সরকারি স্তরে এত অসহিষ্ণুতা এর আগে কখনও দেখেননি বা শোনেননি বলেই দাবি করলেন শিলচরের কংগ্রেস সাংসদ সুস্মিতা দেব। নরেন্দ্র মোদীর সরকার ও বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে আজ এ ভাবেই নিজের ক্ষোভ ব্যক্ত করলেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘বাজপেয়ীজির আমলের কাজকর্মও আমি ভালো করে লক্ষ্য করেছি। তখন কিন্তু এই অসহিষ্ণুতা ছিল না।’’
কী ধরনের অসহিষ্ণুতা? সুস্মিতাদেবীর কথায়, ‘‘দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় বা জেএনইউ প্রসঙ্গ টেনে আনতে চাই না। আমাদের নিজেদের রাজ্যেই ভুরি ভুরি উদাহরণ রয়েছে।’’ তাঁর বক্তব্য, সরকারি অনুষ্ঠানে বিরোধী সাংসদ-বিধায়কদের আমন্ত্রণ না করাটাই ক্রমশ রেওয়াজ হয়ে যাচ্ছে। কামাখ্যা স্টেশনে রেল বিভাগের বিরাট কর্মসূচিতে বিরোধীদের ডাকাই হয়নি। নগাঁওয়ে এইমস-এর শিলান্যাসে গৌরব গগৈকে আমন্ত্রণ জানানোই হল না। করিমগঞ্জে পূর্ত বিভাগের কর্মসূচির কথা এআইইউডিএফ সাংসদ রাধেশ্যাম বিশ্বাস জানতেই পারেননি বলে অভিযোগ সুস্মিতাদেবীর।
কথা কথায় টেনে আনেন শিলচর গুরুচরণ কলেজের বিতর্ক বাতিল প্রসঙ্গও। তিনি জানান, ‘‘কলেজ কর্তৃপক্ষ একটি বিতর্ক সভায় অন্যান্যদের সঙ্গে আমাকেও আমন্ত্রণ করেছিলেন। বিজেপি তাই বিতর্ক সভা বাতিলে কর্তৃপক্ষকে বাধ্য করে।’’ লক্ষ্মীপুরের কংগ্রেস বিধায়ক তথা রাজ্য বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) চেয়ারম্যান রাজদীপ গোয়ালার সাক্ষাৎকার সম্প্রচারের জন্য শিলচর দূরদর্শনের এক অফিসারকে প্রোগ্রাম সেকশন থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও তাঁর অভিযোগ।তাঁর কথায়, ‘‘এটি গণতন্ত্রের পক্ষে শুভ লক্ষণ নয়।’’
শরণার্থীদের নাগরিকত্ব বিলের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই বিলটির ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত। বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দু শরণার্থীদের হয়রানি করা হবে না বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল। তার পরও সন্দেহভাজন ভোটারদের নোটিশ, গ্রেফতার, ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো অব্যাহত রয়েছে। এই বিল ওই বিজ্ঞপ্তির মতোই হতে পারে। শিলচরের কংগ্রেস সাংসদের দাবি, ডিটেনশন ক্যাম্প কোনও সমস্যার সমাধান হতে পারে না। বাংলাদেশিদের যাতে সে দেশে ফেরত পাঠানো যায়, সে জন্য প্রত্যর্পণ চুক্তি করতে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সরকারের সঙ্গে কথা বলতে হবে। এ ছাড়া, অসম চুক্তির ৬ নং ধারাকে কার্যকর রেখে এই বিলকে কোনও মতেই আইনে পরিণত করা যায় না বলেও দাবি করেন সুস্মিতাদেবী। তাঁর কথায়, ওই ধারায় ১৯৭১-র ২৪ মার্চের পরে আসা নাগরিকদের হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে বিদেশি বলে ঘোষণা ও শাস্তি প্রদানের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু প্রস্তাবিত আইনে হিন্দুদের নাগরিকত্ব প্রদানের উল্লেখ রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy