আটকে থাকা বিল নিয়ে কখন এবং কী ভাবে সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ নেওয়া হবে, তা স্থির করবেন রাষ্ট্রপতিই। বিচারবিভাগ নয়। শীর্ষ আদালতের কাছে এমনটা জানিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল কেন্দ্র। কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেটা শীর্ষ আদালতকে জানিয়েছেন, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৪৩ অনুসারে আটকে থাকা বিল সাংবিধানিক কি না, সেই বিষয়ে পরামর্শ চাওয়ার বিষয়ে রাষ্ট্রপতিকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছে। কেন্দ্রের যুক্তি, এ ক্ষেত্রে সাংবিধানিক লব্জে ব্যবহৃত ‘আলোচনা’ শব্দটি এটাই বোঝায় যে, রাষ্ট্রপতি পরামর্শ চাওয়ার বিষয়ে বাধ্য নন।
গত এপ্রিলে তামিলনাড়ু সরকারের একটি মামলায় রাষ্ট্রপতিকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিল নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। সাধারণত, কোনও রাজ্যের আইনসভায় বিল পাশ হলে তা সম্মতির জন্য রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হয়। রাজ্যপাল নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ওই বিল নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে তা রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দেন। সুপ্রিম কোর্ট জানায়, রাজ্যপালের কাছ থেকে এই ধরনের বিল এলে রাষ্ট্রপতি অনির্দিষ্ট কালের জন্য তা ফেলে রাখতে পারবেন না। ভারতীয় সংবিধানে বিল নিয়ে মতামত জানানোর জন্য রাষ্ট্রপতিকে কোনও সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট জানায়, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই এই কাজ সম্পন্ন করতে হবে। বিল হাতে পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে হবে রাষ্ট্রপতিকে। যদি বেশি সময় লাগে, সে ক্ষেত্রে তার কারণ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।
তা ছাড়া সুপ্রিম কোর্ট জানায়, রাজ্য আইনসভায় পাশ হওয়া কোনও বিল সাংবিধানিক কিনা, তা নির্ধারণে কোনও রাজ্যপাল রাষ্ট্রপতির কাছে সেই বিল পাঠালে এই বিষয়ে তাঁকে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রের যুক্তি, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২০০ এবং ২০১ অনুসারে, রাষ্ট্রপতি কোনও বিলে সম্মতি দেবেন কি দেবেন না, তা নিজেই স্থির করবেন। অনুচ্ছেদ ১৪৩ অনুসারে এ ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের কোনও ভূমিকা নেই। তা ছাড়া আইনসভায় পাশ হওয়া কোনও বিল রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপালের অনুমোদন পেলে শীর্ষ আদালত তা খতিয়ে দেখতে পারে না বলে যুক্তি দিয়েছে কেন্দ্র।
মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বিআর গবইয়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে। সে খানে কী অগ্রগতি হয়, কেন্দ্র এবং শীর্ষ আদালত এই বিষয়ে কী জানায়, সে দিকে নজর থাকবে।