Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
China

সেনা সরাচ্ছে দু’দেশই: চিন

বিবৃতি দিয়ে চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রক ওই দাবি করলেও, রাত পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি নয়াদিল্লি।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৭:১৭
Share: Save:

আজ থেকে পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার বিভিন্ন এলাকা থেকে দু’দেশ সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে বলে দাবি করল চিন। বিবৃতি দিয়ে চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রক ওই দাবি করলেও, রাত পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি নয়াদিল্লি। সূত্রের মতে, চিন বাস্তবের জমিতে কোনও আস্থাবর্ধক পদক্ষেপ করলে তবেই এ নিয়ে সরকারি ভাবে মুখ খুলবে কেন্দ্র। এ দিকে রাজ্যসভার পরে লোকসভাতেও প্রধানমন্ত্রী লাদাখে চিনের আগ্রাসন নিয়ে কেন নীরব, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব হলেন বিরোধীরা। রাতে জানানো হয়, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ সকাল সাড়ে দশটায় রাজ্যসভায় এবং লোকসভায় বিকেল সাড়ে পাঁচটায় পূর্ব লাদাখ নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত বিবৃতি দেবেন।

গত এপ্রিল-মে মাস থেকে পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ঢিল ছোড়া দূরত্বে দাঁড়িয়ে রয়েছে দু’দেশের সেনা। ঘটেছে একাধিক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। যদিও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে গত ২৪ জানুয়ারি চিন সীমান্তের মলডো-তে নবম দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেছিলেন দু’দেশের সেনাকর্তারা। তার পরে নয়াদিল্লি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিল, দু’পক্ষই দ্রুত সেনা প্রত্যাহার করার প্রশ্নে সম্মত হয়েছে। ওই বৈঠকের প্রায় আড়াই সপ্তাহের মাথায় চিনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সিনিয়র কর্নেল উ চিয়াং আজ বিবৃতি দিয়ে জানালেন, প্যাংগং লেকের দক্ষিণ ও উত্তর তীরে চিন ও ভারতের যে সেনা মোতায়েন রয়েছে, তারা আজ থেকে সুশৃঙ্খল ভাবে ও সমতা বজায় রেখে পিছিয়ে যেতে শুরু করেছে। ভারত ও চিনের মধ্যে নবম পর্যায়ের যে সেনা বৈঠক হয় তার ভিত্তিতেই ওই পদক্ষেপ করেছে উভয় পক্ষ।

তবে নীরব নরেন্দ্র মোদী সরকার। উল্টে গতকাল প্রাক্তন সেনাপ্রধান তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভি কে সিংহের মন্তব্যে অস্বস্তিতে শাসক শিবির। ভি কে সিংহ বলেছিলেন, চিন সেনা দশ বার প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পার হলে, ভারত পার হয় ৫০ বার। যে বক্তব্য হাতিয়ার করে গতকাল চিনের বিদেশমন্ত্রক টুইট করে, ভারত যে নিয়ন্ত্ররেখা মেনে চলে না, তা ওই বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট। যদিও আজ ভি কে সিংহ দাবি করেন, তাঁর বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

ওই বক্তব্যের সূত্র ধরেই লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী আজ প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের বিবৃতি দাবি করেছিলেন। অধীর বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ওই বক্তব্যের জেরে কি চিনের দাবি সত্যি প্রমাণিত হল না? ভি কে সিংহের দাবি কি ভারতের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে না?’’ ওই মন্তব্য করে ভারতীয় জওয়ানদের অপমান করা হয়েছে বলে ভি কে সিংহের অপসারণ দাবি করেছে কংগ্রেস।

আজ লোকসভায় প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে অধীর-সহ বিরোধীরা ওই মন্তব্য ও লাদাখ প্রশ্নে সরব হলেও নীরব ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। লাদাখে দু’পক্ষের সংঘর্ষের পর থেকে তিনি এ যাবৎ চিনের নাম নেননি। সেই ধারাবাহিকতা আজও বজায় রেখে বিষয়টির সঙ্গে সেনা-আবেগকে সঙ্গে সম্পৃক্ত করার কৌশল নেন প্রধানমন্ত্রী। চিন ভারতের জমি দখল করেছে কি না ? করলে কোন এলাকায় কতটা জমি দখল করেছে? সেনা প্রত্যাহার হলে কবে থেকে হবে—-বিরোধীদের সে সব প্রশ্ন এড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নিজের বক্তব্যের শেষে সেনাদের গুণগান করে বলেন, ‘‘আমাদের দেশের সেনারা দেশকে খাটো হতে দেবেন না। দেশের সেনার বীরত্ব দেখে গর্ব করা উচিত।’’ বিরোধীদের অভিযোগ, এ ভাবে লাদাখের প্রকৃত পরিস্থিতি সম্পর্কে সংসদে জানানোর বিষয়টি এড়িয়ে গেলেন প্রধানমন্ত্রী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

China Ladakh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE