Advertisement
E-Paper

নাবালিকার আঁকাই প্রমাণ, যৌন নির্যাতনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত কাকা

মেয়েটিকে পড়শির বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতে পাঠান আখতার। সঙ্গে জুটত অকথ্য অত্যাচার। পাশাপাশি, দিনের পর দিন কাকার লালসার শিকার হতে হয়েছে তাকে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৭ ২০:৪৪
ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

কাকার বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করেছিল একরত্তি মেয়েটি। ঘটনার কোনও সাক্ষী না থাকায় তা প্রমাণ করাও বেশ কষ্টসাধ্য ছিল। কিন্তু, নাবালিকার আঁকা ছবিকেই আদালত প্রমাণ হিসাবে মেনে নিল। তার উপর ভিত্তি করেই অভিযুক্তকে যৌন নির্যাতনের দায়ে পাঁচ বছরের সাজা দিয়েছে দিল্লির এক আদালত।

মেয়েটির বয়স মাত্র আট। বাড়ি আদতে কলকাতায়। কিন্তু, মা মারা যাওয়ার পর তাকে ফেলে চলে যান মদ্যপ বাবা। এর পর ঠাঁই জোটে কাকা আখতার আহমেদের দিল্লির বাড়িতে। তবে, কিছু দিন যেতে না যেতেই ‘ভরসা’র সেই আশ্রয় বিভীষিকা হয়ে ওঠে তার কাছে। মেয়েটিকে পড়শির বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতে পাঠান আখতার। সঙ্গে জুটত অকথ্য অত্যাচার। পাশাপাশি, দিনের পর দিন কাকার লালসার শিকার হতে হয়েছে তাকে।

আরও পড়ুন

৪৪ বছর পর আসল মায়ের কাছে ফিরল মেয়ে

এর পর এক দিন কাকার বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায় সে। কিন্তু, দিল্লির একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তাঁকে উদ্ধার করে। ২০১৪-র সেই নভেম্বর থেকে ওই সংস্থার দায়িত্বেই আছে মেয়েটি। কাকার অত্যাচারের কথা তাদের জানায় সে। এর পর ওই নাবালিকার কাউন্সেলিং করানো হয়। আখতার আহমেদের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের মামলাও রুজু করা হয়। সেই সঙ্গে নাবালিকার মেডিক্যাল পরীক্ষার রিপোর্টেও যৌন নির্যাতনের ইঙ্গিত মেলে। এর পর আখতারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। তবে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে যায় আখতার। শেষমেশ গত জুনে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পুলিশের কাছে বার বার নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করতে থাকে আখতার। এর পর তার বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের মামলা চললেও আদালতে তা প্রমাণ করাটা বেশ কষ্টসাধ্য ছিল। কারণ, ঘটনার কোনও সাক্ষী নেই। সেই সঙ্গে ঘটনার পর কেটে গিয়েছে প্রায় দু’বছর। অভিযুক্তের আইনজীবীর দাবি, ওই নাবালিকাকে শিখিয়েপড়িয়ে তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে ভুয়ো অভিযোগ করা হয়েছে। এবং নাবালিকার বয়ানও সাক্ষ্য হিসাবে খুব জোরালো হিসাবে মানা যায় না বলে যুক্তি দেন তিনি।

তবে, এই মামলার মোড় ঘুরে যায় ওই নাবালিকার আঁকা ছবি থেকে। শুনানি চলাকালীন সময় কাটানোর জন্য নাবালিকাকে আঁকার কাগজ-কলম দিয়েছিলেন আইনজীবীরা। আদালতে বসেই তাতে আঁকতে শুরু করে সে। সাদা কাগজের উপরে ফুটে ওঠে একটি পরিত্যক্ত বাড়ির ছবি। কয়েকটি বেলুন একটি সুতোয় জড়িয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে একটি মেয়ে। পাশেই পড়ে রয়েছে একটি জামা। গোটা ছবিটাই রংহীন, ধূসর। এই ছবি দেখেই অতিরিক্ত দায়রা বিচারক বিনোদ যাদবের মতে, নাবালিকার শোচনীয় মানসিক অবস্থাই ফুটে উঠেছে ওই ছবিতে। মেয়েটির দুর্দশার কথা জানিয়ে দিচ্ছে তার আঁকা। এর পরই সেটি প্রমাণ হিসাবে মেনে নেন বিচারক। যৌন নির্যাতনের দায়ে আখতারকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড-সহ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ওই নাবালিকার পুনর্বাসনের জন্য তাকে তিন লক্ষ টাকাও দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

Sexual Assault Sketch
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy