Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
India-China

উপগ্রহ চিত্রে বহু ফৌজ, নতুন কালভার্ট, চিনের প্রস্তুতি তুঙ্গেই!

উপগ্রহ চিত্রে দেখা যাচ্ছে, ১৫ জুনের সংঘর্ষস্থলের অদূরে গালওয়ান নদীর উপর কংক্রিটের কালভার্ট বানিয়েছে চিন।

সংঘর্ষস্থল থেকে এখনও সরেনি চিনা ফৌজ।

সংঘর্ষস্থল থেকে এখনও সরেনি চিনা ফৌজ।

সংবাদসংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২০ ২১:২৬
Share: Save:

গালওয়ান উপত্যকার সংঘর্ষস্থল থেকে এখনও সরেনি চিনা ফৌজ। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলএসি) দু’ধারেই এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছে চিনের নির্মাণগুলি। সোমবার কয়েকটি উপগ্রহ চিত্র তুলে ধরে প্রকাশিত খবরে এমনটাই দাবি করা হয়েছে। তবে ওই ‘হাই রেজোলিউশন স্যাটেলাইট ইমেজ’গুলির সত্যতা সম্পর্কে বিদেশ মন্ত্রক বা সেনার তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

গত ২২ জুন, সোমবারের উপগ্রহ চিত্রে দেখা যাচ্ছে, ১৫ জুনের সংঘর্ষস্থল পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৪-র অদূরে গালওয়ান নদীর উপর পুরোদস্তুর কংক্রিটের কালভার্ট বানিয়েছে চিন। তারই তলা দিয়ে বয়ে চলেছে গালওয়ান নদী। আশপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে চিনের ‘পিপলস লিবারেশন আর্মি’ (পিএলএ)-র তাঁবু ও অন্যান্য নির্মাণ, গাড়ি এবং সামরিক উপকরণ। পাহাড়ের গায়ে চিনা সেনার থাকার ঘরও তৈরি। লেহ্-দারবুক-দৌলত বেগ ওল্ডি সড়কের মাত্র ছ’কিলোমিটার দূরেই চিনা বাহিনীর এই অবস্থান। ঘটনাচক্রে, ওই দিনই পূর্ব লাদাখের নিয়ন্ত্রণরেখায় উত্তেজনা কমাতে দু’দেশের কোর কমান্ডার স্তরের বৈঠক হয়েছিল। লাদাখের চুসুল-মল্ডো সীমান্তে ১১ ঘণ্টার সেই বৈঠকে উত্তেজনা কমাতে দু’পক্ষই এলএসি থেকে সেনা পিছোতে রাজি হয়। তবে সেই কাজ এখনও শুরু হয়েছে কি না, তা নিয়ে কোনও সরকারই কিছু জানায়নি।

গত শুক্রবার সর্বদল বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চিন এবং গালওয়ানের নাম না-করে বলেছিলেন, ‘‘ওখানে কেউ আমাদের সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকে আসেনি। ওখানে আমাদের এলাকায় কেউ ঢুকেও বসে নেই।’’ কিন্তু বুধবার প্রকাশিত খবরের সঙ্গে ২১ মে-র একটি ‘হাই রেজোলিউশন স্যাটেলাইট ইমেজ’ সামনে এসেছে। তাতে গালওয়ান নদীর পাশে পেট্রোলিং পয়েন্ট-১৪-তে চিনা ফৌজের একটি তাঁবুর অস্তিত্ব ধরা পড়েছে। আর ২২ জুনের ছবিতে সেখানে তৈরি চিনা কালভার্ট দেখা যাচ্ছে। পাহাড়ি এলাকায় রাস্তা বানানোর উপযোগী কম্প্যাক্টর ভারী সামরিক উপকরণ-সহ বিপুল সংখ্যক চিন সেনার উপস্থিতিও স্পষ্ট।

গালওয়ান নদীর উপর চিনা কালভার্ট।

আরও পড়ুন: একতরফা ভাবে সংঘর্ষে উস্কানি দেয় ভারত, দাবি চিনের

উপগ্রহ চিত্রগুলি দেখার পরে ভারতীয় সেনার অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল তথা প্রাক্তন অ্যাডিশনাল সার্ভেয়ার জেনারেল রমেশ পাধির মন্তব্য, ‘‘স্পষ্টতই পেট্রোলিং পয়েন্ট-১৪-র কাছে এলএসি পেরিয়ে ভারতীয় এলাকায় আগ্রাসন হয়েছে। আমাদের এলাকায় ঢুকে ডিফেন্সিভ ফর্মেশন গড়েছে চিন।’’ মানচিত্র বিশেষজ্ঞ পাধির মন্তব্য, ‘‘ছবি দেখে বোঝা যাচ্ছে, চিন ওখানে ভারী যানবাহন নিয়ে ঢুকেছে। ওখানে ওরা ঘাঁটি গাড়ার পরিকল্পনা নিয়েই ঢুকেছে।’’ চিন সেনা যে ভাবে কালভার্ট বানিয়েছে, কম্প্যাক্টর এনে রাস্তা বানানোর চেষ্টা চালাচ্ছে, তাতে ছ’কিলোমিটার দূরের ভারতীয় রাস্তাই তাদের ‘লক্ষ্য’ বলে মনে করছেন সামরিক বিশেষজ্ঞদের অনেকেই।

গালওয়ান নদীর পাশে পেট্রোলিং পয়েন্ট-১৪-তে চিনা ফৌজের তাঁবু।

এরই মধ্যে গালওয়ানের উত্তরে দৌলত বেগ ওল্ডি এলাকায় পেট্রোলিং পয়েন্ট ১০ থেকে ১৩-র মধ্যবর্তী স্থানে ভারতীয় সেনার টহলদারিতে চিনা ফৌজ বাগড়া দিচ্ছে বলে এ দিন একটি খবরে দাবি করা হয়েছে। কারাকোরাম পাসের অদূরে ওই এলাকাতেই রয়েছে ভারতের বায়ুসেনাঘাঁটি। আর কারাকোরাম হয়েই গিয়েছে শিনজিয়াং প্রদেশের কাশগড় থেকে পাকিস্তানের গদ্বর বন্দর পর্যন্ত বিস্তৃত চিন-পাক অর্থনৈতিক করিডর। ফলে দৌলত বেগ ওল্ডি চিনের মাথাব্যথার কারণ বলেই মনে করেন সামরিক বিশেষজ্ঞেরা। অদূরের ডেপসাং এলাকাতে ২০১৩ সালে ঢুকে প্রায় তিন সপ্তাহ ঘাঁটি গেড়ে বসেছিল চিন। এ বারও ভারতের উপর চাপ বাড়াতে ডেপসাং এলাকায় কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য চিন সেনা প্রস্তুতি শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে।

আরও পড়ুন: নেপালের জমি দখল করে চিনের রাস্তা, ঘোরানো হচ্ছে নদীর গতিপথও

তথ্যসূত্র: ম্যাক্সার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE