—ফাইল চিত্র।
সীমান্ত সংঘর্ষের যাবতীয় দায় ফের ভারতের উপর চাপাল চিন। তাদের অভিযোগ, সীমান্তে শান্তি বজায় রাখতে যে চুক্তি হয়েছিল দুই দেশের মধ্যে, তা লঙ্ঘন করেছে ভারত। সীমান্তে একতরফা ভাবে সংঘর্ষে উস্কানি জুগিয়েছে ভারত। এমনকি ১৫ জুন সন্ধ্যায় ভারতীয় সেনাই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন করে তাদের এলাকায় ঢুকে পড়েছিল বলেও চিন দাবি করেছে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।
প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন করে ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ নিয়ে গত ১৫ জুন লাদাখে চিনা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে ভারতীয় জওয়ানদের। তাতে ২০ জন ভারতীয় জওয়ান প্রাণ হারান। প্রাণহানি ঘটে চিনের তরফেও। যদিও তাদের তরফে ঠিক কত জন প্রাণ হারিয়েছেন, তা এখনও পর্যন্ত খোলসা করেনি বেজিং।
সেই নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যেই বুধবার এ নিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করে চিনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র তথা পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-র সিনিয়র কর্নেল উ কিয়ান। তাতে বলা হয়, ‘‘গালওয়ানে চিনের সার্বভৌম অধিকার রয়েছে। বহু বছর ধরে সেখানে নজরদারি চালিয়ে আসছে চিনা বাহিনী। এ বছর এপ্রিল থেকে সেখানে একতরফা ভাবে নির্মাণকাজ শুরু করে ভারতীয় সেনা, একাধিক বার তার প্রতিবাদ করে চিন।’’
আরও পড়ুন: মোদী-চিনফিং দেখা হচ্ছে নভেম্বরে, বৈঠক হবে কি?
চিনের দাবি, ‘‘৬ মে সকালে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে চিনা ভূখণ্ডে কাঠামো নির্মাণ শুরু করে ভারত। চিনা বাহিনীকে নজরদারি চালাতে বাধা দেয় তারা। তাতে সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। বিষয়টি নিয়ে ৬ জুন দু’দেশের সামরিক স্তরে বৈঠক হয়। তাতে গালওয়ান উপত্যকায় নজরদারি না চালানো এবং কাঠামো নির্মাণ না করায় সম্মত হয় ভারত। সেখান থেকে দু’পক্ষই সেনা সরাতে রাজি হয়। কিন্তু ১৫ জুন সন্ধ্যায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী।’’
প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতীয় জওয়ানরা চিনের এলাকায় ঢুকে পড়লে চিনা বাহিনী তাঁদের সঙ্গে সমঝোতায় আসার চেষ্টা করে বলেও দাবি চিনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের। তাদের কথায়, ‘‘ঘটনাস্থলেই ভারতীয় জওয়ানদের সঙ্গে মীমাংসা করার চেষ্টা করে চিনা বাহিনী। কিন্তু আচমকা আক্রমণ করে বসেন ভারতীয় জওয়ানরা। তাতেই দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে বেধে যায়। তার জেরে প্রাণহানিও ঘটে।’’
আরও পড়ুন: নেপালের জমি দখল করে চিনের রাস্তা, ঘোরানো হচ্ছে নদীর গতিপথও
আত্মরক্ষার তাগিদেই চিনা বাহিনী পাল্টা আঘাত হানতে বাধ্য হয় বলে জানিয়েছেন উ কিয়ান। তিনি বলেন, ‘‘আত্মরক্ষার জন্যই ভারতের উপর পাল্টা আঘাত হানে চিনা বাহিনী। দেশের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় নামেন তাঁরা। ভারত এক তরফা ভাবে উস্কানি দেওয়াতেই সংঘর্ষ বাধে। সম্পূর্ণ ভাবে চিনের এলাকার মধ্যেই এই দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এর সম্পূর্ণ দায় ভারতের। যারা এই ঘটনার জন্য দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে ভারতকে। ভবিষ্যতে তাদের বাহিনী যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটায়, তা-ও নিশ্চিত করতে হবে।’’
শুরু থেকেই সীমান্ত সংঘর্ষের দায় ভারতের উপর চাপিয়ে আসছে চিন। তবে বরাবর তা অস্বীকার করে এসেছে ভারত। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে চিনা বাহিনীই নির্মাণকাজ শুরু করে এবং তা থেকেই সংঘর্ষ বাধে বলে জানিয়েছে তারা। এ ব্যাপারে ভারতের সমর্থনে এগিয়ে এসেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও। মার্কিন গোয়েন্দাদের একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতকে ‘শিক্ষা’ দিতে চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মির জেনারেল পর্যায়ের এক আধিকারিক ভারতীয় বাহিনীর উপর আক্রমণের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy