ভারতীয় সেনার অপারেশন সিঁদুর প্রতিহত করতে চিনা যুদ্ধবিমান ব্যবহার করা হয়েছিল। পাক মন্ত্রীর সেই দাবির প্রেক্ষিতে যে চিন যে জবাব দিয়েছে, তাতে কার্যত বিড়ম্বনায় পড়তে হল ইসলামাবাদকে।
পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদী হানায় ২৬ জনের মৃত্যুর পরে জঙ্গিদের জবাব দিতেই মঙ্গলবার রাতে ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুরু করে ভারত। মাত্র ২৫ মিনিটের অভিযানে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের মূল ভূখণ্ডে মোট ন’টি জঙ্গি শিবির গুঁড়িয়ে দিয়েছে ভারত। সেগুলির মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানের মূল ভূখণ্ডে থাকা বাহাওয়ালপুরে জইশ-ই-মহম্মদের মূল ঘাঁটি এবং মুরিদকে-তে লশকর-এ-ত্যায়বার মূল ঘাঁটি। জইশের মূল ঘাঁটিতে হামলায় প্রাণ হারিয়েছে সেই জঙ্গি গোষ্ঠীর প্রধান মাসুদ আজ়হারের পরিবারের ১০ জন, যাদের মধ্যে রয়েছে তার ভাই, বোন ও ভাইপো। সব মিলিয়ে কমপক্ষে ৭০ জন জঙ্গির প্রাণহানির খবর মিলেছে।
পাকিস্তানের দাবি, পাল্টা জবাবে ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমানকে গুলি করে নামিয়ে দিয়েছে তারা। ওই পাঁচটি যুদ্ধবিমানের মধ্যে তিনটেই রাফাল। পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ইশাক দারের দাবি, চিনের জে-১০সি যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমানকে কাবু করা হয়েছে। বিষয়টি পরে বেজিংকেও জানানো হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন পাক বিদেশমন্ত্রী।
কিন্তু বৃহস্পতিবার চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র লিন জিয়াং জানান, গোটা বিষয়টি সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না। চিনা যুদ্ধবিমান ব্যবহার করা এবং সে বিষয়ে চিনকে জানানো— সে ব্যাপারে অবগতই নন তিনি।
এতে পাকিস্তানের কার্যত মুখ পুড়ল বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক রাজনীতির অনেকে। তাঁদের যুক্তি, পাকিস্তান বরাবরই চিনের ‘বন্ধু’ দেশ বলেই পরিচিত। চিনের কাছ থেকে প্রায় ৮২ শতাংশ প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম আমদানি করে তারা। তাদের মধ্যেই বোঝাপড়ার এমন ‘অভাব’ স্বাভাবিক ভাবেই অনেকের নজর কেড়েছে। অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগছে, তা হলে কি পহেলগাঁও কাণ্ড পরবর্তী সময়ে পাকিস্তানের সঙ্গে কোনও ভাবে দূরত্ব রচনা করতে চাইছে বেজিং? কেউ কেউ অবশ্য এমনটা মনে করেন না। তাঁদের বক্তব্য, পাকিস্তান চিনের উপর আর্থিক ভাবে নির্ভরশীল। অর্থনৈতিক করিডর প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে দুই দেশ। সেই সঙ্গে রয়েছে বহু যোথ উদ্যোগ। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ‘বোঝাপড়ার অভাব’ না হওয়ারই কথা।