Advertisement
E-Paper

কেরলের বন্যাকে জাতীয় বিপর্যয় বলে মনেই করছে না মোদী সরকার

রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় নামতে শুরু করেছে বন্যার জল। তার পরেও আলাপুঝা জেলার চেঙ্গান্নুর শহর লাগোয়া পাঁচটি গ্রাম এখনও জলের তলায়। জলমগ্ন হয়ে রয়েছেন এক হাজারেরও বেশি মানুষ।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৮ ১৩:২৭
জল থেকে একটুকরো ডাঙার খোঁজে। কেরলে। ফাইল চিত্র।

জল থেকে একটুকরো ডাঙার খোঁজে। কেরলে। ফাইল চিত্র।

বিরোধীদের দাবি মেনে নিয়ে ‘জাতীয় বিপর্যয়’ বলল না মোদী সরকার।

কেরলের বন্যাকে ‘ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক দুর্যোগ’ বলে ঘোষণা করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সমুদ্রোপকূলবর্তী রাজ্যটিতে শতাব্দীর সবচেয়ে বিধ্বংসী বন্যায় মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ৩৫০ ছুঁয়েছে। সোমবার মৃত্যু হয়েছে আরও ৬ জনের।

তবে বৃষ্টি কমেছে। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় নামতে শুরু করেছে বন্যার জল। তার পরেও আলাপুঝা জেলার চেঙ্গান্নুর শহর লাগোয়া পাঁচটি গ্রাম এখনও জলের তলায়। জলমগ্ন হয়ে রয়েছেন এক হাজারেরও বেশি মানুষ।

কোচি বিমানবন্দর এখনও চালু হয়নি। নৌবাহিনীর বিমানঘাঁটিতে বায়ুসেনার ছোট বিমান সোমবার থেকে নামতে শুরু করেছে। মঙ্গলবার নৌবাহিনীর ওই বিমানঘাঁটি থেকে শুরু হয়েছে যাত্রীবাহী বিমান চলাচলও। তিরুঅনন্তপুমের পর আর সে ভাবে ট্রেনও চলছিল না এত দিন। ফলে বিমান বা রেল পথে বন্যা-বিপর্যস্ত কেরলের জন্য আসছে না কোনও ত্রাণ সামগ্রী। মঙ্গলবার অবশ্য তিরুঅনন্তপুরম থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে এর্নাকুলাম পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।

কেরলে বন্যা: কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

ভরসা শুধু কোচি বন্দর। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ত্রাণসামগ্রী জাহাজে করে পৌঁছতে শুরু করেছে কোচি বন্দরে। গত রবিবার বেলা ১২টা নাগাদ মুম্বই থেকে নৌবাহিনীর জাহাজ আইএনএস দীপক ৮০০ টন পানীয় জল ও ১৮ টন শুকনো খাবার নিয়ে কোচি বন্দরে পৌঁছয়। পানীয় জল সে দিনই দু’টি বার্জে করে আরও প্রত্যন্ত এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। ট্রাকে খাবার যায় ত্রাণ শিবিরে। আরও একটি কনটেনার ভেসেল এসএসএল কৃষ্ণা কোচি বন্দর থেকে ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে পৌঁছায় তুতিকোরিনে। সোমবার সকালে আরও বাক্স-বন্দি পণ্য পাঠানো হয় ভাল্লারপদমে। সেখান থেকে তা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বিভিন্ন ত্রাণ শিবিরে।

আরও পড়ুন- ‘মায়ের মরা মুখটাও দেখতে পেলাম না, কী করব আমি যে এখানে জলবন্দি’​

আরও পড়ুন- পিঠ পেতে কেরলের ত্রাণে নয়া উদ্দালক, জয়সলকে কুর্নিশ দেশের

জল-খাবারের পাশাপাশি কেরলে পেট্রল-ডিজেলের সঙ্কটও শুরু হয়েছে। সেই সমস্যা মেটাতে ভারত পেট্রোলিয়াম লিমিটেড এমটি স্বর্ণ গোদাবরী নামে ৫০ হাজার টন তেলবাহী একটি জাহাজ এ দিনই কোচিতে নিয়ে এসেছে। মঙ্গলবারও মুম্বই থেকে নৌবাহিনীর আর একটি জাহাজ জল-খাবার নিয়ে কোচি পৌঁছবে। আসছে অনেক ছোট ভেসেল-বার্জও।

কিছুটা হাল ফিরেছে কেরলের পুরোপুরি বিপর্যস্ত টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার। ৮৫ হাজারের মধ্যে ৭৭ হাজার মোবাইল টাওয়ার ফের চালু হলেও, ইদুকি জেলার টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে সেই তিমিরেই!

হাল কিছুটা ফিরেছে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থারও। তবে বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাব মেটেনি এখনও। বাড়ছে মশাবাহিত রোগের দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও। কোচি ও তিরুঅনন্তপুরমে সেই আশঙ্কা আরও বেশি।

কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বলেছেন, ‘‘কেন্দ্র আমাদের যাবতীয় অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও ত্রামসামগ্রী জরুরি ভিত্তিতে পাঠাবে বলেছে।’’

কেরলের রাজস্ব মন্ত্রী ই চন্দ্রশেখরণ জানিয়েছেন, জলমগ্ন ৯৫ শতাংশ মানুষকে উদ্ধার করে ত্রাণশিবিরগুলিতে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে। বাকিদেরও মঙ্গলবারের মধ্যেই পৌঁছে দেওয়া হবে ত্রাণশিবিরে। তাঁর কথায়, ‘‘উদ্ধারকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে এখন ত্রাণ ও পুনর্বাসনের ওপরেই বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে।’’

বন্যাদুর্গতদের উদ্ধারে সেনাবাহিনীর সাদার্ন কম্যান্ড ড্রোন নামিয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই কম্যান্ডের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ডি আর সোনি।

মশাবাহিত রোগের আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় কেরলের স্বাস্থ্য মন্ত্রক রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় মোট ৩ হাজার ৭০০টি স্বাস্থ্য শিবির খুলেছে। বন্যাদুর্গতদের চিকিৎসার জন্য গড়া হয়েছে বিশেষজ্ঞদের ৮টি দল।

গ্রাফিক সৌজন্যে: গুগল।

(কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, গুজরাত থেকে মণিপুর - দেশের সব রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)

Kerala Flood NDRF Pinarayi Vijayan কেরল
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy