আজ সুপ্রিম কোর্টে শুনানিতে প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণা কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে বলেন, ‘‘সরকার পেগাসাস ব্যবহার করেছে কি করেনি, সে বিষয়ে হলফনামা মামলাকারীদের সন্তুষ্ট করতে পারেনি।’’ মেহতা পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘‘যদি এক পৃষ্ঠার হলফনামা দিয়ে সরকার বলে পেগাসাস কাজে লাগানো হয়নি, তা হলে ওঁরা মামলা প্রত্যাহার করে নেবেন? উত্তর হল, না।’’ বিচারপতিরা বলেন, ‘‘যা দেখছি, আপনারা কোনও অবস্থান নিতে চাইছেন না।’’ বিচারপতিরা প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনারা যা বলতে চান, হলফনামা দিয়ে বলছেন না কেন? আমাদের কাছেও ছবিটা স্পষ্ট হয়!’’

রাহুল গাঁধী, অভিযেক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, সাংবাদিক, সমাজকর্মী থেকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, আইনজীবী, নির্বাচন কমিশনার, সিবিআই-কর্তা সহ একাধিক ব্যক্তির মোবাইল হ্যাক করে আড়ি পাতার অভিযোগ ওঠায় গত প্রায় চার সপ্তাহ সংসদের অধিবেশন অচল ছিল। মোদী সরকার সকলের ফোনে আড়ি পাতছে বলে অভিযোগের মুখে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেছিলেন, ‘‘বেআইনি ভাবে কারও ফোনে আড়ি পাতা হয়নি।’’ তাঁর মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিবই হলফনামা দিয়ে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। সরকারের দাবি, অনুমান, আন্দাজ ও সংবাদমাধ্যমের ভিত্তিহীন রিপোর্টের উপরে ভরসা করে মামলা হয়েছে। সংসদের অধিবেশনের ঠিক আগে কী ভাবে সংবাদমাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশ হল, মেহতা সে প্রশ্নও তোলেন।

মামলাকারীদের হয়ে আইনজীবী কপিল সিব্বল প্রশ্ন তোলেন, ২০১৯-এ প্রথম হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে পেগাসাস স্পাইওয়্যার দিয়ে আড়ি পাতার অভিযোগ ওঠার পরে কেন্দ্র নিজেই সংসদে এ কথা স্বীকার করেছিল। এখন সরকার কী ভাবে বলতে পারে, তারা কিছুই জানে না? সরকার নিজে কোনও তথ্য দিচ্ছে না। অথচ অনুমানের ভিত্তিতে মামলা হয়েছে বলে দাবি করছে। যদি সরকার পেগাসাস না কিনে থাকে, তা হলে কমিটির দরকার নেই। যদি সরকার পেগাসাস কিনে থাকে, তাহলে কমিটি কী করবে? সিব্বল বলেন, ‘‘গণতন্ত্রের দুই স্তম্ভ, বিচার বিভাগ ও সংবাদমাধ্যম নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন। এই দুই প্রতিষ্ঠান মানুষের অধিকার রক্ষা করে। এ ভাবে সেখানে নাক গলানো যায় না।’’ সিব্বলের দাবি, ‘‘স্বরাষ্ট্রসচিবের অনুমতিতে আড়ি পাতা যায়। তাঁর বদলে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব হলফনামা দিচ্ছেন। ক্যাবিনেট সচিবকে হলফনামা দিতে বলা হোক।’’ সলিসিটর জেনারেল পাল্টা যুক্তি দেন, এখানে দেশের নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত। স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে উত্তেজনা তৈরির চেষ্টা হচ্ছে। সিব্বল পাল্টা যুক্তি দেন, সরকার পেগাসাস কিনেছিল কি না, তা বলার সঙ্গে দেশের নিরাপত্তার কোনও সম্পর্ক নেই। আগামিকালও শুনানি চলবে। কেন্দ্র এ বিষয়ে আরও হলফনামা দেবে কি না, তা নিয়ে বিচারপতিরা সরকারকে আগামিকালের মধ্যে মনস্থির করতে বলেছেন।

Pegasus Narendra Modi BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy